শপিং মল নির্মাণের জের, ভাঙতে বসেছে বিভূতিভূষণের বাড়ি, দিশেহারা লেখকের পুত্রবধূ
গোটা বাড়ি জুড়ে ছড়ানো সাহিত্যিক বিভূতিভৃষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Bibhutibhushan Bandyopadhyay) স্মৃতির স্মারক। কোথাও রাখা পাণ্ডুলিপি, কোথাও আবার ব্যবহৃত আসবাব। কিন্তু তাঁর স্মৃতিরক্ষার দায় আক্ষরিক অর্থেই বহন করছেন যাঁরা, তাদের জীবনই সংকটে। হ্যাঁ আজ তেমনই জানালেন বিভূতিভূষণের পুত্রবধূ। সৌজন্যে দিনের পর দিন চলে আসা এক বহুতল শপিংমল নির্মাণ প্রকল্প।
সুসাহিত্যিক তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী শ্রীমতি মিত্রা বন্দ্যপাধ্যায় (Mitra Bandyopadhyay) এ দিন ফেসবুকে (Facebook) লেখেন, “আমি কথাসাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুত্রবধূ। ব্যারাকপুরে সুকান্তসদনের পিছনে আমাদের বাড়ি আরণ্যক। প্রায় দু’বছর আগে আমাদের বাড়ির গা ঘেঁষে একটি বিশাল শপিং মল উঠেছে। কাজ শুরু হওয়ার প্রথম দিন থেকেই আমাদের বাড়ির পিছনের পাঁচিল ভেঙে দেওয়া হয়। বিভিন্ন রকমের উৎপাত চলে। পৌরসভার তখনকার চেয়ারম্যান উত্তম দাসকে বিষয়টি জানানোর পর উনি চিঠি দিয়ে জানিয়েছিলেন বাড়ি ওরা মেরামত করে দেবেন।…তখনকার মতো দুতিনটে খুঁটি লাগিয়েছিলেন। এখনও কোনও সমাধান পাইনি ।”
কিন্তু কেন প্রশাসনকে জানাচ্ছেন না? মিত্রাদেবীর উত্তর, “বহু জায়গায় তদ্বির করেছি। কিন্তু কোনও রহস্যজনক কারণে কিছুই করতে পারছি না।” মিত্রাদেবী প্রশ্ন তোলেন, “তবে কি ভদ্রতার দিন ফুরলো?”
শুধু মিত্রাদেবী নন, প্রবল সংকটে মিত্রাদেবীর প্রতিবেশীরা। বাসবী চক্রবর্তী নামের এক মহিলা জানান, বাড়ির বিভিন্ন জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন মল হচ্ছে ব্যারাকপুরবাসীর স্বার্থে এই কাজ বন্ধ করা যাবে না।
ব্যারাকপুর অঞ্চলে বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের নাম মুখে মুখে ফেরে।তাদের প্রতি সম্ভ্রমও অটুট মানুষের। অতীতে ব্যারাকপুরের পুরপ্রশাসক বলেছেন, সর্বতোভাবে সাহায্য করবেন বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারকে। কিন্তু অশান্তিতে নাজেহাল পরিবারকে কি তাঁরা সত্যিই পারবে,অসুস্থ মিত্রাদেবীর চোখে সংশয়।