যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশিকা প্রশ্নপত্র ফাঁস অনলাইনে
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষার প্রশ্ন অনলাইনে ফাঁস হয়ে গেল। সোমবার সাংবাদিকতা এবং গণজ্ঞাপন বিভাগের স্নাতকোত্তর (Post Graduation) স্তরের প্রবেশিকা পরীক্ষা শুরুর পরেই দেখা যায়, সেই প্রশ্নপত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে যে কেউ দেখতে পাচ্ছেন। এর পরেই এ নিয়ে সাড়া পড়ে যায় বিশ্ববিদ্যালয় মহলে। পরীক্ষা আবার নেওয়া হবে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বেশ কিছু জটিলতা পেরিয়ে চলতি শিক্ষাবর্ষে এই বিভাগের স্নাতকোত্তর স্তরে ভর্তির জন্য অনলাইনে পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ দিন দুপুর ২টো থেকে ৩টে ওই পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। মাল্টিপল চয়েস প্রশ্নের (এমসিকিউ) মাধ্যমে এই পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে একটি লিঙ্ক দেওয়া হয়, যেখানে এমসিকিউ ধাঁচের ৫০টি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন রয়েছে। সেখানেই উত্তর দিতে হবে। অভিযোগ, ওই লিঙ্ক কোনও রকম পাসওয়ার্ড দিয়ে সুরক্ষিত ছিল না। ফলে ওই লিঙ্কে ক্লিক করলেই ওই প্রশ্নপত্র দেখতে পাওয়া গিয়েছে। ফলে এ দিন দুপুর থেকেই ওই প্রশ্ন অনলাইনে বেরিয়ে যায়।
পড়ুয়াদের প্রশ্ন, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের (Jadavpur University) মতো উচ্চমানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মেধার সঙ্গে এই আপস কী করে হতে পারে? পুরো বিষয়টি নিয়ে তদন্তের দাবি উঠেছে। এ দিন কলা বিভাগের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক শুভায়ন আচার্য চৌধুরী বলেন, ‘‘এমনিতেই করোনার কারণে এ বছর ভর্তি প্রক্রিয়া অনেক দেরিতে হচ্ছে। এর মধ্যে এমন ঘটনা। অবিলম্বে এই প্রবেশিকা পরীক্ষা বাতিল করে নতুন করে পরীক্ষা নিতে হবে। ছাত্র ভর্তিতে আর দেরি করা যাবে না। ভর্তির পরেই ক্লাস চালু করতে হবে।’’
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। তাঁরা সংশ্লিষ্ট বিভাগের কাছে রিপোর্ট চেয়েছেন। আপাতত এই পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হবে না বলেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘বিষয়টি খতিয়ে দেখে ঠিক করব, ওই প্রবেশিকা পরীক্ষা আবার নেওয়া হবে কি না।’’
এ বার সাংবাদিকতা ও গণজ্ঞাপন বিভাগে স্নাতকোত্তরের ভর্তিতে ছশো জনেরও বেশি আবেদন করেছেন। চলতি বছরে এই পাঠক্রমে ভর্তি নিয়ে শুরু থেকেই বিতর্কের সৃষ্টি হয়। স্নাতকোত্তরে ভর্তির ক্ষেত্রে শুধু সাংবাদিকতায় অনার্স ডিগ্রিধারীদের অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলেন কর্তৃপক্ষ। পরে ছাত্রছাত্রীদের বিরোধিতায় ইউজিসি-র নিয়ম অনুযায়ী সব বিষয়ে স্নাতক অনার্সের জন্য ভর্তি প্রক্রিয়া উন্মুক্ত করা হয়। ছাত্র আন্দোলনের জেরে পাঠক্রমের জন্য ফি-ও কমানো হয়। এই বিভাগে ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে গত বছরও একাধিক অস্বচ্ছতার অভিযোগ উঠেছিল। বিভাগ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তিদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। পড়ুয়াদের অভিযোগ, সে সময়ে এ নিয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানানো হলেও সেই কাজ এখনও এগোয়নি।