আউটরাম ঘাটেই পুণ্যর্থীদের স্নানের বিশেষ ব্যবস্থা
‘ইসবার ই-স্নান (E-Snan) সে পুণ্য স্নান’। এই বার্তা সর্বত্রই ছড়িয়ে দিতে উদ্যোগী হয়েছে জেলা প্রশাসন। কিন্তু তাতে সাগরে তীর্থযাত্রীদের সমাগমে ভিড় কতটা ঠেকানো যাবে, সেটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন। বুধবার হাইকোর্টে গঙ্গাসাগর মেলার রায়ের আগে আরও একটি অভিনব পদক্ষেপ নিল প্রশাসন। পাইপলাইনের মাধ্যমে গঙ্গাজলের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। আর তাতেই পুণ্যার্থীরা মকর সংক্রান্তির আগেই স্নান সেরে নিচ্ছেন। এমনই ছবি দেখা গেল আউটরাম ঘাটে (Outram Ghat)। জেলাশাসক পি উলাগানাথন বলেন, কেউ চাইলে এখানেও স্নান সেরে নিতে পারবেন। তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে। পর্যাপ্ত সংখ্যায় পুরোহিতও রাখা হয়েছে। তাঁদের মাধ্যমে মন্ত্র উচ্চারণ করে পুণ্যস্নান সেরেও খুশি হতে পারেন তীর্থযাত্রীরা। তবে সাগর যাওয়ার ক্ষেত্রে কোনও বাধা নেই। কিন্তু সরকার ই-স্নানের উপরই জোর দিচ্ছে। যেসব বিকল্প ব্যবস্থা নিয়েছে জেলা প্রশাসন, তাতে খুশি তীর্থযাত্রীদের একাংশও। রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ থেকে কলকাতায় নেমে কারও যদি মনে হয়, আর সাগরে যেতে পারবেন না, তাহলে তাঁরা এই ঘাটেই স্নান সেরে নিতে পারবেন। প্রশাসনিক মহলের ধারণা, এমনটা হলে সাগরে ভিড় কিছুটা কম হতে পারে।
আউটরাম ঘাটে যে ব্যবস্থা করা হয়েছে, সেখানে একেক বার চার থেকে পাঁচজন করে ঢুকতে পারবেন। পাইপলাইনের সঙ্গে শাওয়ার লাগানো রয়েছে। পুরোহিতদের সঙ্গে সঙ্গে মন্ত্র উচ্চারণ করেই জলের নীচে দাঁড়িয়ে পুণ্যলাভের চেষ্টা করছেন অনেকে। তার পাশে একটি চৌবাচ্চার মতো করা হয়েছে। কেউ চাইলে সেখান থেকেও জল নিয়ে মাথায় ঢালতে পারবেন। কিন্তু শারীরিক দূরত্ববিধি মেনে একসঙ্গে অনেককে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
এদিকে, ই-স্নানের জন্য সাগরে একাধিক কাউন্টারের সামনে কলস রেখে দেওয়া হয়েছে। তার মাধ্যমেও স্নান সারা যাবে। এদিকে, মূল স্নান পর্বের এখনও দু’দিন বাকি। কিন্তু ভিন রাজ্য থেকে পুণ্যার্থীদের ঢল ইতিমধ্যে আসতে শুরু করে দিয়েছে। রবিবারই প্রায় ১০ হাজারের মতো মানুষ এসে পড়েছেন সাগরে। এই সংখ্যা ক্রমে বাড়তে থাকবে বলেই প্রশাসনিক কর্তারা জানিয়েছেন। কপিলমুনির মন্দিরে পুজো দিতেও হুড়োহুড়ি করতে দেওয়া হচ্ছে না। স্যানিটাইজার (Sanitizer) দিয়ে হাত সাফ করার পরই মন্দিরের ভিতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে তীর্থযাত্রীদের। সেক্ষেত্রে একেকবারে নির্দিষ্ট সংখ্যক লোককেই ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে, মেলা উপলক্ষে একটি বই প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে মেলার গাইড ম্যাপ, জেলার শীর্ষ আধিকারিকদের এবং আপৎকালীন ফোন নম্বর থাকবে। তবে এই মেলা সফলভাবে পরিচালনা করতে উপকূলরক্ষী বাহিনীর অবদান অনস্বীকার্য। তারা যেকোনও পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে প্রস্তুত। এমনটাই জানিয়েছেন ফ্রেজারগঞ্জের কোস্টগার্ডের (পশ্চিমাঞ্চল) অধিকর্তা ও কমান্ড্যান্ট অভিজিৎ দাশগুপ্ত।