নারী নিরাপত্তায় শীর্ষে কলকাতা, স্বীকার কেন্দ্রের
কলকাতা গোটা দেশের মধ্যে সবচেয়ে নিরাপদ শহর। বুধবার এমনটাই জানানো হল সংসদীয় কমিটির বৈঠকে। এই দাবির বিন্দুমাত্র বিরোধিতা করেনি অমিত শাহের (Amit Shah) নেতৃত্বাধীন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকও। এদিনের বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিবের পেশ করা রিপোর্ট দেখে সন্তুষ্ট সংসদীয় কমিটি। স্বরাষ্ট্র সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান কংগ্রেসের আনন্দ শর্মা যখন কলকাতার ঢালাও প্রশংসা করছেন, বৈঠকে তখন উপস্থিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অফিসাররাও। তাঁরা কোনও মত প্রকাশ করেননি। বিশ্বস্ত সূত্রে খবর, কমিটির চেয়ারম্যান এদিন এও বলেছেন, সংস্কৃতি এবং শিক্ষায় ভারতকে পথ দেখিয়েছে বাংলা। আজও সেই ধারা অব্যাহত।
বাংলায় নারী নিরাপত্তা (Women Safety) সংক্রান্ত রিপোর্ট নিতেই দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়, স্বরাষ্ট্র সচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদি এবং রাজ্য পুলিসের ডিজি বীরেন্দ্রকে। এদিন নবান্নের পক্ষ থেকে ‘পিস টু প্রসপারিটি’ নামে ৪২ পাতার একটি রিপোর্ট পেশ করা হয়। রিপোর্ট দেখে রাজ্যের কাজের প্রশংসা করেছে কমিটি। পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি হরিয়ানার নারী ও শিশু নিরাপত্তা সংক্রান্ত রিপোর্ট তলব করা হয়েছিল। তাদের রিপোর্ট যথেষ্ট উদ্বেগজনক বলেই মত কমিটির। দেশের একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) নেতৃত্বাধীন পশ্চিমবঙ্গে নারীদের উপর অত্যাচার ক্রমশ কমছে বলেই রিপোর্ট সামনে এসেছে। অন্যদিকে বিজেপির মনোহরলাল খট্টরের মুখ্যমন্ত্রিত্বে হরিয়ানায় এমন ঘটনা ক্রমশ বাড়ছে বলেই পরিসংখ্যানে প্রকাশ। নারী নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে চার্জশিটের জাতীয় গড় ৬১ শতাংশ। বাংলায় তা ৯৪ শতাংশ। ধর্ষণের অপরাধের জাতীয় গড় ৪.৯ হলেও পশ্চিমবঙ্গে ২.২ শতাংশ। হরিয়ানায় এই হার ১০.০৮ শতাংশ। বাংলায় কড়া নাড়ছে বিধানসভার ভোট। তার আগে সংসদীয় কমিটি বৈঠকের এই আলোচনা তাৎপর্যপূর্ণ।
ঘণ্টা দুয়েকের বৈঠকে নীরজ শেখরের মতো কয়েকজন বিজেপি সাংসদ বাংলায় রাজনৈতিক সন্ত্রাসের অভিযোগ তোলেন। যা শুনেই প্রতিবাদ করে ওঠেন তৃণমূলের কাকলি ঘোষদস্তিদার। সূত্রের খবর, তিনি বিজেপির নাম না নিয়ে বলেন, শান্তিপূর্ণ বাংলায় একটি দলের যুব মোর্চা গোলমাল পাকাতে চাইছে। আবার পরে তারাই বলছে, রাজনৈতিক সন্ত্রাস হচ্ছে। এক মহিলা অভিনেত্রীকে কার্যত হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। যা নিয়ে বৈঠক কিছুটা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। তবে পরিস্থিতি সামাল দেন আনন্দ শর্মা এবং কমিটির সদস্য তৃণমূল সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদি। সূত্রের খবর, কড়া আইন থাকা সত্ত্বেও নারী নির্যাতনের ঘটনা কেন থামছে না, তা নিয়ে বিশেষ গবেষণার প্রস্তাব দেন দীনেশবাবু। পাশাপাশি তিনি সাইবার অপরাধ সংক্রান্ত সম্পূর্ণ পৃথক একটি মন্ত্রক গড়ারও দাবি জানান। সমর্থন করেন কমিটির চেয়ারম্যান। বৈঠকে উপস্থিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অফিসারদের বিষয়টি ‘নোট’ করতেও নির্দেশ দেওয়া হয়।