বিজেপিকে পর্যুদস্ত করার মহরা তৃণমূলের
একদিকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (abhishek banerjee) মতো নেতারা অন্য রাজ্য থেকে আসা বিজেপি (bjp) নেতাদের বহিরাগত বলে আক্রমণ করছেন, আর অন্যদিকে কাকলি ঘোষ দস্তিদারের (kakali ghosh dastidar) মতো নেতানেত্রীরা বলছেন, রাজ্যের বিজেপি তিনভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। মূলত বিজেপির মধ্যে আদি, নব্যের বিভাজনকেই উসকে দিতে চেয়েছেন তিনি।
চাপ বাড়াচ্ছে বিজেপি
একদিকে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আর বেসুরো নেতাদের কাজে লাগিয়ে দলবদল করিয়ে চাপ বাড়াচ্ছে বিজেপি অন্যদিকে কেন্দ্রীয় নেতাদের এনে প্রচারও জোরদার করছে তারা। একইমাসে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতির রাজ্য সফরের পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজ্য সফরের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। আর মাসের একেবারে শেষে রাজ্যে আসতে পারেন অমিত শাহ। তিনি এসে ঠাকুরনগরে সিএএ-র প্রয়োগ নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু কিছু বলতে পারেন বলেই মনে করা হচ্ছে। একদিকে যখন বিজেপি দাবি করছে তারা বিধানসভা নির্বাচনে ২০০-র বেশি আসন পাবে, তার পাল্টা হিসেবে তৃণমূল অভ্যন্তরীণ হিসেব সামনে এনে দাবি করছে অন্তত ১৯০ আসন নিয়ে তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় আসতে চলেছে তারা।
বহিরাগত বিতর্কে ড্যামেজ কন্ট্রোল
বহিরাগত আক্রমণের সঙ্গেই হিন্দিভাষী প্রধান এলাকাগুলিতে কর্মসূচি নিয়েছে তৃণমূল। এররকমই এক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে হুগলির ভদ্রেশ্বরে। সেখানে হিন্দিভাষী প্রায় ২০০০ জনকে এদিন বিনা পয়সায় লিট্টি, চাটনি, চোখা খাওয়ানো হয়। হুগলি শিল্পাঞ্চলে বিহার, উত্তর প্রদেশ থেকে বহু মানুষ এসেছেন ৪০ থেকে ৫০ বছর আগে। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের বহিরাগত তকমার প্রভাব পড়ছে নিচু তলায়। তাকে খন্ডন করতেই কার্যত লিট্টি, চোখা খাওয়ানো হয় এদিন। কোন রণকৌশলে বিজেপি পর্যুদস্ত হতে পারে, তা নিয়েই এখন চর্চা চলছে তৃণমূলের অন্দরে।
রাজ্য বিজেপি তিনভাগে বিভক্ত
প্রতিদিনই তৃণমূলের কোনও না কোনও মুখপত্র তৃণমূল ভবন থেকে আক্রমণ শানান। এদিন সেই আসনে ছিলেন বারাসতের সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার। এদিন তিনি বলেন, রাজ্য বিজেপি এখন তিন ভাগে বিভক্ত, আদি, নব্য এবং পর্যটক। পর্যটক বিজেপি নেতাদের ভিড় এই রাজ্যে বাড়ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। প্রসঙ্গত এদিন অন্ডাল হয়ে কালনা যান বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। দুপুরে কৃষক পরিবারে মধ্যাহ্ন ভোজন সারেন। সন্ধেয় তিনি যান বর্ধমানের সর্বমঙ্গলা মন্দিরে। নাড্ডার এই কর্মসূচিকেই কটাক্ষ করেছেন তৃণমূলের মুখপাত্র কাকলি ঘোষ দস্তিদার। তিনি বলেন, জাত, ধর্ম তুলে, মানুষের বাড়িতে গিয়ে খাওয়ার নামে প্রচার করছে বিজেপি। যাঁর বাড়িতে গিয়ে বিজেপি নেতারা খাচ্ছেন, সেই মানুষটিকেই তারা অপমান করছেন বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। তৃণমূল শিবির ছেড়ে বিজেপি শিবিরে ভিড় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গেরুয়া শিবিরে আদি-নব্য নিয়ে যে অলিখিত বিভাজন রয়েছে, রাজ্যের শাসকদল তাকেই উস্কে দিতে চাইছে। কেননা শুক্রবারেও নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারীর সভায় বিজেপির সমর্থকদের একাংশ খেজুরির তৃণমূল বিধায়কের বিজেপিতে যোগ দেওয়ার বিরোধিতা করেন।
ভিন রাজ্যের বিজেপি নেতাদের টুরিস্ট গ্যাং বলে আক্রমণ করেছিলেন কাকলি
এর আগে ভিন রাজ্যের বিজেপি নেতাদের টুরিস্ট গ্যাং বলে আক্রমণ করেছিলেন কাকলি ঘোষ দস্তিদার। তিনি বলেছিলেন, একুশের ভোটের জন্য মোদী শাহ টুরিস্ট গ্যাংকে রাজ্যে পাঠাচ্ছেন।