রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

বেসুরো বিজেপি নেতা বার্লা, প্রকাশ্যে সমর্থন গুরুংকে

January 8, 2021 | 2 min read

রাজ্যের শাসক দলে প্রতিদিনই এখন কেউ না কেউ বেসুরো হচ্ছেন। কিন্তু তাই বলে ভাববেন না বিজেপির (BJP) অন্দরে সব কিছু ঠিক আছে। কারন সেখানেও ক্রমশই বেসুরো মানুষদের সংখ্যাও বেড়ে চলেছে। সেই সব বেসুরো মানুষদের মধ্যে এবার নতুন নাম হতেই পারে আলিপুরদুয়ারের সাংসদ জন বার্লা। কিন্তু কেন এই কথা বলা হচ্ছে? বার্লা কী বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে আসছেন? এই সব প্রশ্নের উত্তর এখনই পাওয়া সম্ভব নয়। তবে প্রকাশ্যে দলের বিরোধী শিবিরের প্রতি যদি কেউ বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেয় তাহলে তো ধরেই নিতে হয়, অল ইজ নট ওয়েল। বার্লা মুখ খুলেছেন প্রকাশ্যেই সংবাদমাধ্যমের সামনে। সেখানে দলের প্রতি কোনও ক্ষোভ সংক্রান্ত কোনও কথা না বললেও এমন একজন মানুষের কথা তিনি বলেছেন যিনি এখন বিজেপির সব থেকে বড় বিরোধী উত্তরবঙ্গের রাজনীতিতে। তাঁর বিরোধীতার জেরে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে পাহাড় থেকে ডুয়ার্স বেশ কিছু আসনের ফল বদলে যেতে বসেছে। তিনি বিমল গুরুং(Bimal Gurung)। বার্লা (John Barla) তাঁর প্রতিই দিয়েছেন বার্তা।

আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ জন বার্লা জানিয়েছেন, ‘বিমল গুরুঙের সঙ্গে মন থেকে বন্ধুত্ব করেছি। তাঁর সঙ্গে বন্ধুত্ব ছিল, বন্ধুত্ব থাকবে। ২০০৭ সাল থেকে আমরা বন্ধু। রাজনীতিতে চড়াই উতরাই থাকে। সময় আসলে সব বোঝা যাবে।’ বৃহস্পতিবার উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিমল গুরুংয়ের প্রসঙ্গে এমনই কথা জানিয়েছেন বার্লা। আর তাঁর এই মন্তব্যের পরই রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। এনডিএ জোট ছেড়ে বেড়িয়ে তৃণমূল কংগ্রেসকে প্রকাশ্যে সমর্থনের কথা জানিয়েছেন বিমল গুরুং। এমনকী, বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির বিরুদ্ধে প্রচারেও নেমেছেন তিনি। কিন্তু বিজেপি সাংসদের এই মন্তব্যে ফের জল্পনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। তাহলে কি ফের বিজেপিকে সমর্থন করবে বিমল গুরুং? এমন প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে রাজনৈতিক মহলে। যদিও বিষয়টিকে অত সহজ ভাবে ধরতে চায় না ওয়াকিবহাল মহল। বিজেপির প্রতি একা গুরুংয়েরই যে মোহভঙ্গ হয়েছে তা নয়, বরঞ্চ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই মোহভঙ্গের তালিকা এখন ক্রমশই বেড়ে যাবে।
 
ওয়াকিবহাল মহলের অভিমত, বার্লা কার্যত বুঝতে পেরে গিয়েছেন হাওয়া এখন ঘুরতে শুরু করে দিয়েছে। ২০১৯ সালে বিজেপির পক্ষে উত্তরবঙ্গে যে হাওয়া ছিল তা আর এখন নেই সেখানে। বরঞ্চ এখন বিজেপি বিরোধীতারই পাল্লাটা ক্রমশ ভারী হচ্ছে সেখানে। আলিপুরদুয়ার লোকসভা আসনের মধ্যে যে ৭টি বিধানসভা কেন্দ্র রয়েছে সেখানে সব কটি আসনেই ২০১৯ সালে লিড তুলেছে বিজেপি। কিন্তু এবার সামনের বিধানসা নির্বাচনে এই লিড ধরে থাকা বিজেপির কাছে খুবই চাপের। কেননা ২০১৯ সালের নির্বাচনে আদিবাসী ও নেপালিদের ভোট পড়েছিল একই বাক্সে। কিন্তু এবার গুরুং বিজেপির বিরুদ্ধে প্রচারে নেমেছেন। পণ করেছেন পাহাড় আর ডুয়ার্স মিলিয়ে ১৮টি আসন তিনি তুলে দেবেন তৃণমূলনেত্রীর হাতে। জন বার্লা নিজে এটা খুবই ভালো জানেন গুরুংয়ের সঙ্গে দোস্তি না রাখলে বা নেপালি ভোট হাতছাড়া হলে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে জয় কার্যত অসম্ভব। তাই গুরুং বিজেপি বিরোধী হলেও তিনি গুরুং বিরোধী হতে চান না। আর তাই সময় থাকতে থাকতেই পুরাতন বন্ধুত্ব রগড়ে নিতে চান। গুরুংকে এখন থেকেই হাতে রেখে ২০২৪ এর ভোট বৈতরণী পার হওয়ার আশায় রয়েছেন বার্লা। এখন দেখার বিষয় এটাই বার্লার এই বন্ধুত্বের বার্তাকে কীভাবে নেন গুরুং। তবে যা হাওয়া তাতে ২০২১ সালের বিধানসভার নির্বাচনে বার্লার লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে খুব কম করেও ৪টি আসনে জোড়াফুল ফুটে যেতে পারে। তুলনায় ধাক্কা খাবে পদ্ম শিবির।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Bimal Gurung, #John Barla

আরো দেখুন