রাজ্যে ২৯টি প্রাইভেট কোভিড হাসপাতালে হবে স্পেশাল অডিট
রাজ্যের ২৯টি বেসরকারি কোভিড হাসপাতালে স্পেশাল অডিটের (Special Audit) সিদ্ধান্ত নিল সরকার। ন্যাশনাল হেলথ মিশনের (এনএইচএম) রাজ্যের অধিকর্তা সৌমিত্র মোহন ৫ জানুয়ারি এনিয়ে সমস্ত স্বাস্থ্যজেলার সিএমওএইচদের চিঠি দিয়েছেন। ১১টি সিএ ফার্মের মোট ৪১টি টিম পাঁচদিন ধরে ওইসব কোভিড হাসপাতালে স্পেশাল অডিট করবে। কোন হাসপাতাল কোন ফার্ম এবং ক’টি টিম ওই কাজ করবে, সেই সংক্রান্ত তালিকা জেলায় জেলায় পাঠানো হয়েছে। বেড সংখ্যা একশো কিংবা তার কম থাকলে একটি টিম এবং বেশি হলে দু’টি করে টিম অডিট করবে। পূর্ব মেদিনীপুরের সিএমওএইচ নিতাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, বেসরকারি কোভিড হাসপাতালে স্পেশাল অডিট হবে।
গত এপ্রিল মাস থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল এবং নার্সিংহোমে কোভিড আক্রান্তদের চিকিৎসা শুরু হয়। করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য রাজ্য সরকার সাময়িকভাবে ওইসব হাসপাতাল অধিগ্রহণ করে। শুরুতে শুধুমাত্র বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে কোভিড আক্রান্তদের চিকিৎসা হতো। পরবর্তী সময়ে সংক্রমণের সংখ্যা হু-হু করে বেড়ে যাওয়ায় জেলায় জেলায় কোভিড হাসপাতাল চালু করতে হয়। এপ্রিল থেকে বেসরকারি হাসপাতাল নেওয়া শুরু হয়। তারপর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অধিগৃহীত হাসপাতালের সংখ্যা তত বেড়েছে। সরকারি হাসপাতাল ছাড়াও গোটা রাজ্যে ২৯টি বেসরকারি হাসপাতালে কোভিড আক্রান্তদের চিকিৎসা হয়েছে। ধাপে ধাপে সেইসব হাসপাতাল বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য।
স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় তিনটি, বীরভূম জেলায় তিনটি, হাওড়ায় তিনটি, নদীয়ায় দু’টি, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানে দু’টি, পুরুলিয়ায় একটি, উত্তর ২৪ পরগনায় চারটি, হুগলিতে একটি, স্টেট হেড কোয়ার্টারে তিনটি, মালদহে একটি, উত্তর দিনাজপুর ও কোচবিহারে দু’টি এবং দার্জিলিংয়ে দু’টি বেসরকারি হাসপাতালে কোভিড আক্রান্তদের চিকিৎসা হয়েছে। এই মুহূর্তে কোভিড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সংক্রামিতের সংখ্যা একেবারে কম। যেমন, দুই মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলার জন্য প্রথম চালু হওয়া বড়মা মাল্টি স্পেশালিটি হাসপাতালে বুধবার মাত্র ১১ জন ভর্তি ছিলেন। ১ এপ্রিল থেকে ওই হাসপাতাল চালু হওয়ার পর তাকে লেভেল-৪ হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছিল। প্রায় আড়াই হাজার রোগী সেখান থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে দু’শোর বেশি মানুষের।
বিভিন্ন বেসরকারি কোভিড হাসপাতাল কোটি কোটি টাকার বকেয়া বিল রাজ্য সরকারের কাছে জমা করেছে। বেশিরভাগ প্রাইভেট কোভিড হাসপাতালে বকেয়ার পরিমাণ কোটির অঙ্কে। কত সংখ্যক রোগী ভর্তি হয়েছেন এবং কতদিন ধরে তাঁরা চিকিৎসাধীন ছিলেন, এসংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করে অডিট হবে। সাধারণ ওয়ার্ড এবং আইসিইউয়ের চার্জ আলাদা। তাই পাঁচদিন ধরে সিএ ফার্ম ওই হাসপাতালে স্পেশাল অডিট করবে। ৫ জানুয়ারি বিভিন্ন হাসপাতালে চিঠি দিয়ে স্পেশাল অডিটের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
পাঁশকুড়ার বড়মা কোভিড হাসপাতালের (Covid Hospital) এমডি আফজল শা এবং কাঁথির আরসিএন সঞ্জীবন কোভিড হাসপাতালের এমডি নন্দদুলাল দাস বলেন, আমাদের হাসপাতালে বকেয়ার পরিমাণ কয়েক কোটি। সময়মতো বিল জমা করা হয়েছে। এখন রোগীর সংখ্যা কম। পরিস্থিতি উন্নতির পথে। আশা করছি, স্পেশাল অডিট সম্পন্ন হলে রাজ্য বকেয়া টাকা মিটিয়ে দেবে।