আসন্ন বাজেটে সেস-র মত অতিরিক্ত কর চাপাতে পারে মোদী সরকার – আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের
আগামী ১ ফেব্রুয়ারি চলতি ২০২১-২২ আর্থিক বছরের বাজেট পেশ করবেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন (Nirmala Sitharaman)। গত বছর করোনা ভাইরাস(Corona Virus) সংক্রমণের জেরে সরকারের খরচ বেড়েছে। তাই সেই অতিরিক্ত খরচ তুলতে আসন্ন বাজেটে কোভিড-১৯(COVID19) সেস বসানো নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেছে কেন্দ্রীয় সরকার(Central Govt)। জানা যাচ্ছে, এই বিষয়ে এখনও আলোচনা চলছে অর্থমন্ত্রকে(Finance Ministry)। ইতিমধ্যেই এই নিয়ে বৈঠকও হয়ে গিয়েছে একবার। তবে, এই বর্ধিত কর সেস হিসেবেই নেওয়া হবে কি না সেই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। কিন্তু কর দেওয়া মানুষজন চাইছেন এমন কোনও অতিরিক্ত কর না চাপানো হোক। তবে এই বিষয়ে বেশ গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রেখেছেন বিশেষজ্ঞ নিমিশ শাহ!
তিনি জানাচ্ছেন, আসন্ন বাজেটে গ্রোথ ও ফিসক্যাল ডিসিপ্লিন সব চেয়ে বেশি চর্চায় থাকবে। কিন্তু পরিস্থিতি অনুযায়ী, গ্রোথ সেই প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকবে। তবে, তাঁর মতে, বাজেট ২০২১-এ এই দুইয়ের একটা সমতা দেখতে পাওয়া যাবে। তবে, চলতি অর্থবর্ষে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে লিক্যুইডিটি সাপোর্ট দেওয়ার ফলে ফিসক্যাল স্লিপেজ অর্থাৎ যতটা খরচ হবে ভাবা হয়েছিল তাতে পরিবর্তন আসায় ফিসক্যাল ডেফিসিট কমে হতে পারে ৭.৫ শতাংশ। তবে, এটাই এখন দেখার যে এমন ভাবে বাজেট তৈরি করতে হবে যাতে ফিসক্যাল ডেফিসিট ২০২১ অর্থবর্ষে বাড়তে পারে। তাঁর মতে, এক্ষেত্রে অন্তত ৩.৫ শতাংশ বাড়ানোর লক্ষ্য রাখতে হবে।
নিমিশ শাহ এদিন বলছেন, কেন্দ্র ও রাজ্য মিলিয়ে ২০২১ অর্থবর্ষে ডেফিসিট অন্তত পক্ষে ১২ শতাংশ হওয়া উচিৎ। এদিকে ২০২০-২১ অর্থবর্ষে করোনার জেরে কম কর আদায়, কম জিএসটি হওয়ায় করের পরিমাণও ১৪ ও ১৭ শতাংশ পর্যন্ত কমতে পারে। তাঁর কথায়, আসন্ন বাজেটে কিছু বড় সংস্কারের প্রত্যাশা করা হচ্ছে। তবে, যদি কোনও বড় সংস্থার আসে, বাজারে তার প্রভাব শুধুমাত্র মানসিকভাবেই পড়বে কারণ অর্থনীতির লক্ষ্যমাত্রা বুঝতে সংস্কারটির বা সংস্কারগুলির কয়েক বছর সময় লাগতে পারে। এক্ষেত্রে কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্য পরিকাঠামোয় উন্নতি, আরও ভাল স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়া, স্বাস্থ্য বিমা, এমএসএমই-তে ক্রেডিট ফ্লো বাড়ানো ও গ্রোথ বাড়ানো, ভ্রমণ, অন্যান্য পরিষেবা, ঘর-বাড়ি বিশেষ করে হাউজিং ইত্যাদির দিকে জোর দেওয়া হতে পারে।
রাস্তাঘাট, বন্দর ও রেলপথের মতো ক্ষেত্রে ব্যয় বৃদ্ধির ফলে অর্থনৈতিক পুনর্জাগরণে সহায়তা হতে পারে এবং আশা করা যায়, এই জাতীয় ক্ষেত্রকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য পদক্ষেপও গ্রহণ করা হতে পারে। প্রতি বছরের মতো এবারও ইক্যুইটির উপর এলটিসিজি ট্যাক্স এবং লভ্যাংশ আয়ের উপর ট্যাক্স অপসারণ করা হবে, এমনটা আশা করা যায়। এবং এর পাশাপাশি অনেকেই বাজেটের দিকে তাকিয়ে আছেন এবং আশা করছেন, যে সেস বসানোর কথা চলছে, সেই সেস বা তেমন কোনও অতিরিক্ত কর চালু করা হবে না। তবে, এই বিশেষজ্ঞর মতে, এই বাজেটে সেস বসানোর আশঙ্কা প্রবল রয়েছে। তা কার্যকর হতে পারে বেশি আয়ের মানুষজনের উপরে।