ভেলোর যাওয়ার আগেই স্বাস্থ্যসাথী কার্ড হাতে পেলেন আরামবাগের কৃষক
স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড (Swasthya Sathi Card) হাতে পেয়েই শুক্রবার রাতে কিডনির অপারেশনের জন্য ভেলোর রওনা দিলেন আরামবাগের ডোঙ্গল এলাকার চাষি। স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে ভেলোরের নামী হাসপাতালে অপারেশন হবে। এতে খুশি ওই পরিবারের সদস্যরা। তাঁরা বলেন, অপারেশন করতে বহু টাকার প্রয়োজন ছিল। একসঙ্গে এত টাকা জোগাড় করা নিয়ে আমরা খুবই চিন্তায় ছিলাম। এখন স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের মাধ্যমে ভেলোরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে বিনা খরচে অপারেশন করাতে পারছি। এতে আমরা খুশি।
আরামবাগের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ তথা তৃণমূল (Trinamool) নেতা দীপক মাঝি বলেন, ওই পরিবারের স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ওঁরা ভেলোরের হাসপাতালে গিয়ে অপারেশন করার সুযোগ পাচ্ছেন। আমাদের সরকার সব সময় সাধারণ মানুষের পাশে আছে এবং থাকবে। জানা গিয়েছে, আরামবাগের ডোঙ্গল এলাকায় বসবাস করেন সমর মান্না। চাষবাস করেই বৃদ্ধ সমরবাবুর সংসার চালাতেন। গত আগস্ট মাসে বাথরুমে পড়ে যান তিনি। পেটে আঘাত লাগে তাঁর। ইউএসজি করিয়ে জানা যায়, কিডনিতে পাথর ও কিডনির উপরে টিউমার রয়েছে। অসুস্থ হওয়ায় প্রায় এক বছর তিনি কোনও কাজ করতে পারছিলেন না। বাধ্য হয়ে মেয়ে খেয়ালী সংসারের হাল ধরেন। তিনিই বাবাকে কলকাতার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ডাক্তার দেখান। সেখানে অপারেশন করাতে প্রায় সাড়ে ৪ লক্ষ টাকা খরচ হবে বলে জানানো হয়। কিন্তু এত টাকা জোগাড়ের সামর্থ্য তাঁদের নেই। তাই সমরবাবুকে ভেলোরে অপারেশন করার জন্য সিদ্ধান্ত নেন। সেই মতো ১৭নভেম্বর তাঁরা ভেলোরে গিয়ে খ্রিস্টান মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক উজ্জ্বল কুমারকে দেখান। চিকিৎসক অপারেশন করতে আড়াই লক্ষ টাকা লাগবে বলে জানান। তখনই খেয়ালীদেবী অন্যান্য রোগীদের কাছ থেকে জানতে পারেন, এই হাসপাতালে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে অপারেশন করানো যাবে।
তারপরই তিনি আরামবাগের (Arambag) শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। দীপকবাবু নিজে আরামবাগ বিডিও অফিসে তাঁদের দ্রুত স্বাস্থ্যসাথী কার্ড দেওয়ার জন্য তদারকি করেন। সেইমতো অত্যন্ত জরুরি ভিত্তিতে ৭ জানুয়ারি হুগলির জেলাশাসক কার্যালয়ে সমরবাবুর ফটো তুলিয়ে তাঁর হাতে স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড দিয়ে দেওয়া হয়। শুক্রবার সেই কার্ড নিয়েই খেয়ালীদেবী বাবা ও মাকে নিয়ে ভেলোরে অপারেশন করার জন্য ট্রেন ধরেন।
খেয়ালী বলেন, বাবার অপারেশনের জন্য একসঙ্গে অত টাকা জোগাড় হচ্ছিল না। খুব চিন্তায় ছিলাম। এখন স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের মাধ্যমে প্রায় বিনা খরচে বাবার অপারেশন হবে। আমরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি চিরকৃতজ্ঞ থাকব।