ক্ষমতা ধরে রাখার নির্মম খেলা খেলছে বিজেপি, উত্তর ২৪ পরগণার উন্নয়নের কথা তুলে ধরে সরব কাকলি
রাজ্যের উন্নয়নের সাতকাহন তুলে ধরে কেন্দ্র ও বিজেপিকে বিঁধলেন তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদার।
বুধবার এক সাংবাদিক সম্মলনে তৃণমূল সাংসদ বলেন-
করোনা অতিমারীর সময়েও রাজ্যর উন্নয়ন ধরে রেখেছে রাজ্যসরকার। গোটা দেশের আর্থিক পরিস্থিতি বর্তমানে বেহাল। এরকম এক অবস্থায় রাজ্যে ৪৩ শতাংশ বেশি কাজের সুযোগ বৃদ্ধি করতে পেরেছে রাজ্যে।
রাজ্যের জল ধর, জল ভর কর্মসূচির কথা টেনে কাকলি ঘোষদস্তিদার(Kakoli Ghosh Dastider) বলেন, যেখানে জলের পরিস্থিতি খারাপ সেখানে ওই প্রকল্প চালু করে জলের সমস্য়া অনেকটাই সমাধান করেছে সরকার। ৭৭ লাখ কৃষক এই প্রকল্পে উপকৃত হয়েছেন। এতে কাজের সুযোগ পেয়েছেন জব কার্ডধারীরা((Job Card)। পাশাপাশি এই প্রকল্পের অধীনে যেসব পুকুর কাটা হয়েছে সেখানে মাছ চাষ হচ্ছে। অর্থাত্ মাল্টি সেক্টরে উন্নয়ন হয়েছে।
তৃণমূল সরকারের আমলে বাংলা অন্যান্য ভাষাকেও সম্মান দেওয়া হয়েছে। আদিবাসী ভাষাকে সম্মানিত করা হয়েছে। বিজেপিকে(BJP) নিশানা করে কাকলি বলেন, বর্তমান সময়ে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা একেবারে ভেঙে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে শক্তহাতে রাজ্যের হাল ধরেছেম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। মানুষকে সুশাসন দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।
কাকলির দাবি, গোটা দেশকে যেভাবে বিজেপি পরিচালনা করছে তাতে কোনও উন্নয়ন নেই, আইনের শাসন দেশে নেই। যেন তেন প্রকারে ক্ষমতা ধরে রাখতে নির্মম খেলায় মেতছে বিজেপি। ক্ষমতা দখলের জন্য দাঙ্গা লাগাতে হলে তা লাগাবে। মানুষের মধ্যে বিভেদ তৈরি করতে চাইলে সেটাই করবে। এদের সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসকে মেলালে চলবে না। উত্তর ২৪ পরগনা তিতুমীরের জেলা। তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামে লড়াই করেছিলেন। আর বিজেপির নেতার স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশ নেওয়া তো দূরের কথা মুচলেখা দিয়ে জেল থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন। এই হচ্ছে এসের চেহারা।
তিনি উত্তর ২৪ পরগণার উন্নয়নের তালিকা তুলে বলেন, সামজিক সুরক্ষা প্রকল্পে ৮.৩৫লক্ষ শ্রমিক সুবিধা পেয়েছে। ৪৬টি কর্মতীর্থ তৈরি হয়েছে। অনূর্ধ্ব ১৭ ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজনের পাশাপাশি তৈরি হয়েছে ২৪৮টি মাল্টিজিম, ২৫টি মিনি ইন্ডোর স্টেডিয়াম, বারাসাত স্টেডিয়ামের উন্নয়ন করা হয়েছে। সুন্দরবন কাপ আয়োজিত হচ্ছে। নৈহাটি, বারাকপুর স্পোর্টস কমপ্লেক্স তৈরি হয়েছে, বেঙ্গল ফুটবল আকাদেমি তৈরি হয়েছে।
কৃষি বিষয়ে তিনি বলেন, দেশে যেখানে কৃষক বিরোধী কৃষি আইনের জন্য ইতিমধ্যেই ৪৬ জন কৃষক মারা গেছে সেখানে বাংলায় কিষাণ মান্ডি তৈরি হয়েছে, ৯৯ শতাংশ কৃষকদের কিষাণ ক্রেডিট কার্ড দেওয়া হয়েছে, জমির খাজনা মুকুব করা হয়েছে, সেচের ব্যবস্থা করা হয়েছে, ফসল বীমা করে দেওয়া হয়েছে।
অন্যান্য ক্ষেত্রে তিনি বলেন, ১৯ লক্ষ হাস মুরগির ছানা দেওয়া হয়েছে, নিজ গৃহ নিজ ভূমি প্রকল্পে ৬৫০০মানুষকে জমির পাট্টা দেওয়া হয়েছে, ৯০০০ জনকে কৃষি ও বনভুমি পাট্টা দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষা নিয়ে তিনি বলেন, মহিলা শিক্ষার জন্য হোস্টেল করা হয়েছে। ৪.৬ লক্ষ পড়ুয়াকে বৃত্তি দেওয়া হয়েছে। জেলায় ৪৫টি নতুন স্কুল তৈরি হয়েছে, ৭৭টি স্কুল উন্নীত করা হয়েছে। ১৪.২৫ লক্ষ কন্যাশ্রী পেয়েছে। ৫.৫৫ লক্ষ শিক্ষাশ্রী পেয়েছে। ৮টি নতুন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হয়েছে। দুটি সরকারি ডিগ্রি কলেজ তৈরি হচ্ছে। ৯ আইটিআই কলেজ, ৩টি পলিটেকনিক কলেজ তৈরি হচ্ছে। সংখ্যালঘু, তপশিলি জাতি ও উপজাতির উন্নয়ন হচ্ছে।
স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে তিনি বলেন, হাসপাতাল উন্নয়নের সঙ্গে এই জেলায় ২টি নতুন মাল্টি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল, ১৯টি এসএনসিইউ, ১৩টি ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান, ৮টি ন্যায্য মূল্যের রোগ নির্ণয় কেন্দ্র, ৬টি সিএনসিইউ, ৩টি সিসিইউ, ২টি নার্সিং স্কুল তৈরি হয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবের হার বাংলায় ৯৮ শতাংশ। তৈরি হয়েছে ওয়েটিং হাব।