‘ফেক গুজরাত’ মডেল, আওয়াজ তুলল তৃণমূল
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সুরেই এবার বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হল কংগ্রেস (Congress)। বাংলাকে কোনওভাবেই গুজরাত হতে দেব না বলেই মন্তব্য করল সোনিয়া গান্ধীর দল। ‘বাংলার সমৃদ্ধশালী সংস্কৃতিকে রক্ষা করা যেমন কংগ্রেসের লক্ষ্য, একইসঙ্গে টার্গেট পশ্চিমবঙ্গের গুজরাত হওয়া ঠেকানো।’ রবিবার এমনটাই জানালেন কংগ্রেস নেতা জিতিন প্রসাদ। বাংলার সংস্কৃতি রক্ষা করতে পারে বিজেপিই, এমনটাই দাবি করে প্রচার বাড়িয়েছেন বিজেপি সভাপতি জে পি নাড্ডা। তারই পাল্টা দিতে বাংলার সংস্কৃতিকে কোনওভাবেই গুজরাতিয়ানায় পরিণত হতে দেব না বলেই মন্তব্য করেছেন পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত এআইসিসির পদাধিকারী। আর এখানেই ‘ফেক গুজরাত মডেল’ তুলে ধরেছে তৃণমূল। রাজ্যের শাসক দলের তরফে তথ্য দিয়ে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে, উন্নয়নের নিরিখে গুজরাত থেকে বাংলা অনেক এগিয়ে।
জিতিন প্রসাদ (Jitin Prasad) বলেন, ভোটের দায়ে বিজেপি এখন বাঙালিয়ানা, বাংলার মনীষীদের নিয়ে মাতামাতি করছে। এতই যদি বাংলার মনীষীদের নিয়ে চিন্তা, তাহলে কেন সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের মতো নেতাজি সুভাষচন্দ্রের মূর্তি গড়েনি বিজেপি? বিজেপির বাংলার প্রতি দরদ লোকদেখানো বলেই তোপ দেগে তিনি এও বলেন, আমরা বাংলায় ক্ষমতায় এলে বিশালাকার নেতাজির মূর্তি গড়ব। বাংলায় এবার কংগ্রেস-সিপিএম জোট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলেই দাবি করেন জিতিন প্রসাদ। পশ্চিমবঙ্গের ভোট নিয়ে কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও তৎপর হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গে (West Bengal) বামেদের সঙ্গে জোট তথা আসন রফা নিয়ে আলোচনা করতে সোনিয়া গান্ধী যেমন চার সদস্যের কমিটি গড়েছেন, একইসঙ্গে তিন সদস্যের একটি পর্যবেক্ষক দলও গড়েছেন। প্রদেশ কংগ্রেসের অধীর চৌধুরী, আবদুল মান্নান, প্রদীপ ভট্টাচার্য এবং নেপাল মাহাতোকে কমিটির সদস্য করে বামেদের সঙ্গে আসন রফা তথা যৌথ রাজনৈতিক কর্মসূচি ঠিক করার দায়িত্ব দিয়েছেন কংগ্রেস সুপ্রিমো। একইভাবে রাজ্যসভার প্রাক্তন এমপি বি কে হরিপ্রসাদ, আলমগির আলম এবং বিজয় ইন্দর সিংলাকে পশ্চিমবঙ্গের পর্যবেক্ষক নিযুক্ত করা হয়েছে। এআইসিসি সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোট পরিস্থিতি এবং দলের অবস্থান নিয়ে আলোচনার লক্ষ্যে এআইসিসির পর্যবেক্ষকরা শীঘ্রই বাংলায় যাবেন।
বিজেপির বাংলা দখলের টার্গেট দুঃস্বপ্ন থেকে যাবে বলে দাবি করেছে তৃণমূল (Trinamool)। নাড্ডাজির বাংলা সফরের একটি ছবি দেখিয়ে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, পর্যটকরা নিজেদের সঙ্গে ফটোশ্যুটের জন্য দামি মিনারেল ওয়াটারের বোতল নিয়ে এসেছেন। যাঁরা পাঁচতারা হোটেলের খাবার ছাড়া থাকতে পারেন না। তাঁদের কাছ থেকে আর কী আশা করা যায়?
পাশাপাশি দলের তরফে ট্যুইটারে গুজরাতের দিকে আঙুল তোলা হয়েছে। বলা হয়েছে, গুজরাতে (Gujarat) নবজাতক শিশুমৃত্যুর হার ৩১.২ শতাংশ, যা পশ্চিমবঙ্গের ২২ শতাংশের থেকে অনেকটাই বেশি। এছাড়াও পাঁচ বছরের নীচে শিশুমৃত্যুর হার গুজরাতে ৩৭.৬ শতাংশ, বাংলায় তা ২৫.৪। তৃণমূলের দাবি, গুজরাতের শিশুরা বাংলার শিশুদের তুলনায় অনেক বেশি অপুষ্টির শিকার। বাংলার সরকারি হাসপাতালে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা গুজরাতের চার গুণ।