সারনা ধর্মকে স্বীকৃতির দাবিকে সমর্থন মুখ্যমন্ত্রীর
সারনা ধর্মকে আলাদা স্বীকৃতির দাবি দীর্ঘদিনের। আদিবাসীদের সেই দাবির সঙ্গে সহমত পোষণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। মঙ্গলবার পুরুলিয়ার হুটমুড়ার জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সারি ও সারনা ধর্মকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়ে আদিবাসীরা আমাকে চিঠি দিয়ে আবেদন করেছিলেন। রাজ্যের মুখ্যসচিব এবিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে ইতিমধ্যে চিঠি দিয়েছেন। আমরা চাই, সারনা ও সারি ধর্মকে জনগণনায় মর্যাদা দেওয়া হোক। এদিনের সভা থেকে পুরুলিয়ার বাসিন্দাদের জন্য রাজ্য সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মসূচির খতিয়ানও তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী।
রুখাশুখা জেলা পুরুলিয়া। এখানে জলের সমস্যার কথা তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, পুরুলিয়ায় জলের একটা সমস্যা আছে, সেটা আমি জানি। জাপানের জাইকা এখানে কাজ করবে। ওরা দেরি করছে। জাইকাতে ১৩০০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। তবে আমরা বিকল্পও ভেবে রেখেছি।
লকডাউনে (LockDown) ভিন রাজ্যে কাজ হারিয়ে বহু বাসিন্দা পুরুলিয়ায় ফিরে এসেছিলেন। তাঁদের এই জেলাতেই কাজের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তৃণমূল সুপ্রিমো সেই প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, প্রায় ১৯ হাজার পরিযায়ী শ্রমিক কাজ পেয়েছেন। জেলায় ১০০ শতাংশ বৈদ্যুতিকরণ করা হয়েছে। জেলায় ৩৫ হাজার স্বনির্ভর দল সুবিধা পেয়েছে। ২৬টি কর্মতীর্থ তৈরি করা হয়েছে। জেলায় শিল্পও তৈরি হচ্ছে। অনেকে বলছে, কিছু হচ্ছে না। মিথ্যে প্রচারে বিভ্রান্ত হবেন না। ডানকুনি-অমৃতসর প্রকল্প রঘুনাথপুর পর্যন্ত চলে আসবে। সেখানে ফ্রেড করিডরে শিল্প তৈরি হবে। প্রচুর কর্মসংস্থান হবে। এছাড়াও জয়পুরের আঘরপুর মৌজায় ২২ একর জমিতে ইন্ডাস্ট্রিয়াল হাব তৈরি করা হচ্ছে।
এদিন সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুরে ডোম এবং কালিন্দি সম্প্রদায়ের মানুষ আছেন, যাঁরা লোকসঙ্গীতের সঙ্গে যুক্ত। তাঁদেরও আগামী দিনে লোকপ্রসার প্রকল্পের আওতায় এনে ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। তিনি আরও বলেন, ৩১৬ জন সাঁওতালি শিক্ষক এবং এক হাজারের বেশি পার্শ্বশিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে। পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ও মেদিনীপুরে কিছু বাকি আছে। এটা করার জন্য অর্ডার দেওয়া হয়েছে। নবম শ্রেণীর পড়ুয়ারা আগামী এক দেড় মাসের মধ্যে সবুজ সাথীর সাইকেল পেয়ে যাবে। আরও ২০ লক্ষ সাইকেল তৈরি করা হয়েছে। দ্বাদশ শ্রেণীর পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে আগামী দু’-একদিনের মধ্যে ১০ হাজার টাকা করে ঢুকে যাবে। তারা ওই টাকায় ট্যাব বা স্মার্ট ফোন কিনতে পারবে। পুরুলিয়ায় প্রায় ১২ হাজার ছেলে মেয়ে আছে যারা উচ্চমাধ্যমিক ও মাদ্রাসায় পড়ে। তারা প্রত্যেকে ওই টাকা পাবে। এদিনের সভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রাণিমিত্র, আশা থেকে আইসিডিএস সবাইকে সুবিধা দেওয়া হয়েছে। অযোধ্যা পাহাড়কে কেন্দ্র করে ট্যুরিজম সার্কিট গড়ে তোলা হয়েছে। পুরুলিয়া জেলায় কত সিনেমা ও সিরিয়ালের শ্যুটিং হচ্ছে।
পুরুলিয়ায় (Purulia) আরও প্রচুর সংখ্যক হোটেল তৈরি হোক। পুরুলিয়াতেই পর্যটনে বিনিয়োগ আসুক। তিনি আরও বলেন, পুরুলিয়ায় কুর্মি, মাহাত সম্প্রদায়ের মানুষজন কুড়মালি ভাষায় কথা বলেন। তাঁদের জন্য আলাদা বোর্ড তৈরি করা হয়েছে। মানভূম কালচারাল অ্যাকাডেমিও তৈরি করা হয়েছে। বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষের জন্য কাজ করছে রাজ্য সরকার। লোকসভায় ভুল বুঝিয়ে ভোট নিয়েছে বিজেপি। ভোটে জেতার পর আর সাংসদকে এলাকায় দেখা যায় না।