সাহস থাকলে মন্ত্রীরা সীমানায় এসে কথা বলুন, দাবি কৃষকদের
‘বারবার আমাদের ডেকে পাঠানো কেন? সাহস থাকলে কেন্দ্রের মন্ত্রীরা অন্তত একবার সীমানায় এসে আমাদের সঙ্গে কথা বলুন।’ শুক্রবারের কেন্দ্র-কৃষক বৈঠক (Centre- Farmers meeting) ফের ব্যর্থ হওয়ার পর শনিবার সরকারের উদ্দেশে এই চ্যালেঞ্জই ছুঁড়ে দিয়েছেন বিক্ষোভরত কৃষকরা। এদিন নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে কিষান সংগঠনগুলি সাফ জানিয়ে দিয়েছে, ‘সরকারের সঙ্গে চাষিরা নিশ্চই কথা বলবেন।
কিন্তু যতবার বৈঠক হবে, ততবারই কৃষি আইন বাতিলের দাবিই তুলবেন তাঁরা। সরকার যেন বিক্ষোভকারীদের কাছ থেকে নতুন করে কিছু শুনতে না চায়।’ বিতর্কিত তিনটি আইন বাতিলের দাবিতে আন্দোলনকারী কৃষকদের এই অনমনীয় মনোভাব চিন্তা দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের। আগামী ১৫ জানুয়ারি ফের কেন্দ্র-কৃষক বৈঠক ডাকা হলেও তা আদৌ ফলপ্রসূ হবে কি না, এই চিন্তাই এখন বড় হয়ে দেখা দিচ্ছে সরকারের অন্দরে।
শুক্রবার একপ্রকার নজিরবিহীনভাবে ‘হয় জিতব অথবা মরব’ লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে কেন্দ্রের সঙ্গে বৈঠক করেছেন কৃষক নেতারা। শনিবারও এই চ্যালেঞ্জের সুর বজায় রেখে বিক্ষোভরত কৃষকরা বলেছেন, ‘এখানে কেউ তাঁর সন্তানকে ছেড়ে এসেছেন। কোনও সন্তান তাঁর বাবা-মাকে ছেড়ে এসেছে। কেউ হয়তো গত দু’মাস ধরে নিজের স্ত্রী-সন্তানের মুখই দেখেননি। অনেকে পরিবার নিয়ে এসে প্রবল কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। এগুলো কি সব অর্থহীন? চাষিদের এই কষ্ট-যন্ত্রণার দাম দেবে না কেন্দ্র? তাঁদের মাথা নোয়াতেই হবে।’
বিগত প্রায় ৪৫ দিন ধরে দিল্লি সংলগ্ন একাধিক সীমানা অবরোধ করে রেখেছেন কৃষকরা। চলছে লাগাতার বিক্ষোভ প্রদর্শন। দিনের পর দিন বন্ধ হয়ে রয়েছে দিল্লি-হরিয়ানার গুরুত্বপূর্ণ সিংঘু, দিল্লি-রোহতক করিডরের তিক্রি, দিল্লি-উত্তরপ্রদেশের গাজিপুর, দিল্লি-নয়ডার চিল্লা সীমানার মতো এলাকা। ক্রমশ উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে রাজস্থান-হরিয়ানা সীমানায়। এই সীমানার শাহজাহানপুরে এর আগে দু’বার পুলিসি ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করেছেন বিক্ষোভকারীরা। ফের সীমানা টপকে হরিয়ানা হয়ে দিল্লিতে প্রবেশের হুঁশিয়ারি ইতিমধ্যেই দিয়ে রেখেছেন কৃষকরা।
এহেন উত্তেজনার আবহেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের সীমানায় এসে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলার চ্যালেঞ্জ রীতিমতো উদ্বেগে ফেলে দিয়েছে সরকারকে। এদিন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমারের উদ্দেশে তীব্র তোপ দেগে সারা ভারত কিষান সভার পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, কৃষকদের সঙ্গে মোট আটবার বৈঠক করেছে কেন্দ্র। প্রতিটিই ব্যর্থ হয়েছে। অথচ এই সময়ে দিল্লি সীমানার বিক্ষোভস্থলগুলিতে ৬০ জন কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। তাহলে বৈঠক করে আর লাভ কী?