আইন বাতিল না হলে ট্রাক্টর মিছিল হবে সংসদ ভবন পর্যন্ত
‘বিতর্কিত কৃষি আইন (Farm Laws) বাতিল করা না হলে এবার ট্রাক্টর মিছিল হবে সংসদ ভবন পর্যন্ত।’ বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় সরকারকে এই চরম হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিক্ষোভরত কৃষকরা। বাজেট অধিবেশন শুরুর আগে আন্দোলনকারীদের এহেন হুঁশিয়ারি রীতিমতো চিন্তায় ফেলে দিয়েছে কেন্দ্রকে। নিজেদের দাবি আদায়ে বৃহস্পতিবার দিল্লি সংলগ্ন সীমানাগুলি থেকে কয়েক হাজার ট্রাক্টর নিয়ে কেন্দ্র-বিরোধী মিছিল করেছেন বিক্ষোভরত চাষিরা। এদিন যা সামাল দিতে হিমশিম খেয়েছে পুলিস। নাজেহাল হয়েছে প্রশাসন। সরকারের আশঙ্কাকে সত্যি প্রমাণ করে কার্যত অবরুদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে রাজধানীকে।
এদিনের ট্রাক্টর মিছিলের পর অংশগ্রহণকারীরা কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্দেশে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছেন, ‘আগামী ২৬ জানুয়ারি দিল্লির রাস্তায় ঠিক কী হতে চলেছে, তা বৃহস্পতিবারের ড্রেস রিহার্সাল থেকেই বুঝে নিক কেন্দ্র।’ উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই সংযুক্ত কিষান মোর্চা ঘোষণা করেছে, সাধারণতন্ত্র দিবসে দিল্লির রাস্তায় কিষান গণতন্ত্র মিছিল হবে। ব্যবস্থা করা হবে ট্রাক্টর প্যারেডেরও। কর্মসূচিতে শামিল হতে দেশের প্রত্যেক কৃষক পরিবারের অন্তত একজন সদস্য ট্রাক্টর নিয়ে আসবেন।
ভারতীয় কিষান সংগঠন এদিন দাবি করেছে, ‘বৃহস্পতিবার প্রায় ১৫ হাজার ট্রাক্টর দিয়ে দিল্লিকে সবদিক থেকে ঘিরে ফেলেছেন কৃষকরা। শুধু হরিয়ানাতেই মজুত ছিল সাড়ে তিন হাজার ট্রাক্টর। আগামী ২৬ জানুয়ারি ৫০ হাজারেরও বেশি ট্রাক্টর নিয়ে কৃষকরা দিল্লির রাস্তায় নামবেন। ফলে সরকার সিদ্ধান্ত নিক, সাধারণতন্ত্র দিবসে তারা কৃষক প্যারেড দেখবে, নাকি আগেই তিনটি কৃষি আইন বাতিল করবে।’ কেন্দ্র-কৃষক পরবর্তী বৈঠকের আগে সরকারকে প্রবল চাপে ফেলে দিয়ে এদিন বিক্ষোভরত কৃষকরা হুঙ্কার দিয়ে বলেছেন, ‘আপাতত আমরা দিল্লির সীমানায় অবস্থান বিক্ষোভ (Farmers Protest) করছি। সরকারের টালবাহানার কারণে যেদিন আমাদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যাবে, সেদিন আমরা প্রত্যেকে দিল্লিতে প্রবেশ করব। অচল করে দেব রাজধানী। মনে হয়, এতদিনে কৃষকদের ক্ষমতা সম্পর্কে কেন্দ্রের স্বচ্ছ ধারণা তৈরি হয়ে গিয়েছে।’ সরকারকে চাপে রাখতে কেন্দ্র-কৃষক বৈঠকের ঠিক আগের দিন, বৃহস্পতিবার ট্রাক্টর মিছিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন কৃষকরা। সেইমতো দিল্লি-হরিয়ানা সীমানার সিংঘু, দিল্লি-রোহতক করিডরের তিক্রি, দিল্লি-উত্তরপ্রদেশের গাজিপুর, রাজস্থান-হরিয়ানা সীমানায় বুধবার রাত থেকেই একের পর এক ট্রাক্টর নিয়ে জমায়েত করতে শুরু করে দেন কৃষকরা।
এদিন সকাল ১১টায় সিংঘু থেকে তিক্রি সীমানার উদ্দেশ্যে, তিক্রি থেকে কুণ্ডলি সীমানার উদ্দেশে, গাজিপুর থেকে পালওয়াল সীমানার দিকে, রেওয়ারি থেকে পালওয়াল সীমানার দিকে হাজার হাজার ট্রাক্টর নিয়ে মিছিল করেন কৃষকরা। মিছিলের চেষ্টা হয় বুরারিতেও। ব্যারিকেড দিয়ে দেয় পুলিস। ইস্টার্ন এবং ওয়েস্টার্ন পেরিফেরাল এক্সপ্রেসওয়ে জুড়েও চোখে পড়েছে কড়া নিরাপত্তা। কিছু জায়গায় ট্রাক্টর মিছিলকে কার্যত ‘এসকর্ট’ করে নিয়ে গিয়েছে পুলিস। ট্রাক্টরের সামনে জাতীয় পতাকা লাগিয়ে কৃষকরা গর্জে উঠেছেন, ‘আমরা এ দেশেরই মানুষ। পাকিস্তানি নই।’