বিজেপি বিধায়কের তফসিলি শংসাপত্র নিয়ে বিতর্ক
বিজেপিতে সদ্য যোগ দেওয়া গাজোলের বিধায়ক দীপালি বিশ্বাসের (Dipali Biswas) জাতিগত শংসাপত্র নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। সম্প্রতি এব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জমা পড়ে। সেখানে দীপালিদেবী সহ আরও বেশ কয়েকজন জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে দাখিল করা শংসাপত্রের বৈধতা নিয়ে অভিযোগ তোলা হয়েছে। ঘটনায় কমিশনের তরফে সংশ্লিষ্ট জেলার নির্বাচনী আধিকারিক তথা জেলাশাসকদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি দ্রুত ঘটনার তদন্ত করে কমিশনকে সবিস্তারে জানানোর জন্য জেলাশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
মালদহের (Malda) জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র বলেন, গাজোলের বিধায়কের জাতিগত শংসাপত্রের ব্যাপারে তদন্ত করার জন্য নির্বাচন কমিশন নির্দেশ দিয়েছে। তদন্ত করে কমিশনকে রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে। দীপালিদেবী বলেন, আমি নমঃশুদ্র সম্প্রদায়ভুক্ত। সেইসূত্রে দীর্ঘদিন ধরেই আমার কাছে তফসিলি জাতির শংসাপত্র রয়েছে। জেলা প্রশাসন বা নির্বাচন কমিশনের তরফে আমাকে এখনও কিছু জানানো হয়নি। কেউ ষড়যন্ত্র করে অভিযোগ তুলতেই পারে। আমি যে কোনও তদন্তের মুখোমুখি হতে প্রস্তুত। তদন্ত হলেই সব পরিষ্কার হয়ে যাবে। মালদহ জেলা তৃণমূলের (Trinamool) কোঅর্ডিনেটর দুলাল সরকার (বাবলা) বলেন, আমি নিজেও তফসিলি জাতিভুক্ত। এর আগে সংরক্ষিত বিধানসভা ক্ষেত্রে আমি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছি। তারজন্য জাতিগত শংসাপত্র দাখিল করতে হয়েছিল। এই বিষয়টিতে স্বচ্ছতা থাকা প্রয়োজন। দীপালিদেবীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগেরও নিষ্পত্তি হওয়া দরকার । কমিশন তথা প্রশাসনের তদন্তে কী উঠে আসে সেদিকে আমরাও তাকিয়ে রয়েছি। এ ব্যাপারে বিজেপির জেলা সভাপতি গোবিন্দ মণ্ডল বলেন, আমি বিষয়টি নিয়ে দীপালিদেবীর সঙ্গে কথা বলব। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৬ ডিসেম্বর ‘বঙ্গীয় শিডিউলড্ কাস্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’ নামে একটি সংগঠনের লেটার হেডে মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের কাছে অভিযোগ জমা পড়ে। তাতে এক সংসদ সদস্য এবং ১৪ জনের জাতিগত প্রমাণপত্র নিয়ে অভিযোগ তোলা হয়। ওই ১৫ জন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত আসনে গত বিধানসভা ও লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন।
একসঙ্গে এতজন জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠায় বিষয়টিকে নির্বাচন কমিশন যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে। ১৬ জানুয়ারি নির্বাচন কমিশনের এক কর্তা রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে চিঠি দেন। ওই চিঠির সঙ্গে অভিযোগপত্রটি জুড়ে দেওয়া হয়। অভিযোগের তদন্ত করে ২৫ জানুয়ারির মধ্যে কমিশনের কাছে রিপোর্ট পাঠানোর জন্য বলা হয়। ওইদিনই রাজ্যের উপ মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক জেলায় জেলায় চিঠি পাঠিয়ে দেন। হাওড়া, মালদহ, নদীয়া, হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, আলিপুরদুয়ার, পূর্ব বর্ধমান ও পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসকদের চিঠি দিয়ে তদন্ত শুরু করতে বলেন। ২২ জানুয়ারির মধ্যে রাজ্য নির্বাচন দপ্তরে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে গাজোল কেন্দ্রে বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থী হিসেবে দীপালিদেবী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তিনি সিপিএমের প্রতীকে জয়লাভ করার পর তৃণমূলে যোগ দেন। দীর্ঘদিন তিনি ঘাসফুল শিবিরে ছিলেন। গত ১৯ ডিসেম্বর দীপালিদেবী ফের শিবির বদল করেন। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে (BJP) যোগদান করেন তিনি।