বিচ্ছিন্ন ঘটনাকে অতিরঞ্জিত করে অক্সিজেন পেতে চাইছে কোনঠাসা বিজেপি?
পাড়ায় পাড়ায় শিবির করে সরকারি পরিষেবা দেওয়ার জন্য নাম নথিভুক্ত করার কর্মসূচি নিয়েছে তৃণমূল সরকার। নাম ‘দুয়ারে সরকার’। কোনও নাগরিক পরিষেবা না পেলে ওই শিবিরে গিয়ে নাম নথিভুক্ত করছেন। রাজ্যজুড়ে চলছে দুয়ারে সরকার কর্মসূচির চতুর্থ পর্যায়। ইতিমধ্যেই এই কর্মসূচিতে ২ কোটি ২০ লক্ষর বেশি নাম নথিভুক্ত হয়েছে।
কন্যাশ্রী, রুপশ্রী, খাদ্যসাথী, ঐক্যশ্রী, শিক্ষাশ্রী, জয় জহর, তফসিলি বন্ধু, মানবিক-এর মতো প্রকল্প থাকলেও সাধারণ মানুষের সবচেয়ে বেশি আগ্রহ স্বাস্থ্যস্বাথী প্রকল্প নিয়ে। এই প্রকল্পেই সবচেয়ে বেশি মানুষ নাম লেখাচ্ছেন। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রোজ খবর আসছে কীভাবে স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের সাহায্যে বেসরকারি হাসপাতালে, এমনকি ভেলোরে সাধারণ মানুষ সহজেই চিকিৎসা করাতে পারছেন।
কামারহাটি পুরসভার আশাকর্মী তাপসী পণ্ডিতের শিকন্যার কিডনির অসুখ কিংবা উল্টোডাঙার বাসিন্দা গৌর সামন্তর শরীরে স্টেন্ট বসানো। সারেঙ্গার রামবিষ্ণু পণ্ডার ব্রেন অপারেশন, কিংবা সোমা বরের প্রসব। রীনা হালদার নামে এক ৬২ বছরের মহিলার টিউমার অস্ত্রোপচার অথবা আরামবাগের কৃষকের ভেলোর যাত্রার আগে কার্ড হাতে পাওয়া – স্বাস্থ্যসাথী সহায় হয়েছে সাধারণ মানুষের। এমনকি বিজেপির রাজ্য সভাপতির পরিবারও এই কার্ড করিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।
আর এতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছে গেরুয়া শিবির। দুয়ারে সরকারের ক্যাম্পগুলিতে উপচে পড়া ভিড় আর স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের সুবিধা পাওয়ার ফলে প্রমাদ গুনছেন বিজেপি নেতারা। গোপন সূত্রের খবর, সাম্প্রতিক সাংগঠনিক বৈঠকে শীর্ষ নেতারা বিজেপির রাজ্যের নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন দুয়ারে সরকার ও স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পগুলিকে বদনাম করতে। রাজ্যে কোনও প্রান্তে স্বাস্থ্য সাথীতে সুবিধা না পাওয়ার কোনওরকম ঘটনা ঘটলেই তা অতিরঞ্জিত করে প্রচার করতে বলা হয়েছে নেতাদের।
তৃণমূলও বিজেপির এই গেমপ্ল্যান সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। কিছুদিন আগে তৃণমূল ভবনে একটি সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা বলেছিলেন, এই বিরাট কর্মযজ্ঞে অনেকসময়ই খামতি থেকে যায়। কোথাও দীর্ঘ লাইন, কোথাও মানুষকে ফিরে যেতে হয়। একটা দুটো বিচ্ছিন্ন ঘটনাকে বিজেপি বড় করে দেখাতে চাইছে হোয়াটস্যাপ ও ভিডিওর মাধ্যমে। কিন্তু, এই প্রকল্পগুলির সফলতা আটকানো যাবে না।
এখন রাজ্যজুড়ে মানুষের মনে একটাই প্রশ্ন, তবে কি মেরুকরণ ও বিভাজনের রাজনীতি হার মেনে যাবে উন্নয়নের কাছে?