যতই দাবী করুন, কেউ চেনেই না বৈশালীকে
বৈশালী ডালমিয়া (Baishali Dalmiya) কে? কী তাঁর পরিচয়? বালি কেন্দ্রের বিধায়ক? কিন্তু সক্রিয় রাজনীতি তো কোনওদিন করেননি তিনি। তাহলে কোন জাদুবলে নির্বাচনে লড়ে জিতলেন তিনি? সম্প্রতি ‘কাজ না করতে পারার’ যে অভিযোগ শোনা যাচ্ছে তাঁর মুখে, সেটিও বা কতটা ঠিক? তিনি কি নিজেকে বহিরাগত মনে করছেন?
আসুন জেনে নিই বৈশালী ডালমিয়ার পরিচয়।
প্রথম পরিচয়, উনি জগমোহন ডালমিয়ার মেয়ে। বিখ্যাত ক্রিকেট প্রশাসক জগমোহন ডালমিয়া যিনি বিসিসিআই থেকে আইসিসি পর্যন্ত সামলেছেন। বাংলার এক কৃতি সন্তান, জগমোহন বিশ্ব সামলেছেন কলকাতায় বসে। তাই, ‘বহিরাগত’ তত্ত্ব নিয়ে যে অযাচিত বিতর্ক বৈশালী তৈরি করতে চেয়েছেন, সেটা খাটে না জগমোহন বাবুর ক্ষেত্রে। তিনি সারা জীবন বাংলায় থেকেছেন, এখানে কাজ করেছেন এবং ক্রিকেটকে দিয়েছেন এক উন্নত পরিকাঠামো।
বৈশালীর আরেকটি পরিচয়ও আছে। যেটা অফিসিয়ালভাবে কোনও খবরের কাগজে লেখা না হলেও সকলের জানা। সেটা হল, তিনি সৌরভ গাঙ্গুলির ছোটবেলার বান্ধবী। আজও থেকে গেছে সেই বন্ধুত্ব (??)। কানাঘুষোয় শোনা যায়, সদ্য সমাপ্ত আইপিএল প্রতিযোগিতা চলাকালীন তিনি নাকি সৌরভ গাঙ্গুলির সাথে দুবাইতে ছিলেন। নিন্দুকেরা এমনটাও দাবি করেন যে অতীতে যখন সৌরভ গাঙ্গুলি ক্রিকেট খেলতেন, তখন তাঁর সাথে বিদেশ সফরেও বৈশালীকে দেখা গেছে।
বাকি রইল জনপ্রতিনিধির পরিচয়। ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনে তিনি বালি কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রতীকে লড়েছিলেন এবং নির্বাচিতও হয়েছিলেন। কিন্তু এর পেছনে কি বৈশালীর নিজস্ব কোনও কৃতিত্ব আছে? ওনার না আছে কোনও রাজনৈতিক ইতিহাস না নির্বাচনে লড়াইয়ের ইতিহাস। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) তাঁর পরলোকগত পিতার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তাঁকে এই টিকিট দেন। এরপর বিধায়ক হওয়ার পর প্রায় পাঁচ বছর কেটে গেলেও তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে যে তাঁকে নিজের কেন্দ্রে দেখাই যায় না। বিধানসভা এলাকার মানুষও তাঁকে কতটা চেনেন, সন্দেহ আছে।
বৈশালীকে বহিষ্কার করেছে তৃণমূল। আগামী দিনে হয়তো তিনি বিজেপিতে যোগ দেবেন। তবে, ইদানিং যে ওনাকে টিভিতে এত দেখা যাচ্ছে, তাতে কি উনি নিজেকে মস্ত বড় নেত্রী মনে করে বসেছেন? টিভিতে বসে কি রাজনীতি হয়? আগামী দিনে তিনি লড়ুন না বালি থেকে। নির্দল হিসেবেই লড়ুন। জিততে পারবেন তো? মমতার সমর্থন এবং তৃণমূলের প্রতীক ব্যাতিত ওনার আদৌ কি স্বকীয় পরিচয় আছে?