দেশ বিভাগে ফিরে যান

মোদীর মুখে পরিবারতন্ত্র, পাল্টা দিলেন বিরোধীরা

January 13, 2021 | 2 min read

মমতা কিংবা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) নাম করেননি এক বারও। মুখে আনেননি সনিয়া অথবা রাহুল গাঁধীর নাম। কিন্তু স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিবসে জাতীয় যুব সংসদ উৎসবের অরাজনৈতিক মঞ্চেও ফের পরিবারতন্ত্রকে নিশানা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)।

রাজনৈতিক শিবিরের মতে, বাংলায় বিধানসভা ভোটের মুখে, তা-ও স্বামীজির জন্মবার্ষিকীতে, এই আক্রমণ ইঙ্গিতবাহী। যদিও বিরোধীদের কটাক্ষ, অন্যদের দিকে আঙুল তোলার আগে আয়না দেখুক বিজেপি। বংশ পরম্পরায় নেতার উদাহরণ সেখানেও ভুরিভুরি।

মঙ্গলবার সংসদ ভবনের অনুষ্ঠানে মোদী বলেন, ‘‘বংশ পরম্পরার রাজনীতি দেশের স্বার্থ সবার উপরে রাখার বদলে ‘আমি এবং আমার’ ভাবনাকে পোক্ত করে। রাজনৈতিক দুর্নীতির এটি বড় কারণ।’’ তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও ব্রায়েনের বক্তব্য, ‘‘ওনার আগে মন্ত্রিসভা, দল, সাংসদ, বিধায়ক এবং সহ-গুজরাতির দিকে তাকানো উচিত।’’ 

মোদী বলেছেন, ‘‘…পরিবারতন্ত্রের রাজনীতি দেশের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ। তা সমূলে উপড়ে ফেলা প্রয়োজন। শুধুমাত্র পদবির জোরে ভোটে জেতার দিন শেষ হয়ে আসছে। কিন্তু তা বলে পরিবারতন্ত্র এখনও শেষ হয়নি।’’ সঙ্গে জুড়ে দিয়েছেন, ‘‘অনেকের লক্ষ্য একটাই। পারিবারিক রাজনীতির পরম্পরা রক্ষা। তা শুধু গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধ করে না, দুর্বলও করে দেয়।’’ পরিবারতন্ত্র নিয়ে রাহুলকে বহু বার বিঁধেছেন মোদী। এখন বাংলায় ভোটের আগে বিজেপি যে ভাবে কোমর বেঁধে ‘ভাইপোর’ বিরুদ্ধে প্রচারে নেমেছে, সেই পরিস্থিতিতে বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে এই আক্রমণ। 

মোদীর দাবি, ‘‘সততা ও কাজই আজ রাজনীতির প্রথম শর্ত হয়ে উঠছে। এত দিন যাঁরা দুর্নীতিতে ডুবে ছিলেন, আজ সেটি তাঁদের বোঝা। বহু চেষ্টাতেও বেরোতে পারছেন না।’’

পাল্টা আক্রমণে বিজেপির (BJP) মধ্যেও পরিবারতন্ত্রের উদাহরণ তুলে ধরেছে তৃণমূল। দাবি, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুরের বাবা ছিলেন হিমাচল প্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। বাংলার দায়িত্বে থাকা বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজনাথ সিংহের ছেলেরা বিধায়ক। আর এক মন্ত্রী পীযূষ গয়ালের বাবা ছিলেন বিজেপির জাতীয় কোষাধ্যক্ষ। 

লোকসভায় কংগ্রেসের নেতা অধীর চৌধুরীর (Adhir Chowdhury) কটাক্ষ, “ভারতে গণতন্ত্রকে হত্যা করার ‘মডেলই’ ‘মোদী-মডেল’। গণতন্ত্রকে ব্যবহার করে ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকাকে কোথায় নিয়ে গিয়েছেন, তা পৃথিবী দেখেছে। দেখছে মোদী-মডেলও। তাকে এবং দেশের বিভিন্ন সমস্যা আড়াল করতে বার বার একটি পরিবারকে আক্রমণ করা হচ্ছে।” 

বিধানসভা ভোট এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে বার বার বাংলার মনীষীদের স্মরণ করছেন মোদী। তালিকায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বঙ্কিমচন্দ্র, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, ঋষি অরবিন্দের মতো ব্যক্তিত্ব। তাই বিবেকানন্দের জন্মদিবসে যে তিনি বাংলার মানুষকে বার্তা দেবেন, তা প্রত্যাশিত। কিন্তু স্বামীজির আদর্শের ব্যাখ্যায় পরিবারতন্ত্রকে টেনে আনার বিষয়টি আগেভাগে আঁচ করা যায়নি।রাজনৈতিক শিবিরের মতে, বাংলায় ভোটের আগে জাতীয়তাবাদী প্রচারের সঙ্গে স্বামীজিকে কৌশলে যুক্ত করতে চেয়েছেন মোদী। ‘রাষ্ট্রবাদ’ এবং ‘রাষ্ট্র নির্মাণ’ নিয়ে উল্লেখ করেছেন বিবেকানন্দের (Swami Vivekananda) বাণী। প্রধানমন্ত্রীর দাবি, “যুবশক্তি চাইলে সব করতে পারে।… করোনা মোকাবিলাতেও তা বোঝা গিয়েছে।’’

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Narendra Modi, #/Swami Vivekananda, #bjp, #tmc

আরো দেখুন