টিটাগড়ে তৃণমূল কর্মী খুন, উত্তেজনা
ফের শ্যুটআউট। এবার ভর সন্ধ্যায় বাড়িতে ঢুকে এক তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) কর্মীকে গুলি করে খুন করল দুষ্কৃতীরা। শনিবার সন্ধ্যায় এই নৃশংস খুনের ঘটনাটি ঘটেছে টিটাগড় থানার গোয়ালপাড়া এলাকায়। ঘটনার পরই খোদ বারাকপুরের পুলিস কমিশনার তদন্তে যান। তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বও মৃতের বাড়িতে পৌঁছয়। পুলিস জানিয়েছে, মৃতের নাম গুমানি খান (৪২)। টিটাগড়ের (Titagarh) গোয়ালপাড়াতেই তাঁর বাড়ি। এই খুনের ঘটনায় গোটা এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিস।
পুলিস ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, টিটাগড়ের গোয়ালপাড়া এলাকাটি বারাকপুর পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত। গুমানি খান এলাকায় তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তিনি তৃণমূলের স্থানীয় ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটরের সঙ্গেই বেশিরভাগ সময় থাকতেন। পেশায় বড় রাজমিস্ত্রি ছিলেন। নিজে কাজ করতেন। আবার ঠিকাদারিও করতেন। এদিন সন্ধ্যায় কাজ থেকে ফিরে তিনি বাড়িতেই ছিলেন। সেই সময় তাঁর বড় মেয়ে এবং তাঁর ছোট মেয়ে বাড়ির নীচেই একটি দোকানে গিয়েছিল। তারা কেনা কাটার পর যখন বাড়ির কাছে আসে, তখন দোতলার ঘরে একটি গুলির আওয়াজ পায়। সঙ্গে সঙ্গে দু’জনেই দৌঁড়ে বাড়িতে ঢুকতে যায়।
সেই সময় দু’জন দুষ্কৃতী তাদের বাড়ি থেকে বের হচ্ছিল। দুই মেয়েকে সজোরে ধাক্কা দিয়ে তারা পালিয়ে যায়। দুই দুষ্কৃতীর মুখ ঢাকা ছিল না। তাঁর দুই মেয়ে বাড়ির ভিতরে ঢুকে দেখে, রক্তাক্ত অবস্থায় বাড়ির মেঝেতে বাবার মৃতদেহ পড়ে রয়েছে। মাথা থেকে রক্ত গড়িয়ে গোটা মেঝে ভেসে যাচ্ছে। তারা কান্নায় ভেঙে পড়েন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁর বড় মেয়ে করিশ্মা তৃণমূল নেতৃত্বকে ফোন করে। খবর পেয়েই বারাকপুরের পুর প্রশাসক তৃণমূল কংগ্রেসের উত্তম দাস ও তৃণমূল নেতৃত্ব তাঁদের বাড়িতে যান। খুনের খবর পেয়ে বারাকপুরের পুলিস কমিশনার মনোজ ভার্মা নিজে ঘটনাস্থলে যান। জানা গিয়েছে, মৃতের গলায় একটি হলুদ রঙের ওড়নাও জড়ানো রয়েছে। গুলি করার আগে তাঁর গলায় ফাঁস লাগানো হয়েছিল কি না, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিস। পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকেই তাঁর মাথায় গুলি করা হয়েছে বলে পুলিসের অনুমান। মৃতের বড় মেয়ে করিশ্মা বলেন, একটি গুলির আওয়াজ পেয়েছি। যে দু’জন ধাক্কা দিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়েছে, তাদের দু’জনেরই মুখ খোলা ছিল। তবে, এর আগে তাদের দু’জনকে এলাকায় দেখিনি।
ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে পুলিস কমিশনার বলেন, মাথায় ক্ষত পাওয়া গিয়েছে। শুধু গুলি নাকি অন্যকিছু দিয়ে আঘাত করা হয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আমরা সমস্ত দিক খতিয়ে দেখছি। বারাকপুরের পুর প্রশাসক উত্তম দাস বলেন, আমরা সুভাষ উৎসবে ছিলাম। হঠাৎ গুমানির বড় মেয়ের ফোন পেয়ে এসে দেখলাম, নৃশংসভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। গুমানি আমাদের দলের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। রাজনৈতিক কারণেই তাঁকে এভাবে খুন করা হল। কারা খুন করেছে বলে অনুমান? উত্তরে তিনি বলেন, আমরা সেটা দেখছি। পুলিসকে বলেছি, খুনিদের অবিলম্বে চিহ্নিত করতে হবে। এবং তাদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।