নতুন আমেরিকার উদয় হল, শপথ নিয়ে বললেন বাইডেন
অবশেষে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ হাজির। আমেরিকার ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন জো বাইডেন (Joe Biden)। ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে শপথ নিলেন কমলা হ্যারিস (Kamala Harris)।
বুধবার ক্যাপিটলে এই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান (Oath Taking Ceremony) ঘিরে ছিল সাজ সাজ রব। গোটা ওয়াশিংটন ছিল নিশ্চিদ্র নিরাপত্তার ঘেরাটোপে। বাইডেনের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে যেন চাঁদের হাট বসেছিল। অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও তাঁর স্ত্রী মিশেল। ছিলেন আরও এক প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টন এবং তাঁর স্ত্রী হিলারি-সহ আমেরিকার তাবড় তাবড় সব ব্যক্তিত্ব।
অনুষ্ঠানের সূচনা হয় লেডি গাগার গানের মাধ্যমে। তিনি আমেরিকার জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করেন। এর পরই শুরু হয় শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান। প্রথমে শপথ নেন কমলা হ্যারিস। তিনি পোডিয়ামে উঠতেই হাততালি আর উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে গোটা ক্যাপিটল। তাঁকে শপথ গ্রহণ করান আমেরিকার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সনিয়া সোতোমেয়র। এর পরই পপ গায়িকা জেনিফার লোপেজ তাঁর ‘আমেরিকা দ্য বিউটিফুল’ গান গেয়ে উপস্থিত অতিথিদের মন মাতান।
এর পরই প্রেসিডেন্ট (US President) পদে শপথ নেন জো বাইডেন। তাঁকে শপথবাক্য পাঠ করান সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি জন রবার্টস। শপথ নিয়ে বাইডেন বলেন, “আজ গণতন্ত্রের দিন। ইতিহাস এবং আশার দিন।” তিনি আরও বলেন, “এক নতুন আমেরিকার উদয় হল। নতুন চ্যালেঞ্জের সামনে দাঁড়াল আমেরিকা।”
এর পরই প্রেসিডেন্ট পদে শপথ নেন জো বাইডেন। তাঁকে শপথবাক্য পাঠ করান সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি জন রবার্টস। শপথ নিয়ে বাইডেন বলেন, “আজ গণতন্ত্রের দিন। ইতিহাস এবং আশার দিন।” তিনি আরও বলেন, “এক নতুন আমেরিকার উদয় হল। নতুন চ্যালেঞ্জের সামনে দাঁড়াল আমেরিকা।”
তিনি আমেরিকাবাসীদের জন্য। দেশের প্রতিটি মানুষের ইচ্ছাকে শোনা হবে। সম্মান জানানো হবে। এ ক্ষেত্রে কোনও খামতি থাকবে না বলে শপথ নিয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বাইডেন। তিনি বলেন, “আজ আমরা জয়কে উদযাপন করব। তবে প্রার্থী হিসেবে নয়। গণতন্ত্রের কারণে।” গণতন্ত্র অনেক মূল্যবান। পাশাপাশি ভঙ্গুরও। তবে গণতন্ত্রকে বজায় রাখতে তিনি বদ্ধপরিকর বলেও জানিয়েছেন বাইডেন।
এ দিন তাঁর পূর্বসূরিদেরও ধন্যবাদ জানিয়েছেন বাইডেন। তিনি বলেন, “দুই দলের সকল সদস্যকে অসংখ্য ধন্যবাদ। প্রেসিডেন্ট কার্টার যে ভাবে এ দেশের গণতন্ত্রকে মজবুত করার কাজ করে গিয়েছেন তা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। যে ভেবে দেশের জন্য কাজ করে গিয়েছেন তিনি তা অবিস্মরণীয়।” যে ভাবে করোনা গোটা দেশে তাণ্ডব চালাচ্ছে এ দিন সে প্রসঙ্গও তুলে ধরেন বাইডেন। আমেরিকা একটা কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তবে এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করার জন্য তিনি প্রস্তুত বলেও জানিয়েছেন নতুন প্রেসিডেন্ট।
দেশকে একত্রিত করার কাজ করে যাবেন। এবং এটাই যে তাঁর মূল লক্ষ্য সে ইঙ্গিতও দিয়েছেন বাইডেন। তিনি বলেন, “আমেরিকাকে আরও মজবুত করা, দেশের মানুষের মধ্যে একতা গড়ে তোলাই হবে আমার কাজ।” তিনি আরও বলেন, “জানি বিভাজনকারী শক্তি একটা বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু এটা নতুন কিছু নয়। আমাদের সমাজ এই বিভাজনকারী শক্তিগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে গিয়েছে। এবং যাচ্ছে।” এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বাইডেন সিভিল ওয়ার, দ্য গ্রেট ডিপ্রেসন এবং ২০১১-র হামলার বিষয়গুলি তুলে ধরেন।
যাঁরা তাঁকে সমর্থন করেননি, তাঁদের জন্যও তিনি লড়াই চালিয়ে যেতে চান বলেও আশ্বাস দিয়েছেন বাইডেন। তাঁর কথায়, “আমাদের অনেক ক্ষত মেরামতের প্রয়োজন আছে। অনেক কিছু গড়ার আছে। আমি চাই আমেরিকাবাসীরা সকলে এগিয়ে আসুক।”