রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

কেন্দ্রের উদাসীনতায় থমকে একাধিক মেট্রো প্রকল্প

January 26, 2021 | 2 min read

রেলমন্ত্রী থাকাকালীন শহরে একাধিক মেট্রো প্রকল্পের (Metro project) উদ্বোধন করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। কিন্তু এক দশকের বেশি সময় কেটে গেলেও কেন্দ্রীয় বঞ্চনা এবং অপ্রতুল বাজেট বরাদ্দের জেরে তার অধিকাংশই মাঝপথে থমকে রয়েছে। উন্নততর পরিবহণের এই মাধ্যম রাজনীতির জাঁতাকলে অথই জলে পড়েছে। রাজনীতিবিদদের খামখেয়ালিপনার খেসারত চোকাতে হচ্ছে আম জনতাকে। রেল(Indian Railway) সূত্রের খবর, এই মুহূর্তে বৃহত্তর কলকাতায় সাতটি মেট্রো প্রকল্পের কাজ চলছে। অনেক প্রকল্পে বরাদ্দ কম হওয়া নিয়ে রেলের আধিকারিকদের বক্তব্য, বহু ক্ষেত্রে জমি-জটে কাজ আটকে রয়েছে। তৃণমূল(TMC) সরকারের জমি নীতিকে দায়ী করছেন তাঁরা। সংশ্লিষ্ট মহলের ব্যাখ্যা, এখানে রাজ্য সরকার উন্নয়নের জন্য রেলের হাতে জমি তুলে দেয় না। জমি মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যা মেটাতে হয়। যার জেরে অযথা দেরি এবং জমির বাজারদর বেড়ে যায়। পাশাপাশি, অবৈধ দখলদারি মেট্রোর কাজে অগ্রগতির ক্ষেত্রে অন্যতম অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করছেন রেলকর্তারা। ফলে কাজে বিলম্ব হচ্ছে। রেলের দেওয়া গ্রাউন্ড রিপোর্টের ভিত্তিতেই বাজেট বরাদ্দ কমে যায় বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে প্রায় ৫ হাজার ১৩৩ কোটি টাকার জোকা-বিবাদি বাগ মেট্রো প্রকল্পের সূচনা হয়েছিল। মোট যাত্রাপথ ছিল ১৬.৭৫ কিলোমিটার। ২০১০ সালের ২২ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপতি প্রতিভা পাতিলকে(Pratibha Patil) দিয়ে এই প্রকল্পের সূচনা করিয়েছিলেন মমতা। প্রায় ১১ বছর হতে চলল এখনও জোকা-তারাতলায়(Joka Taratala) ৫০ জন অবৈধ দখলদারকে সরানো যায়নি। জোকা ডিপোর ১০ শতাংশ জমি অধিগ্রহণ এখনও অসম্পূর্ণ। এছাড়াও মাঝেরহাট ব্রিজ ভেঙে পড়া এবং একাধিক আইনি জটিলতায় এই প্রকল্প এখন ধুঁকছে। 
পরবর্তী প্রকল্প— নিউ গড়িয়া-দমদম এয়ারপোর্ট ৪ হাজার ২০০ কোটির এই প্রকল্প আটকে রয়েছে বাইপাসের উপর একাধিক জায়গায় অবৈধ দখলদারের জন্য। সঙ্গে জমি না পাওয়াটাও রয়েছে। ৩২ কিলোমিটার যাত্রাপথের একাধিক জায়গায় পিলার তৈরি নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে সংঘাত বেঁধেছিল রেলের। এই প্রকল্প নিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট ও বারাসত কোর্টে বেশ কিছু মামলাও রয়েছে বলে রেল সূত্রে জানা গিয়েছে।
বরানগর থেকে বারাকপুর প্রস্তাবিত প্রকল্প আদৌ দিনের আলো দেখবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ে খোদ রেল কর্তারাই। মেট্রোর রুট নিয়েও রাজ্য সরকারের সঙ্গে তীব্র মতানৈক্য রয়েছে রেলের। অভিযোগ, ত্রিপাক্ষিক চুক্তি অনুযায়ী বি টি রোডের উপর জল সরবরাহের দু’টি পাইপ লাইন বন্ধ করে নয়া লাইন তৈরির কথা ছিল রাজ্যের। কিন্তু তা এখনও বাস্তবায়িত হয়নি। বিকল্প পথে রেল নিজেই নতুন পাইপলাইন তৈরিতে সম্মত হলেও জমি নিয়ে জট রয়েই গিয়েছে। তবে, উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে নোয়াপাড়া-দক্ষিণেশ্বর মেট্রো প্রকল্পে। ৪৬৪ কোটি টাকার এই প্রকল্প বিলম্বিত হওয়ায় বাড়তি খরচ হয়েছে। একইসঙ্গে দ্রুত কাজ হচ্ছে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পে। 
সেন্ট্রাল পার্ক মেট্রো থেকে হলদিরাম পর্যন্ত প্রকল্পের ছাড়পত্র পেতে রেল বোর্ডে পাঠানো হয়েছে। সেখানে প্রকল্প ব্যয়ের ৫০ শতাংশ রাজ্য ও রেলের বহন করার কথা। কিন্তু নবান্ন পরিষ্কার জানিয়েছে, তারা এই খরচ দিতে পারবে না। ফলে এই রুটে মেট্রো চলবে কি না, জানেন না কেউই। এছাড়াও নোয়াপাড়া-বারাসত রুটের কাজ একাধিক ইস্যুতে বন্ধ ছিল। বর্তমানে ৫০ শতাংশ কাজ হয়ে গিয়েছে। তবে কাজ শেষ হতে আরও চার বছর লাগবে বলে মনে করা হচ্ছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#West Bengal, #Indian Railway, #Mamata Banerjee, #metro

আরো দেখুন