দেশ বিভাগে ফিরে যান

দিল্লির সীমানায় কৃষি আইনের কপি পোড়াল কৃষকরা

January 14, 2021 | 2 min read

‘কৃষি আইন মানি না। সরকার যেন বিক্ষোভের (Farmers Protest) আগুনে ঘৃতাহুতি না দেয়।’ দিল্লি সংলগ্ন সীমানাগুলিতে বুধবার এই হুঙ্কারই দিয়েছেন বিক্ষোভরত কৃষকরা। শুধুমাত্র হুঙ্কার দেওয়াই নয়। নজিরবিহীনভাবে এদিন দিল্লি সংলগ্ন সীমানাগুলিতে পোড়ানো হয়েছে কৃষি আইনের কপি। যতক্ষণ ধরে আইনের কপি পুড়েছে, ততক্ষণ পর্যন্ত তীব্র উল্লাসে কোনও না কোনও বাদ্যযন্ত্র বাজিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। গান গেয়েছেন। এমনকী বাজানো হয়েছে থালাও। বিতর্কিত তিনটি কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে বুধবারও কনকনে ঠান্ডায় বিভিন্ন সীমানায় জামা খুলে প্রতিবাদ করেছেন বিক্ষোভরত কৃষকরা। কেন্দ্রকে হুঁশিয়ারি দিয়ে তাঁরা বলেছেন, ‘আমরা এখানে কোনও উৎসব পালন করতে আসিনি। কেন্দ্রীয় সরকার যেন আমাদের জেদের পরীক্ষা নিতে না আসে।’

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার তিনটি কৃষি আইন (Farm Laws) কার্যকরের উপর সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশের খবর পাওয়ার পরেই আন্দোলনরত কৃষকরা জানিয়ে দিয়েছিলেন, আইন প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুসারেই আন্দোলন চলবে। সেইমতোই বুধবার ‘লোহরি’র দিন কৃষি আইনের কপি পুড়িয়ে কেন্দ্র-বিরোধী বিক্ষোভে শামিল হয়েছিলেন কৃষকরা।

গত ২৬ নভেম্বর থেকে কৃষকদের ‘দিল্লি চলো’ অভিযান কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে যে আন্দোলনের সূত্রপাত, বিগত দেড় মাসে তা অনেক শক্তিশালী হয়েছে। নিজেদের অবস্থান থেকে কৃষকদের একবিন্দুও সরাতে না পেরে কেন্দ্র যেমন অস্বস্তিতে রয়েছে, তেমনই সরকারের উদ্বেগও প্রতিদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। কৃষক আন্দোলনের জেরে কার্যত এপিসেন্টারে পরিণত হয়েছে দিল্লি-হরিয়ানার সিংঘু ও তিক্রি সীমানা। প্রতিদিন আন্দোলনকারীর সংখ্যা বাড়ছে দিল্লি-উত্তরপ্রদেশের গাজিপুর সীমানায় এবং রাজস্থান-হরিয়ানা সীমানার শাহজাহানপুরে। ‘লোহরি’তে কৃষি আইনের কপি পুড়িয়ে বিক্ষোভের জন্য কৃষকরা তাই মূলত বেছে নিয়েছিলেন এই সীমানাগুলিকেই। আগে থেকে জোগাড় করে রাখা জ্বালানি কাঠ জড়ো করে তাতে অগ্নি সংযোগ করা হয়েছে। এরপর সেই অগ্নিকুণ্ডকে গোল করে ঘিরে দাঁড়িয়ে কৃষি আইনের কপি পুড়িয়েছেন কৃষকরা। সিংঘু, তিক্রি সহ সব সীমানার বিক্ষোভস্থলে আওয়াজ উঠেছে, ‘জয় কিষান’ কিংবা ‘কিষান একতা জিন্দাবাদ’। সারা ভারত কিষান সংঘর্ষ সমন্বয় কমিটি দাবি করেছে, ‘দিল্লির সীমানা এলাকাগুলি ছাড়াও সারা দেশের ২০ হাজারের বেশি স্থানে জড়ো হয়ে কৃষি আইনের কপি পুড়িয়েছেন কৃষকরা।’

এরই পাশাপাশি ভারতীয় কিষান ইউনিয়নের (Indian Farmers Union) পক্ষ থেকে কেন্দ্রকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে বলা হয়েছে, ‘যদি বিক্ষোভস্থলগুলিতে বসে কেউ দেশবিরোধী কার্যকলাপে যুক্ত থাকে, সরকার তাকে গ্রেপ্তার করে দেখাক। সরকার তা পারবে না, কারণ কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে শামিল হয়েছেন দেশের গরিব কৃষকরা। এখানে কোনও রাষ্ট্রদ্রোহী বসে নেই। সরকার বরং ভেবে দেখুক, কোন পদ্ধতিতে কৃষি আইন বাতিল করা হবে।’ পাশাপাশি ওই কিষান ইউনিয়নের হুঁশিয়ারি, ‘সরকার ১০ বছরের পুরনো ট্রাক্টরের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে। কিষান গণতন্ত্র প্যারেডে ১০ বছরের পুরনো ট্রাক্টর নিয়েই মিছিল করা হবে দিল্লির রাস্তায়।’

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Farmers' protest, #Indian Farmers Union, #Farm Laws

আরো দেখুন