‘ডেনমার্ক ট্যাভার্ন’ – গঙ্গার ধরে ইতিহাসের ছোঁয়া
হঠাৎ দেখলে মনে হবে যেন পরিচিত কফি হাউস, নতুন করে সাজানো। কিন্তু তা নয়। কারণ, কফি হাউজে আড্ডা-খাওয়াদাওয়া করা গেলেও, থাকার কোনও ব্যবস্থা নেই।
কিন্তু ‘ডেনমার্ক ট্যাভার্ন’ (Denmark Tavern) এমনই এক ক্যাফে, যেখানে ইচ্ছে করলে দু’-এক দিন থাকাও যায়। তাও একেবারে গঙ্গার পাড়ে, সুসজ্জিত ঘরে। শ্রীরামপুরের নিশান ঘাটের পাশেই রযেছে ‘ডেনমার্ক ট্যাভার্ন’। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির শেষ দিনে ক্যাফে-গোয়ারদের জন্য খুলে দেওয়া হয় তা।
ইতিহাসের ছোঁয়া নিয়েই নতুন রূপে।
বাইরে থেকে বোঝা না গেলেও, ভিতরের খাওয়া-দাওয়ার জায়গাটি অবিকল কলকাতার কফি হাউসের মতো। উপরের ব্যালকনির পাশেই রয়েছে পাঁচটি থাকার ঘর। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রায় পাঁচ কোটি টাকা খরচ করে ‘ডেনমার্ক ট্যাভার্ন’-কে আবারও তার পুরনো সৌন্দর্যে ফিরিয়ে এনেছে ‘রিয়্যালদানিয়া’ নামে ডেনমার্কের এক বেসরকারি সংস্থা। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পর্যটন দফতরও হাত মিলিয়েছিল বিদেশি এই সংস্থার সঙ্গে।
ডেনমার্কের ন্যাশনাল মিউজিয়াম-এর আধিকারিকরা ও বাংলার সরকারি সংরক্ষণ বিশেষজ্ঞ মনীশ চক্রবর্তী মূলত কাজ করেছেন ‘ডেনমার্ক ট্যাভার্ন’-এর পুনরুপস্থাপনের জন্য। প্রসঙ্গত, ১৭৮৬ সালের ১৬ মার্চ ‘ক্যালকাটা গেজেট’-এ বিজ্ঞাপন ছাপা হয় শ্রীরামপুরের একটি ট্যাভার্ন সম্পর্কে। জানা যায়, জেমস পার নামে জনৈক এক সাহেব, হুগলি নদীর পাড়েই খুলেছিলেন এই ট্যাভার্ন। কাছেই শ্রীরামপুরের নিশান ঘাট। নদীর উলটো পাড়েই ব্যারাকপুর ক্যান্টনমেন্ট। ফলে, রমরমিয়ে চলতে শুরু করে ‘ডেনমার্ক ট্যাভার্ন’।
একটা সময় আসে যখন শ্রীরামপুর থেকে চলে যায় বিদেশিরা। কিন্তু রয়ে যায় ডেনমার্কের সেই ট্যাভার্ন। তার পরে অবশ্য কেটে যায় কয়েকশো বছর। এবং যত্নের অভাবে একেবারে ভগ্নদশা প্রাপ্ত হয় ‘ডেনমার্ক ট্যাভার্ন’। তবে বর্তমানে ‘ডেনমার্ক ট্যাভার্ন’ আবির্ভূত হয়েছে একেবারে নতুন সাজে। যেখানে অবসরের এক সপ্তাহান্ত কাটিয়ে আসতেই পারেন।