রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

শ্যামাপ্রসাদকে নিয়ে বিজেপির দ্বিচারিতার ‘প্রতিবাদে’ সরব তাঁর পরিবার

January 22, 2021 | 2 min read

 ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে(SyamaPrasad Mookherjee) নিয়ে ভারতীয় জনতা পার্টির (BJP) দ্বিচারিতার ‘প্রতিবাদে’ সরব হয়েছেন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা তাঁর পরিবারের সদস্যরা। শুধু প্রতিবাদই নয়, শ্যামাপ্রসাদের নিজের হাতে স্থাপিত ‘জনসঙ্ঘ’কে নতুন করে গড়ছে তাঁর পরিবারের  সদস্যরা। আজ, শুক্রবার কলকাতা প্রেসক্লাবে শ্যামাপ্রসাদের নীতি-আদর্শকে সামনে রেখে আনুষ্ঠানিকভাবে পথচলা শুরু করবে নতুন রাজনৈতিক দল ‘ভারতীয় জনসঙ্ঘ পার্টি’ (BJSP)। গত ৮ জানুয়ারি নির্বাচন কমিশনের স্বীকৃতি পেয়েছে বিজেএসপি। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যের সিংহভাগ বিধানসভা আসনে লড়ার প্রস্তুতি নিয়েই তাঁরা মাঠে নামছেন বলে জানিয়েছেন বিজেএসপি’র রাজ্য সভাপতি সুব্রত মুখোপাধ্যায়(Subrata Mookherjee), সুব্রতবাবু শ্যামাপ্রসাদের বংশধর। ‘জ্বলন্ত প্রদীপ’— প্রতীক চিহ্ন হিসেবে চেয়ে ইতিমধ্যেই নির্বাচন কমিশনে আর্জি জানিয়েছে বিজেএসপি। চলতি মাসের মধ্যেই প্রতীক চিহ্ন সংক্রান্ত বিষয়টি চূড়ান্ত হবে বলে নতুন জনসঙ্ঘের তরফে দাবি করা হয়েছে। বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসুর বক্তব্য, শ্যামপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের এক মেয়ে আজীবন আমাদের দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাঁর পরিবার বলতে এখন কেউ নেই। এখন যদি কেউ দাবি করেন, তিনি ওই পরিবারের সদস্য, তাতে আমাদের কী করার আছে!
কেন প্রয়োজন পড়ল নতুন করে জনসঙ্ঘ গঠনের? সুব্রতবাবুর কথায়, ১৯৭৭ সালে জনসঙ্ঘ মিশে যায় জনতা পার্টির সঙ্গে। অবলুপ্তি ঘটে জনসঙ্ঘের। সেই জনসঙ্ঘেরই ‘গর্ভজাত’ বিজেপি। শ্যামাপ্রসাদের নীতি-আদর্শকে সামনে রেখেই পথচলা, এগিয়ে চলা বলে প্রতিনিয়ত বিজেপি’র তরফে দাবি করা হচ্ছে। অথচ সেই শ্যামাপ্রসাদের ‘মৃত্যু রহস্য’ উদ্ঘাটনে গেরুয়া শিবিরের কোনও ভ্রুক্ষেপই নেই বলে বিজেএসপি’র অভিযোগ। রাজনৈতিক পরিসংখ্যান বলছে, প্রথম এনডিএ সরকার গঠিত হওয়ার অনেক আগে থেকে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যু রহস্য উন্মোচন করার দাবি জানিয়ে সর্বভারতীয়স্তরে সরব হয়েছিল বিজেপি। কিন্তু অদ্ভূতভাবে এনডিএ’র  প্রথমপর্বের শাসনকালে (৯৮’এ ১৩দিন, ৯৯’ সালে ১৩ মাস এবং ২০০৪-০৯’এর পাঁচ বছর) তো বটেই, নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বর্তমান এনডিএ সরকারের আমলেও, সেই মৃত্যু রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য কখনও সরব হয়নি বিজেপি। যদিও মাঝের এই সময়ে গত ২০০৪ সালে বিজেপি’র তরফে দাবি করা হয়েছিল, শ্যামপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের রহস্য মৃত্যুর পিছনে রয়েছে ‘নেহরুর ষড়যন্ত্র’। কিন্তু দলীয়স্তরে এই বলাটুকুই সার! এর বাইরে  বর্তমান বিজেপি’র পূর্বপুরুষ শ্যামাপ্রসাদকে নিয়ে আর কোনও উচ্চবাচ্য নেই গেরুয়া শিবিরের তরফে। তবে এ রাজ্যের আসন্ন নির্বাচনের প্রাক্কালে ফের শ্যামাপ্রসাদকে সামনে এনে হিন্দুত্ববাদী রাজনীতিকে ‘চাগিয়ে’ তোলাই একমাত্র উদ্দেশ্য বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। 
শ্যামপ্রসাদকে নিয়ে বিজেপি’র এই আশ্চর্যরকমের ‘নীরবতা’কেই দ্বিচারিতা বলে অ্যাখ্যায়িত করছে বিজেএসপি। দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রতবাবুর কথায়, বিজেপি প্রথম থেকেই বলে আসছে শেখ আবদুল্লার সঙ্গে হাত মিলিয়ে নেহরু সরকারের রচিত ষড়যন্ত্রেই মৃত্যু হয়েছে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের। ১৯৫১ সালের ২২ জুন যখন শ্যামাপ্রসাদের মৃত্যু হয়, তখন নেহরু মন্ত্রিসভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদে ছিলেন সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল। শ্যামাপ্রসাদকে নিয়ে রচিত ষড়যন্ত্রের বিষয়ে বল্লভভাই জানতেন না, এমনটা হয় কী করে! যদি তাই হয়, হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে সেই বল্লভভাই প্যাটেলের মূর্তি স্থাপন করে বিজেপি কী প্রমাণ করতে চাইছে? ‘দ্বিচারিতা’ পর্বে এই বিষয়টিকেও সামনে রাখছে বিজেএসপি।   

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#bjp, #BJSP, #Subrata Mookherjee, #SyamaPrasad Mookherjee

আরো দেখুন