কেন্দ্রীয় সম্মান থেকে বঞ্চিত শহিদ রাজেশ, পরিবারে হতাশা
দিল্লিতে সাধারণতন্ত্র দিবসে(Republic Day) কেন্দ্রীয় সম্মান থেকে বঞ্চিত হলেন বীরভূমের(Birbhum) শহিদ জওয়ান রাজেশ ওরাং(Rajesh Orang)। শহিদের প্রতি এই বঞ্চনার জেরে হতাশ পরিবারের সদস্যরা। কেন্দ্র ওইদিন পাঁচ শহিদ জওয়ানের নামে বিশেষ সম্মান দিয়েছে। তারমধ্যে রাজেশ নেই। তবে, কেন্দ্র বঞ্চনা করলেও শহিদকে সম্মান জানাতে তাঁর নিজের গ্রামে সমাধির পাশে মূর্তি স্থাপন করেছে রাজ্য সরকার। সাধারণতন্ত্র দিবসে ওই মূর্তির উন্মোচন করা হয়।
শহিদ পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সাধারণতন্ত্র দিবসের একদিন আগে রাজেশের ব্যাটেলিয়ানের এক বন্ধু ফোনে জানান, সাধারণতন্ত্র দিবসের দিন সম্মানিত শহিদ জওয়ানদের তালিকায় রাজেশ ওরাংয়ের নাম নেই। সেটাই সত্যি হয়েছে। ২৬ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় সরকারের বিশেষ সম্মান পাননি বীরভূমের বেলগড়িয়া গ্রামের শহিদ রাজেশ ওরাং। যদিও রাজ্য সরকার প্রথম থেকে শহিদ পরিবারের পাশে থেকেছে বলেই দাবি রাজেশের পরিবারের লোকজনের। শহিদ পরিবারকে রাজ্য সরকারের(Govt of West Bengal) তরফে পাঁচ লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণ ও রাজেশের বোন শকুন্তলাকে(Shakuntala) চাকরি দেওয়া হয়। ২৭ জানুয়ারি সেই চাকরিতে যোগ দেন শকুন্তলা ওরাং। শহিদের সম্মানে বেলগড়িয়া(Belghoria) গ্রামের প্রবেশ পথে রাজেশ ওরাংয়ের সমাধির কাছে তাঁর একটি মূর্তি স্থাপন করে জেলা প্রশাসন। এছাড়া ওই গ্রামের মূল প্রবেশপথ থেকে একটি রাস্তা নতুন করে তৈরি করেছে জেলা প্রশাসন।
সাধারণতন্ত্র দিবসে একটি ছোট অনুষ্ঠানের মাধ্যমে রাজেশের আবক্ষ মূর্তির উদ্বোধন করা হয়। সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাঁইথিয়া বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক নীলাবতি সাহা, বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ অসিত মাল সহ অন্যান্যরা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সাধারণতন্ত্র দিবসের দিন সকালে রাজেশের পরিবারের তরফে তাঁর বাবা-মা ও বোন গ্রামে ছেলের সমাধির পাশে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। গ্রামবাসীরাও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। ওই অনুষ্ঠানের সময় রাজেশের পরিবার জানতে পারে কেন্দ্রীয় সরকারি সম্মান থেকে বঞ্চনার খবর। দিল্লিতে সাধারণতন্ত্র দিবসে গালওয়ানে শহিদ পাঁচ জওয়ানকে সম্মানিত করা হয়। তাঁরা হলেন নায়েব সুবেদার নুদুরাম সোরেন, হাবিলদার কে পালানি, হাবিলদার তেজিন্দার সিং, নায়েক দীপক সিং ও সিপাই গুর্তেজ সিং। এই ঘটনা শোনার পর মঞ্চেই চোখের জল আসে রাজেশের মা মমতা ওরাংয়ের। হতাশ হয়ে পড়েন বোন শকুন্তলা।
শকুন্তলা বলেন, আমরা প্রথমে শুনেছিলাম শহিদ ২০ জন জওয়ানকেই কেন্দ্রীয় সরকার সম্মানিত করবে। তা শোনার পর আমরা খুব গর্ব অনুভব করেছিলাম। বাবা-মা খুব খুশি হয়েছিলেন। কিন্তু যখন জানলাম, কুড়ি জন নয়, পাঁচজন শহিদ জওয়ানকে সম্মানিত করা হবে এবং সেই তালিকায় আমার দাদার নাম নেই, তখন আমাদের খুব খারাপ লেগেছে। সবাই তো যুদ্ধ করতে গিয়েই শহিদ হয়েছেন। যাঁরা সম্মানিত হয়েছেন তাঁদের জন্য গর্বিত আমরা। কিন্তু এই সম্মান ওইদিনের সকল শহিদ জওয়ানেরই প্রাপ্য ছিল। তবে রাজ্য সরকারের তরফে দাদার মূর্তি উদ্বোধন হওয়ায় আমরা খুব খুশি। ভারত সরকারের কাছে এমন বঞ্চনা আমরা আশা করিনি।