শিশুকন্যার কিডনির অসুখ, ২৪ ঘণ্টাতেই স্বাস্থ্য সাথী কার্ড পেলেন মা
বয়স মাত্র দেড় বছর। সেই ছোট্ট শিশুকন্যা কিডনির অসুখে ভুগছে। বাবা-মায়ের সামান্য রোজগার। তাই মেয়ের চিকিৎসা নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় ছিলেন তাঁরা। অবশেষে কামারহাটি পুরসভার মানবিক উদ্যোগে মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড পেলেন শিশুকন্যার মা। তিনি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) এবং পুরসভা কর্তৃপক্ষকে। দ্রুত চিকিৎসার জন্য আজ, বুধবারই কলকাতার পার্ক সার্কাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ওই শিশুকন্যাকে ভর্তি করা হবে।
পুরসভা ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই শিশুকন্যার মা তাপসী পণ্ডিত পুরসভারই আশাকর্মী। মাত্র ৩১২৫ টাকা বেতন পান। তাঁর স্বামী শুভ পণ্ডিত টিভি ইন্সস্টল করেন। বেলঘরিয়ার ৩০ নম্বর অমৃতনগরে বাড়ি। তাঁদের মেয়ের নাম সৃষ্টি। দেড় বছর বয়স হলেও ওজন মাত্র পাঁচ কেজি। যখন সাতমাস বয়স, তখন থেকেই সে নানা সমস্যায় ভুগছিল। অনেক জায়গায় দেখানোর পর তাকে এসএসকেএমে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানেই তার কিডনির অসুখ রয়েছে বলে প্রথম ধরা পড়ে। তারপর করোনা শুরু হয়ে যায়। করোনার কারণে পরিবারের সদস্যরা শিশুটিকে এসএসকেএমে নিয়ে যেতে পারেননি। বেসরকারিভাবে তার চিকিৎসা করাচ্ছিলেন। প্রতি মাসে মেয়ের জন্য প্রায় ৬-৭ হাজার টাকা খরচ হয় তাঁদের।
কলকাতার ওই বেসরকারি হাসপাতাল বেশ কিছু পরীক্ষা দিয়েছে। যেগুলি খুবই ব্যয়সাপেক্ষ। একটি জেনেটিক টেস্টের খরচ বলা হয়েছে ২০ হাজার টাকা। কোথা থেকে এত টাকা জোগাড় করবেন, তা ভেবে পাচ্ছিলেন না তাপসীদেবীরা। শুনেছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর স্বাস্থ্যস্বাথী কার্ড (Swasthya Sathi Card) পেলে চিকিৎসায় ছাড় পাওয়া যায়। বেলঘরিয়ার ৩০ নম্বরে অমৃতনগরেই কামারহাটি পুরসভার বিদায়ী চেয়ারম্যান পরিষদের (স্বাস্থ্য) সদস্য বিমল সাহার বাড়ি। স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের জন্য সোমবার তাপসীদেবী বিমলবাবুর কাছে যান। বিমলবাবু পুরো বিষয়টি শুনে সঙ্গে সঙ্গে পুরসভার স্বাস্থ্যবিভাগের সঙ্গে কথা বলেন। জেলা প্রশাসনের সঙ্গেও কথা বলেন তিনি। তারপর সোমবারই তাঁকে আবেদন করতে বলা হয়। ওইদিন বিকেলেই আবেদনের কপি জেলায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। মঙ্গলবার সকালে বারাসতে জেলাশাসকের অফিস থেকে নতুন কার্ড প্রিন্ট করে তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তাপসীদেবী বলেন, মেয়ের চিকিৎসা নিয়ে আমরা খুবই চিন্তায় রয়েছি। প্রচুর টাকা খরচ হচ্ছে। মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড হাতে পেয়ে যাব ভাবিনি। আমার মেয়ের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বিমলবাবু, পুরসভা ও প্রশাসন সকলকেই ধন্যবাদ। বুধবারই মেয়েকে ভর্তি করব। ওর অনেকগুলি পরীক্ষা হবে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে ছাড় দেবে।
বিমল সাহা বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগেই আজ সকলে এই স্বাস্থ্যসাথী কার্ড পাচ্ছেন। আমরা পুরসভার পক্ষ থেকে ওই শিশুটির পাশে রয়েছি। ভবিষ্যতেও থাকব। আমরা সবাই চাই, দেড় বছরের সৃষ্টি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুক।