রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

অমর্ত্য সেনকে ‘পরিযায়ী’ বলে আক্রমণ বিশ্বভারতীর উপাচার্যের

January 20, 2021 | 2 min read

শান্তিনিকেতনের জমি বিতর্ক এবার ব্যক্তিগত আক্রমণের স্তরে পৌঁছে গেল! জমি বিতর্কের মধ্যে অমর্ত্য সেনকে ‘পরিযায়ী’ বলে বিঁধলেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য। উপাচার্যকে ই-মেল করে অভিযোগ প্রত্যাহারের দাবি জানালেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ। উপাচার্যের মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছে তৃণমূল। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ সম্পর্কে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী এই বিতর্কিত মন্তব্য করলেন। সম্প্রতি একটি মহল থেকে দাবি করা হয়, অমর্ত্য সেনের বাড়ি প্রতীচীর কিছুটা অংশ বিশ্বভারতীর এক্তিয়ারভুক্ত।

জমি বিতর্কে আইনি ব্যবস্থার কথা আগেই এবিপি আনন্দকে জানিয়েছিলেন অমর্ত্য সেন (Amartya Sen)। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের বলেছিলেন, ‘‘ওদের যদি সত্যিই কোনও অভিযোগ থাকে তাহলে আমাকে চিঠি লিখবেন, এই জমির এই এই মাপ আপনি কী করে জানলেন? তাঁর অফিস থেকে বলা হচ্ছে, বাড়িটায় কিছু গন্ডগোল আছে…কী করে আবিষ্কার করলেন? প্রমাণ কী? আপনাদের কাছে কি কাগজ আছে?’’

জমি বিতর্কে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ আইনি নোটিসও পাঠান নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদকে। সোমবার বিশ্বভারতীর উপাচার্যকে ই-মেল করে অভিযোগ প্রত্যাহারের দাবি জানান অমর্ত্য সেন। তবে এই ই-মেল নিয়ে সন্দেহপ্রকাশ করেছেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘‘মেলে ওনার সই নেই, তবু আমরা আইনি পথেই ব্যবস্থা নেব,আমার তরফে কখনই অসম্মানের প্রচেষ্টা হয়নি, কেন মিডিয়া-সার্কাসে জড়িয়ে পড়ছেন! ’’

জমি বিতর্কের মধ্যেই অমর্ত্য সেনকে ‘পরিযায়ী’ বলে বিঁধলেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য!

অমর্ত্য সেনের জন্ম ১৯৩৩ সালে শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী ক্যাম্পাসে। দাদু ক্ষিতিমোহন সেন ছিলেন সংস্কৃতের শিক্ষক। মা অমিতা দেবী ছিলেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্নেহধন্য। অমর্ত্য নামকরণ কবিরই দেওয়া। এহেন ব্যক্তিই কখনও বর্তমান বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিশানায়, আবার কখনও বিজেপির আক্রমণের মুখে। এদিন ফের বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ বুঝিয়ে দিয়েছে, যে জমি বেদখল করা হয়েছে বলে অভিযোগ, তারা তা ফেরাবেই। বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী জানান, ‘‘ আমাদের ১১৩৮ একর জমির মধ্যে ৭৭ একর কব্জা, অনেক বড় মাপের মানুষ তাতে রয়েছেন, রাজ্য সাহায্য করলে জমি উদ্ধার করতে পারব, অধ্যাপক সেন এটা সমর্থন করবেন বলে মনে করি ৷ ’’ ওদিকে বীরভূমের তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল জানান, ‘‘ বিশ্বভারতীতে বহু মানুষ জমি দিয়েছেন, তাঁরা যদি জমি চাইতে আসেন তাহলে আমরা পাশে থাকব, যদিও বিদ্যুৎ চক্রবর্তী ভিসি পদে থাকেন সেক্ষেত্রে ৷’’

জমি বিতর্কে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও একাধিবার আক্রমণ করেন অমর্ত্য সেনকে। যদিও পাশে থাকার বার্তা দিয়ে নোবেলজয়ীকে চিঠি লেখেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একুশের ভোটের আগে অমর্ত্য সেনের জমি বিতর্কের জল তাই অনেকটাই গড়াল।

সম্প্রতি বোলপুরে বিশ্বভারতীর উপাচার্যের বিরুদ্ধে বিজেপির হয়ে কাজ করার অভিযোগে সরব হয় তৃণমূল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একসময়ে জানিয়েছিলেন, ‘‘বিশ্বভারতী কি আর কোনও উপাচার্য খুঁজে পায়নি? আমার তাঁর প্রতি কোনও ব্যক্তিগত রাগ নেই, কিন্তু আপনারাই বলুন না, খুঁজে, দেখে দেখে নিয়ে আসতে হয়েছে বিজেপির স্ট্যাম্প মারা এক জনকে!’’

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Amartya Sen, #Visva-Bharati University

আরো দেখুন