দেশ বিভাগে ফিরে যান

‘স্বদেশ’ এর বাস্তবায়ন! ক্যানেলের জলে ‘বিদ্যুৎকেন্দ্র’ গড়ে নজির কৃষকের

January 12, 2021 | 2 min read

কথায় বলে, প্রতিটি মানুষের মধ্যেই রয়েছে কিছু না কিছু উদ্ভাবনী শক্তি। আর এই সৃষ্টিশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটে প্রয়োজন অনুসারে। ঠিক যেমনটি ঘটেছে কর্ণাটকের এক অতি সাধারণ চাষি (Farmers) সিদ্দাপ্পার ক্ষেত্রে। গ্রামে বিদ্যুতের প্রয়োজন। অথচ, বিদ্যুৎ দিতে অপারগ সরকার। তা বলে কি আর গ্রামে বাল্ব জ্বলবে না? টিভি দেখবেন না গ্রামবাসীরা? সিদ্দাপ্পা চ্যালেঞ্জটা নিলেন ঠিক এখানেই। সরকারের মুখের উপর জবাব দিয়ে ক্যানেলের জলে গড়ে ফেললেন আস্ত একটা জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র (Water Power Station)।

কর্ণাটকের (Karnatak) প্রত্যন্ত গ্রামে থাকেন সিদ্দাপ্পা। স্বাধীনতার প্রায় সাত দশক পরেও সেই গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছয়নি। বারবার আবেদন জানিয়েছেন বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার কাছে। কিন্তু অজগাঁয়ে বিদ্যুৎ পরিষেবা দিতে রাজি হয়নি তারা। শেষমেশ সিদ্দাপ্পাই গ্রামে বিদ্যুতের আলো জ্বালাতে উদ্যোগী হন। বাড়ির পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ক্যানেলের জলের গতিকে কাজে লাগিয়ে উৎপাদন করছেন বিদ্যুৎ। স্থানীয় ভাষায় যাকে বলা হচ্ছে ‘ওয়াটার মিল’। সেখানকার উৎপাদিত বিদ্যুৎ দিয়ে ৬০ ওয়াটের কমপক্ষে দশটি বাল্ব জ্বালানো যাবে। চলবে কম করে দু’টি টিভিও। সিদ্দাপ্পার উৎপাদিত বিদ্যুতে গ্রামের একটা অংশ এখন আলো ঝলমলে। ট্যুইটারে তাঁর এই অসাধারণ কৃতিত্বকে তুলে ধরেছেন প্রাক্তন ক্রিকেটার ভিভিএস লক্ষ্মণ। সিদ্দাপ্পার উদ্ভাবনী শক্তিকে কুর্নিশ জানিয়েছেন তিনি। সোশ্যাল মিডিয়াতেও ভাইরাল হয়েছে ওই কৃষকের তৈরি অভিনব ‘পাওয়ার প্ল্যান্ট’-এর ছবি। প্রশাসনিক কর্তা ও বিদ্যুৎ দপ্তরের আধিকারিকরাও খোঁজখবর শুরু করেছেন।

সিদ্দাপ্পা এবার চাইছেন তাঁর উৎপাদিত বিদ্যুৎ গোটা গ্রামে পৌঁছে দিতে। কিন্তু বাধ সাধছে ক্যানেলের জল (Canal Water)। তাতে সারাবছর পর্যাপ্ত জল থাকে না। স্রোতহীন হয়ে পড়ে বছরের একটা বড় সময়। ফলে বছরভর যাতে ওই ক্যানেলে জল পাওয়া যায়, সেই চেষ্টাই শুরু করেছেন সিদ্দাপ্পা। গ্রামবাসীরাও তাঁর সঙ্গে সহযোগিতা করছেন। সিদ্দাপ্পা জানিয়েছেন, নারাগান্ড পাহাড়ের উইন্ড মিল দেখেই তাঁর এই ‘ওয়াটার মিল’ করার ভাবনা মাথায় আসে। একেবারে নিজস্ব প্রযুক্তিতে কাজ শুরু করেন। সবমিলিয়ে পাঁচ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। দেখতে একেবারে সাদামাটা হলেও তাঁর তৈরি যন্ত্রটি গোটা গ্রামেই বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে সক্ষম বলেও দাবি ওই কৃষকের।

সিদ্দাপ্পা এদিন বলছিলেন, ‘এই যন্ত্রটি তৈরি করার পিছনে আসলে হুবলি ইলেক্ট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডকেই ধন্যবাদ দিতে চাই। ওদের কাছে বিদ্যুতের জন্য গিয়েছিলাম। কিন্তু তারা সাফ জানিয়ে দেয়, আমার গ্রাম নাকি এতটাই প্রত্যন্ত যে, বিদ্যুৎ পরিষেবা দেওয়া সম্ভব নয়। একথা শুনেই মনে জেদ চেপে যায়। ঠিক করি, নিজেই বিদ্যুৎ তৈরি করব। সেটা করতে পারায় আমি খুব খুশি।’

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Canal Water, #Power Station

আরো দেখুন