দেশ বিভাগে ফিরে যান

লাদাখে শক্তি বাড়াচ্ছে চীন, স্বামীর নিশানায় মোদি

January 6, 2021 | 2 min read

সেনাস্তরের বহু বৈঠক, দ্বিপাক্ষিক আলোচনা, আন্তর্জাতিক মহলের উদ্বেগ ও হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও চীন লাদাখ থেকে চোখ সরাতে নারাজ। প্রায় চার মাস স্থিতাবস্থা বজায় রাখার পর আবার সক্রিয় লালফৌজ। জানা যাচ্ছে, রোজং লা, রেচিন লা এবং মুখো সিরির তিনটি গিরিশৃঙ্গের দিকে মুখ করে চীন অন্তত ৩৫টি ট্যাঙ্ক মোতায়েন করেছে। আর এই অবস্থায় স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছেন বিজেপিরই এমপি সুব্রহ্মণ্যম স্বামী (Subramanian Swamy)। চীনা আগ্রাসন থেকে কেন্দ্র দেশবাসীর নজর অন্যদিকে ঘোরানোর চেষ্টা করছে বলে কানাঘুষো নানা মহল থেকে আগেই শোনা গিয়েছে। এবার তাতে সিলমোহরই দিলেন স্বামী। কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন নরেন্দ্র মোদিকে। মঙ্গলবার বিজেপির এই এমপি ট্যুইট করেছেন, ‘মোদি সরকার কি জানে যে লাদাখে চীন ট্যাঙ্ক মোতায়েন করেছে? সেটা গোপন করার জন্যই কি ভ্যাকসিন নিয়ে মাত্রাতিরিক্ত প্রচার শুরু করেছে সরকার?’

এই ট্যুইটের পরই তোলপাড় পড়ে গিয়েছে দিল্লির দরবারে। এই অস্ত্রেই শুরু হয়েছে সরকারকে আঘাত। এই ট্যুইটের জবাব দেওয়ার জন্য নরেন্দ্র মোদিকে (Narendra Modi) অনুরোধ করেছে কংগ্রেস। বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছে, লাদাখে ভারত ঠিক কী অবস্থায় আছে, সেটা কেন স্পষ্ট করছে না মোদি সরকার?

আসল বিষয়টা হল, সীমান্ত পরিস্থিতি এই মুহূর্তে মোটেই খুব সন্তোষজনক নয়। মে মাসে লাগাতার চীনা আগ্রাসনের পর ঘুরে দাঁড়িয়েছিল ভারত। এই সবক’টি গিরিশিখরই আগস্টের মধ্যে একে একে কব্জা করে নেয় সেনাবাহিনী। এর আগে পাহাড়ের পাদদেশে দুই দেশের সেনা‌ই মোতায়েন ছিল। তবে শিখরের দখল কোনও দেশই নেয়নি। কিন্তু সীমান্ত সংঘাতের পর চীনকে সম্পূর্ণ বিস্মিত করে দেয় ভারত। একের পর এক শিখরের দখল নিয়ে কৌশলগত দিক থেকে সুবিধাজনক অবস্থানে পৌঁছে যায় ভারতীয় সেনাবাহিনী। আর তারপর থেকেই চীনের বাহিনী ও রণসজ্জা এসে গিয়েছে নজরদারির আওতায়। ফলে লালফৌজের যে কোনও মুভমেন্টেই ভারত সতর্ক হচ্ছে এবং কড়া বার্তাও পাঠাচ্ছে।

এমতাবস্থায় সেনার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার স্তরে তো বটেই, কূটনৈতিক সেক্টরেও দু’দেশের মধ্যে লাদাখ পরিস্থিতি নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক হয়। সিদ্ধান্ত হয়, উভয় পক্ষই নিজেদের অগ্রবর্তী সেনা ফিরিয়ে নিয়ে যাবে এপ্রিল মাসের অবস্থানে। যদিও প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা থেকে বাস্তবে কোনও পক্ষই পিছু হটেনি। বরং ভারতের মিলিটারি ইন্টেলিজেন্সের তরফ থেকে বার্তা আসে, শীতকাল পর্যন্ত সীমান্ত সংঘাত টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে লালফৌজ। কারণ একটাই, চরম আবহাওয়ায় ফের আক্রমণাত্মক আগ্রাসন। এই মুহূর্তে ঠিক সেরকমই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। প্রায় ৩৫টি ট্যাঙ্ক মোতায়েন করেছে চীন। তাহলে কি ওই তিন শিখর দখল করাই তাদের লক্ষ্য? এটাই আপাতত বোঝার চেষ্টা করছে ভারতীয় বাহিনী। অর্থাৎ, আবার লাদাখে (Ladakh) চরম উত্তেজনা। ভারতের সামরিক বিভাগ ঠিক করেছে, পাল্টা জবাব দিতে রণসরঞ্জাম পাঠানো হবে ফরওয়ার্ড পজিশনে। সেই প্রক্রিয়া শুরুও হয়েছে।

তাহলে সঙ্কট কতটা গভীর? এই প্রশ্নের উত্তর চাইছে বিরোধীরা। অভিযোগ করছে, প্রথমে করোনা, আর তারপর ভ্যাকসিন রাজনীতি দিয়ে সত্যিটা কতদিন লুকিয়ে রাখা যাবে? প্রশ্ন আসছে কিন্তু বিজেপির অন্দরমহল থেকেও।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Narendra Modi, #Subramanium Swamy, #Ladakh standoff

আরো দেখুন