বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে চরম ক্ষুব্ধ অমিত শাহ
পাখির চোখ নাকি পশ্চিমবঙ্গ(West Bengal)! অথচ এ রাজ্যে ক্ষমতায় আসার নামগন্ধ মেলার আগেই তুমুল গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরবার বঙ্গ বিজেপি(Bengal BJP)। ইস্যু একটাই—দলবদলু। বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে ভোটনীতি চূড়ান্ত করে ফেলার কথা। অথচ, দলীয় নেতৃত্বের একটা বড় অংশই এই মুহূর্তে গোষ্ঠীকোন্দল সামাল দিতে জেরবার। বর্ধমান(Burdwan) ও আসানসোলে(Asansol) শুক্রবারের ঘটনা এই ইস্যুকে অন্য মাত্রা দিয়েছে। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে রাজ্য বিজেপির(BJP) রাজনৈতিক গ্রহণযোগ্যতা নিয়েই। যা আরও বিপাকে ফেলতে চলেছে বঙ্গ বিজেপিকে। দলীয় সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার বর্ধমান, আসানসোলে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকের সামনেই যেভাবে বঙ্গ বিজেপির নেতা-কর্মীদের একাংশ গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জড়িয়েছে, তাতে চরম ক্ষুব্ধ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ(Amit Shah)। আগামী ৩০ এবং ৩১ জানুয়ারি দু’দিনের বঙ্গ সফরে রাজ্যে যাচ্ছেন তিনি। সেই সফরে রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে কোর কমিটির বৈঠকেও বসার কথা রয়েছে তাঁর। বিজেপি সূত্রের খবর, দলের ক্রমশ বাড়তে থাকা গোষ্ঠীকোন্দলের ঘটনা নিয়ে এবার সরাসরি রাজ্য নেতৃত্বের কাছে কৈফিয়ৎ চাইতে পারেন অমিত শাহ। জানতে চাইতে পারেন, বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন যখন কার্যত দোরগোড়ায়, তখন বিজেপিতে বারবার অভ্যন্তরীণ কোন্দল হচ্ছে কেন? কেন সামলাতে পারছেন না বাংলার দলীয় নেতারা? গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামাল দিতে ঠিক কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে বঙ্গ বিজেপি?
রাজনৈতিক মহলের মতে, যে বিজেপি বাংলা দখলের দাবি করছে, সেই দলের জন্য আজ গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামলানোই অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ। এবং তা বিলক্ষণ জানেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডারা। এই কারণেই বাংলার নেতাদের সঙ্গে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পরের পর বৈঠকে অন্যতম প্রধান এজেন্ডা হিসেবে উঠে আসছে দলের অন্দরের সংঘাত। দু’দিন আগেই বাংলায় দলের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন জে পি নাড্ডা। দলের তৃণমূল স্তরের রিপোর্টও জমা দিয়েছেন তাঁরা। সেই রিপোর্টে বঙ্গ পার্টিতে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিজেপির শীর্ষ সূত্রের খবর, উল্লিখিত রিপোর্ট ইতিমধ্যেই অমিত শাহের হাতে তুলে দিয়েছেন জে পি নাড্ডা। বিধানসভা নির্বাচনে বাংলায় অন্তত ২০০টি আসন জয়ের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করে দেওয়া অমিত শাহ তা পড়েও ফেলেছেন। আর এরপরেই সামনে এসেছে বর্ধমান, আসানসোলে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সামনে আদি ও নব্য বিজেপির কোন্দলের ঘটনা। ভোটের আগে যে ঘটনাকে মোটেও ভালোভাবে দেখছে না বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের এক নেতা জানিয়েছেন, ‘বিজেপির পরিবার বড় হচ্ছে। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে মতের অমিল হতেই পারে। কিন্তু সীমা ছাড়িয়ে গেলেই সমস্যায় পড়তে হবে দলকে।’