পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন ভ্যাকসিনের দাবী ডাক্তারদের, দিশাহারা কেন্দ্র
দু’দিন পরেই করোনা টিকাকরণ কর্মসূচি শুরু। কিন্তু তাতেও উদ্বেগ কাটছে না কেন্দ্রের। এতদিন টিকা না আসায় দুশ্চিন্তা ছিল। সেই পর্ব মিটতে না মিটতে দেখা দিয়েছে নতুন আশঙ্কা—পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার। প্রথম পর্বের সম্ভাব্য টিকাপ্রাপক স্বাস্থ্যকর্মীদের অনেকেই ভ্যাকসিন নিতে অনীহা প্রকাশ করায় দিশাহারা মোদি সরকার। তাই নাগরিকদের মধ্যে টিকা-শঙ্কা কাটাতে উদ্যোগ বাড়াচ্ছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক। কোভিশিল্ড (COVID Shield) এবং কোভ্যাকসিন (Covaxine) ১০০ শতাংশ নিরাপদ, এই মর্মেই প্রচার আরম্ভ হচ্ছে। মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, নেতিবাচক প্রভাব এড়াতে প্রথমে তরুণ-তরুণী এবং স্বাস্থ্যবান স্বাস্থ্যকর্মীদের ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। পাশাপাশি টিকা নেওয়ার বিষয়টিও বাধ্যতামূলক নয়, ঐচ্ছিক। এদিকে, টিকাকরণের পর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার আশঙ্কায় কলকাতা পুরসভার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে চিঠি পাঠিয়েছে কেএমসি ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন। চিঠিতে ভর্তি করিয়ে চিকিৎসা এবং ক্রিটিক্যাল কেয়ার পরিষেবাযুক্ত জায়গায় ভ্যাকসিন দেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে।
প্রথম দফায় তিন কোটি কোভিড-যোদ্ধাকে টিকা দেওয়া হবে। স্বাস্থ্যকর্মীদের পাশাপাশি পুলিস, সেনা, আধা সামরিক বাহিনী, পুরসভার সাফাই কর্মচারিরা তা পাবেন। এদের মধ্যে অনেকে গোড়াতেই ভ্যাকসিন (COVID19 Vaccine) নিতে চাইছেন না। কলকাতা তো বটেই, এমনকী দিল্লির এইমস, রাম মনোহর লোহিয়া, এলএনজিপির মতো সরকারি স্বাস্থ্যপ্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চিকিৎসক, নার্সদের একাংশ বলছেন, ‘সুস্থ আছি। ভ্যাকসিনের প্রয়োজন নেই। অন্যরা নিক। কী হয় দেখে তবে ভাবব।’ ট্রায়াল শেষ না হওয়া কোভ্যাকসিন নিয়েও সন্দেহ অনেকের। দেশের প্রায় প্রতিটি রাজ্য থেকেই এ ধরনের অনীহার খবর স্বাস্থ্যমন্ত্রকে এসে পৌঁছেছে।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, টিকাকরণ কর্মসূচিতে কোনও ব্যক্তিই নিজের ইচ্ছামতো নির্দিষ্ট সংস্থার ভ্যাকসিন বেছে নিতে পারবেন না। রাজ্যগুলিও নির্দিষ্ট কোনও কোম্পানির ভ্যাকসিন পাবে না। কেন্দ্রের কোভিড মোকাবিলা কমিটির চেয়ারম্যান ডাঃ বিনোদ কুমার পল বলেছেন, ‘সামান্য জ্বর, ব্যথা হলেও দু’টি ভ্যাকসিনেরই তেমন কোনও বিপদজনক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।’
এই পরিস্থিতিতে বাংলার স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য কিছুটা হলেও স্বস্তির খবর মিলেছে। স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে খবর, ভ্যাকসিন অ্যাডভার্স এফেক্ট রিপোর্টিং নথিভুক্তকরণ ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের ব্যাপারে দেশের ন’টি বড় রাজ্যের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেছে বাংলা। বিজেপি ও এনডিএ শাসিত গুজরাত, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, বিহার, কর্ণাটক, তামিলনাড়ু এবং কংগ্রেস শাসিত মহারাষ্ট্র-রাজস্থানকে পিছনে ফেলে এব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গ সর্বোচ্চ (৬৯) নম্বর পেয়েছে। জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের মিশন ডিরেক্টর ও স্বাস্থ্যমন্ত্রকের অতিরিক্ত সচিব বন্দনা গুরনানি চিঠি লিখে এ রাজ্যের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।