ভেলোরে ব্রেন টিউমার অপারেশন, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড সহায় সারেঙ্গার রামবিষ্ণু পণ্ডার
ব্রেন টিউমার। রোগের নামটা শুনেই বুক কেঁপে উঠেছিল সারেঙ্গার কুসুমটিকরী গ্রামের বাসিন্দা রামবিষ্ণু পণ্ডার (Rambishnu Ponda)। চাষবাস করে কোনও রকমে সংসার চালান, তাই রামবিষ্ণুবাবু কীভাবে অপারেশন করাবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না। পরিবার ও প্রতিবেশীদের পরামর্শে ভেলোরে অপারেশন করানোর মনস্থির করেন। কিন্তু, টাকা জোগাড় হবে কীভাবে বুঝে উঠতে পারছিলেন না। শেষ পর্যন্ত স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড (Swastha Sathi card) আশার আলো দেখিয়েছে।
প্রতিবেশীদের পরামর্শে রামবিষ্ণুবাবু শাসক দলের নেতাদের দ্বারস্থ হন। এগিয়ে আসেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা তারাশঙ্কর মহাপাত্র। রামবিষ্ণুবাবুকে নিয়ে তিনি সারেঙ্গার বিডিও ফাহিম আলমের কাছে যান। বিডিও বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড তৈরির ব্যবস্থা করেন। আবেদনের ১৫ ঘণ্টার মধ্যে এই কার্ড পৌঁছে যায় রামবিষ্ণুবাবুর কাছে। তিনি এই কার্ড নিয়ে শনিবার ভেলোরের উদ্দেশে রওনা দেন। স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে ভেলোরের নামী হাসপাতালে তাঁর অপারেশন হবে। এটা ভেবে ওই পরিবারের সদস্যরা তো বটেই, খুশি প্রতিবেশীরাও।
ভেলোর (Vellore) যাওয়ার আগে রামবিষ্ণুবাবু বলেন, এখানে বেশ কয়েকটি জায়গায় দেখানোর পর চিকিৎসকরা জানান, ব্রেন টিউমার হয়েছে। দ্রুত অপারেশন করাতে হবে। সবাই ভেলোরে গিয়ে অপারেশন করানোর পরামর্শ দেন। অপারেশনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় আমি ভেলোরে যাওয়ার জন্য মনস্থির করি। ওখানে প্রাথমিক কথাবার্তাও হয়েছে। অপারেশন করতে অনেক টাকার প্রয়োজন ছিল। একসঙ্গে এত টাকা কীভাবে জোগাড় করব, তা নিয়ে খুবই চিন্তায় ছিলাম। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে এখন স্বাস্থ্যসাথী কার্ডই আমাদের ভরসা। এই কার্ডেই ভেলোরের হাসপাতালে বিনা খরচে অপারেশন করাতে পারব। এই সুযোগ করে দেওয়ায় আমি ও আমার পরিবার সারেঙ্গা ব্লক প্রশাসন ও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিরকৃতজ্ঞ থাকব।
তারাশঙ্করবাবু বলেন, দিন চারেক আগে রামবিষ্ণুবাবুর পরিবার আমার কাছে তাঁদের সমস্যার কথা জানান। তারপরই আমি ব্লক প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করি। ওরা যাতে দ্রুত স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড পেতে পারে, সেই জন্য প্রশাসনের কাছে আবেদন জানাই। তারপর প্রশাসন মাত্র ১৫ ঘণ্টার মধ্যে ওঁদের হাতে স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড তুলে দিয়েছে। ওঁরা ভেলোরের হাসপাতালে গিয়ে ওই কার্ডে অপারেশন করাতে পারবেন। আমাদের সরকার সব সময় সাধারণ মানুষের পাশে আছে ও থাকবে।
সারেঙ্গার বিডিও ফাহিম আলম বলেন, রামবিষ্ণুবাবুর অসুবিধার কথা জানার পরই আমি জেলা স্তরে যোগাযোগ করি। তারপর ১৫ ঘণ্টার মধ্যে ওই পরিবারের হাতে স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড তুলে দিয়েছি। আমরা চাই, সাধারণ মানুষ এই ধরনের অসুবিধায় পড়লে তাঁরা যেন সরাসরি প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। প্রশাসন প্রতিটি ক্ষেত্রেই সাধ্যমতো চেষ্টা করবে।