জরুরি ভিত্তিতে স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড ক্যান্সার রোগীকে
ক্যান্সারে আক্রান্ত স্বামী। বিধাননগর পুরসভার তৎপরতায় স্ত্রীর স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে (Swasthya Sathi Card) চিকিৎসা চালু হল মহম্মদ ফারুকের। বুধবার ছিল হাসপাতালে ভর্তির দিন। এদিনেই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় তাঁর স্ত্রীর হাতে কার্ড তুলে দেওয়া হয়। রাজারহাট এলাকায় দুয়ারে সরকার ক্যাম্প বসে। সেখানেই স্বাস্থ্যসাথী কার্ড তুলে দেওয়া হয়। তাতে অনুমোদিত অর্থেই চিকিৎসা হবে ফারুকের।
বিধাননগর পুরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম বেড়াবেড়ি এলাকার বাসিন্দা মহম্মদ ফারুক। তিনি পেশায় অ্যাপ ক্যাব চালক। কোনও মতে দিন গুজরান হয় তাঁর। তিনজনের পরিবার। ফারুকের স্ত্রী সাবরিন খাতুন এবং ছেলে ফারহান। সম্প্রতি ফারুক ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। বারাসাতের এক বেসরকারি হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করেন রোগীর পরিবার। সেখানে বলা হয়, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অস্ত্রোপচার করতে হবে ফারুকের। চিকিৎসকেরা রোগীর পরিবারকে জানান, রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে। তাই জরুরি ভিত্তিতে অপারেশন করা প্রয়োজন। তাঁর চিকিৎসায় ৭-৮ লক্ষ টাকা খরচ হতে পারে। বিরাট অঙ্ক শুনে মাথায় যেন বাজ পড়ে নিম্নবিত্ত পরিবারটির। তড়িঘড়ি সাবরিন রাজারহাটের দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের জন্য আবেদন করেন।
জানামাত্রই উদ্যোগী হন স্থানীয় ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটর তথা বিধাননগর পুর প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য তাপস চট্টোপাধ্যায়। তিনি যোগাযোগ করেন, পুরসভার স্পেশাল ডিউটির আধিকারিক নির্মলকুমার দাসের সঙ্গে। নির্মলবাবু জানান, ৪ জানুয়ারি রাতে তিনি বিষয়টি জানতে পারেন। দ্রুততার সঙ্গে আবেদনকারীর আবেদনটি খতিয়ে দেখা হয়। তার ভিত্তিতে স্বাস্থ্যদপ্তরের তরফে দেওয়া হয় ইউআরএন (ইউনিক রেজিস্ট্রেশন নম্বর)। নম্বরটি চলে আসায় জরুরি ভিত্তিতে তৈরি করা হয় কার্ড। এদিন ২ নম্বর বোরো অফিসের ক্যাম্পে সাবরিন খাতুনের ছবি তোলা হয়, নেওয়া হয় বায়োমেট্রিক তথ্য। তারপরেই হাতে হাতে দিয়ে দেওয়া স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড, যা থেকে বার্ষিক ৫ লক্ষ্য টাকার স্বাস্থ্যবিমা পাবে তাঁর পরিবার।
ফারুকের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, বুধবার বিকেলেই তাঁকে বারাসতের ওই বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘হাসপাতালের এই বিশাল খরচ আমার পক্ষে মেটানো সম্ভব হত না। কো-অর্ডিনেটরকে অসংখ্য ধন্যবাদ।’
তাপস চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘আমি এলাকার জনপ্রতিনিধি। তাঁদের সুখ-দুঃখে পাশে দাঁড়ানো আমার কর্তব্য। ফারুক তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠুন, এই কামনা করছি।’ অন্যদিকে, পুরসভার এক কর্মীর দুর্ঘটনার পরে হাসপাতালে ভর্তির পর একইভাবে জরুরি ভিত্তিতে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করে দেওয়া হয়েছে। জয়ন্ত দাস নামে ওই কর্মীর এখন হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে।