দক্ষিণবঙ্গ বিভাগে ফিরে যান

হুগলি জেলায় সক্রিয় বামেরা, সিঁদুরে মেঘ দেখছে বিজেপি

January 7, 2021 | 2 min read

লকডাউনে জনসেবা ও কৃষিবিলের প্রতিবাদকে হাতিয়ার করে হুগলি (Hoogly) জেলাজুড়ে সক্রিয় হতে শুরু করেছে সিপিএম (CPM) তথা বামফ্রন্ট। আরামবাগ থেকে তারকেশ্বর, চাঁপদানি থেকে চুঁচুড়া, কোথাও সিপিএম নিজে আবার কোথাও শরিকদলগুলি নানা কর্মসূচিকে সামনে রেখে আচমকা সক্রিয়তা বাড়িয়েছে। কংগ্রেসকে সঙ্গে নিয়ে স্থানীয় ইস্যুতে বামেদের রাস্তায় নামতেও দেখা যাচ্ছে। তাৎপর্যপূর্ণভাবে বামেদের অভ্যন্তরীণ ভোটসমীক্ষাও উৎসাহিত করেছে দলের নিচুতলার কর্মী মহলকে। বামেদের অভ্যন্তরীণ সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছে, এবারের বিধানসভা নির্বাচনে ২০১৬ সালের থেকেও ভালো ফল হবে। ফলে বামকর্মীরা আচমকা চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন।

এতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছে বিজেপি (BJP) নেতৃত্ব। একথা সত্যি যে, বামেদের নিচুতলার কর্মী-সমর্থকদের ভিড়েই বিজেপির সক্রিয়তা অনেকখানি বেড়েছিল। বাম দলগুলির রাস্তায় না নামা তাতে উৎসাহ জুগিয়েছিল। কিন্তু সেই ‘ঝাঁকের কই’ ফের ঝাঁকে মিশে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেওয়ায় গেরুয়া শিবিরের কর্তাদের কপালে ভাঁজ পড়েছে। বিজেপি শিবিরের উদ্বেগ যে অবাস্তব নয়, তার ইঙ্গিত মিলেছে বাম শিবির থেকেও। জেলার বাম নেতৃত্ব দাবি করেছে, অতীতে নিচুতলার কর্মীদের বিজেপিতে যাওয়ার যে প্রবণতা ছিল, তা বন্ধ হয়েছে। পাশাপাশি অনেক ক্ষেত্রেই নিচুতলার কর্মীরা বিজেপিকে এনে তৃণমূলকে (Trinamool) তাড়ানোর স্বপ্ন দেখেছিলেন। বর্তমানে তাঁদের মোহভঙ্গ হয়েছে। বিশেষত তৃণমূল নেতাদের একাংশের সঙ্গে লড়াই করতে গিয়েই নিচুতলার বামকর্মীরা হাতিয়ার করেছিলেন বিজেপিকে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেইসব মুখগুলিই প্রকাশ্যে বা গোপনে বিজেপিতে ভিড়তে শুরু করেছিল। কিন্তু ওই দলের প্রতি তাঁদের বিতৃষ্ণা তৈরি হয়েছে। তাঁরা অনেকেই এখন ফের লালঝান্ডার তলায় আসতে চাইছেন। হুগলির আরামবাগ মহকুমাজুড়ে এমনই ‘ঘর ওপায়সি’র ইঙ্গিত মিলেছে।

বিজেপির ওবিসি মোর্চার প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি স্বপন পাল বলেন, বিজেপি তার নিজস্ব আদর্শ ও কর্মসূচির উপরে দাঁড়িয়েই হুগলিতে শক্তিশালী হয়েছে। কিছু মানুষ হয়তো সুবিধাবাদী প্রবণতা নিয়ে দলে এসেছিলেন। সেই অংশের মোহভঙ্গ হতেই পারে। সিপিএমের জেলা সম্পাদক দেবব্রত ঘোষ বলেন, বিজেপি ও তৃণমূল কেউই সাধারণ মানুষের কথা ভাবে না। যে কারণে মানুষ বেশি করে বামেদের পাশে এসে দাঁড়াচ্ছে। কর্মীরা তা নিজের চোখেই দেখছেন। আরএসপির জেলা সম্পাদক মৃন্ময় সেনগুপ্ত বলেন, লকডাউন পর্বে বাম কর্মীরা যেভাবে মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন, তাতে বামেদের প্রতি ফের আস্থা বাড়ছে সাধারণ মানুষের। নিচুতলার কিছু বামকর্মীর মধ্যে বিজেপিকে নিয়ে একটি বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছিল। আশার কথা, সেই বিভ্রান্তি কাটছে। মরীচিকার সঙ্গ ছেড়ে বামকর্মীরা মূলস্রোতে ফিরছেন।

বাম দলগুলি সূত্রে জানা গিয়েছে, লকডাউনের সময় মানুষের বাড়িতে খাবার পৌঁছে দেওয়া থেকে শুরু করে রান্না করে খাওয়ানোর কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল। সেখান থেকে মানুষের সমর্থন পেয়ে বাম কর্মীদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস কিছুটা ফিরে এসেছে। এরপর তাঁদের হাতে নয়া হাতিয়ার হয়েছে কৃষিবিল। যা নিয়ে জেলাজুড়ে সক্রিয় হয়ে উঠেছে বামেরা। বিশেষ করে হীনমন্যতায় ভোগা নিচুতলার কর্মীরাই পথসভা, হাটসভার মতো কর্মসূচিতে অংশ নিতে শুরু করেছেন। এইসব কর্মসূচিতে হাত মেলাচ্ছে কংগ্রেসও (Congress)। রক্তক্ষরণে দুর্বল বামশিবির আচমকা চাঙ্গা হওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে হুগলি জেলায়। আর এতেই বিজেপি শিবিরে শুরু হয়েছে গুঞ্জন।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#bjp, #tmc, #CPM, #Hoogly

আরো দেখুন