সাইনবোর্ড নিয়ে বিতর্কে জড়াল বিশ্বভারতী
রাজ্যের সঙ্গে সঙ্ঘাত আগেই লেগেছিল। যার ফলে রাস্তা ফিরিয়ে নিয়েছিল সরকার। উপাচার্যকে ‘বিজেপির দালাল’ তকমাও দেওয়া হয়েছিল। এবার সাইনবোর্ড নিয়ে নতুন বিতর্কে জড়াল বিশ্বভারতী (Viswa Bharati University)। বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার, রতনপল্লীর নবনির্মিত মার্কেট এবং মৃণালিনী আনন্দ পাঠশালার সামনে কিছুদিন আগেই তিনটি নতুন সাইনবোর্ড লাগিয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।
এর মধ্যে গ্রন্থাগার ও রতনপল্লীর সাইনবোর্ডে বানান বিভ্রাট এবং মৃণালিনী আনন্দ পাঠশালার সামনের সাইনবোর্ডে হিন্দী আগ্রাসনের অভিযোগ তুলে সমাজমাধ্যমে সরব হয়েছেন বিশ্বভারতীর পড়ুয়া ও প্রাক্তনীদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, বিশ্বভারতীর বর্তমান প্রশাসন বানানের বিষয়ে একেবারেই যত্নশীল নয়। রবীন্দ্রনাথ প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্তৃপক্ষের লাগানো সাইনবোর্ডে ভুল বাংলা বানান প্রতিষ্ঠানের সুনামের পরিপন্থী বলেই তাঁদের দাবি।
মৃণালিনী আনন্দ পাঠশালার সামনে সম্প্রতি একটি নতুন সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে, যেখানে বাংলা, হিন্দী ও ইংরেজি তিনটি ভাষাতেই জায়গাটির পরিচয় দেওয়া হয়েছে। তবে শুধুমাত্র হিন্দী ভাষাতেই মৃণালিনী আনন্দ পাঠশালার নামোল্লেখ আছে। অন্য দুই ভাষায় তা নেই। এবার সেই বোর্ডের ছবি ছড়িয়ে পড়তেই সমাজমাধ্যমে প্রশ্ন উঠেছে, এটা কি ভুল না ইচ্ছাকৃত? এক ব্যক্তির মন্তব্য, “এই ভুল কি অনিচ্ছাকৃত, নাকি কবিগুরুর আপন দেশেই বাংলা ভাষাকে কোণঠাসা করার সুপরিকল্পিত চক্রান্ত? সময়টা কিন্তু ভাল নয়।’’
বিশ্বভারতীর অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র ফাল্গুনী পানের অভিযোগ, “ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রান্তের আঞ্চলিক সংস্কৃতির উপর হিন্দি ভাষা এবং হিন্দুত্ববাদী সংস্কৃতির যা আগ্রাসন চলছে তার প্রভাবে বিশ্বভারতীর বিভিন্ন সাইনবোর্ডে শুধু হিন্দী ভাষার ব্যবহার দেখা যাচ্ছে।’’
অন্য দিকে, গত ২০ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিশ্বভারতী সফরের দিনই কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনের রাস্তাটির নামকরণ করা হয় ‘বিবেকানন্দ সরণি’। কিন্তু কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে যে সাইনবোর্ডটি লাগানো হয়েছে, সেখানে একটি বাংলা বানান নিয়ে আপত্তি তুলছেন অনেকেই। সেই বোর্ডে লেখা রয়েছে, “বিবেকানন্দ সরণি উদঘাটিত হোল”।
মূলত বাংলা ভাষা নিয়ে যাঁরা চর্চা করেন তাঁদের অনেকেই দাবি করছেন, যে শব্দটি বোর্ডে ব্যবহৃত হয়েছে, তা সঠিক বানান নয়। সাধারনত এক্ষেত্রে ‘হল’ বানানটিই সর্বাধিক প্রচলিত। তবে সাহিত্যিক বুদ্ধদেব বসু ব্যবহার করতেন হ’লো। কেউ কেউ ‘হলো’ বানানও ব্যবহার করেছেন, তবে বোর্ডে ব্যবহৃত বানানটির এই অর্থে কোনও ব্যবহার নেই বলেই সমাজমাধ্যমে মত দিয়েছেন অনেকে।