স্বাস্থ্যসাথীতে মানুষ পরিষেবা পাচ্ছেন, স্বীকার দিলীপের
শত বিরোধিতা থাকলেও রাজ্যের সাধারণ মানুষ স্বাস্থ্যসাথীর(Swasthya Sathi) সুবিধা পাচ্ছেন বলে স্বীকার করে নিলেন বিজেপির(BJP) রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ(Dilip Ghosh)। বুধবার শালবনীতে দলের এক কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন বিজেপির এই সংসদ সদস্য। প্রাথমিকভাবে স্বাস্থ্যসাথীর পরিষেবার কথা মেনে নিলেও বিরোধিতার খাতিরে তার ব্যাখ্যা দেন দিলীপবাবু। তবে খানিকটা ঘুরিয়ে। তিনি বলেন, বেশিরভাগ লোকই স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড পাননি। যাঁরা পেয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ৮০ শতাংশই এখনও সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করেননি। বাকি অংশ ছোটখাটো অসুখের জন্য কিছু সুবিধা পেয়েছেন। কিন্তু সকলেই আয়ুষ্মান ভারতের কার্ড নেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন।
দিলীপবাবু স্বাস্থ্যসাথী নিয়ে আর কোনও শব্দ খরচ করেননি। তাঁর পরিবারের লোকেরাই যে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করিয়েছেন, সেকথাও মুখে আনেননি। তবে রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, দিলীপবাবুর কথায় স্পষ্ট হয়েছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সরকারের দেওয়া স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের সুবিধা মানুষ পাচ্ছেন। এতদিন তিনি দাবি করে আসছিলেন, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড কোনও কাজে লাগবে না। ধাপ্পাবাজি। এই ধরনের নানা কথা বলেছেন। কিন্তু এদিন তিনি ঘুরিয়ে হলেও স্বীকার করছেন, স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে চিকিৎসা হচ্ছে। এই ঘটনার পরই শাসক দল পাল্টা কটাক্ষ করছে, দিলীপবাবুর অবস্থা অনেকটা চাঁদ সদাগরের মতো। বাঁ হাতে মা মনসাকে ফুল দেওয়ার মতো করেই এদিন তিনি মানতে বাধ্য হয়েছেন, স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে কিছু কাজ হচ্ছে। তবে স্বাস্থ্যসাথী নিয়ে বাড়তি বেফাঁস কিছু এড়িয়ে গেলেও গোষ্ঠীকোন্দলের জাঁতাকলে আটকে গিয়েছেন দিলীপবাবু। সাফাই দিয়ে বলেছেন, ‘বিজেপিতে কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই। অনেকে ভাবছেন, ঝগড়া-গণ্ডগোল হচ্ছে। ওসব কিছু নয়। আসলে বেশি ভিড় হওয়ার জন্য অতি উৎসাহে ঠেলাঠেলি হয়ে যাচ্ছে। দল ছোট ছিল। এখন দল বড় হচ্ছে। বহু লোক আসছে। এত লোককে মানিয়ে নিতে সময় লাগবে।
এদিন শালবনীর গোহালডিহি হাইস্কুলে দলের উদ্যোগে স্বাস্থ্যমেলার সূচনা করেন দিলীপবাবু। পরে খড়্গপুর স্টেশনে একটি উন্নতমানের যাত্রী প্রতীক্ষালয়, টিকিট কাউন্টার, প্ল্যাটফর্ম ও খেমাশুলি স্টেশনে প্ল্যাটফর্মের উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে খড়্গপুরের ডিআরএম মনোরঞ্জন প্রধানও উপস্থিত ছিলেন। বিকেলে ঝাড়গ্রামে দলের একটি সভায় বক্তব্য রাখেন দিলীপবাবু। সেখানে জামদা সার্কাস ময়দানে বিজেপির ‘যোগদান মেলা’য় দিলীপবাবু বলেন, ‘কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনাল হয়ে গিয়েছে। দিদিকে বলছি, ফাইনাল ম্যাচ বাকি আছে।’ তারপরও অবশ্য দিনভর চর্চায় দিলীপবাবুর শালবনীর দলীয় কর্মসূচি। সেখানে তিনি অভিযোগ করেছেন, ‘পুলিস দিয়ে ভয় দেখিয়ে বিজেপিকে আটকানোর চেষ্টা হচ্ছে। ভয়ঙ্কর পরিবেশ তৈরি হয়েছে। যে অবস্থা তৈরি হয়েছে, তাতে কেউ সুখী নয়। তাই শিক্ষকদের পথে নামতে হচ্ছে। সরকার আন্দোলন ঠেকাতে ব্যস্ত থাকায় উন্নয়ন হচ্ছে না।’ কিন্তু সত্যিই কি তাই? তাহলে মানুষ পরিষেবা পাচ্ছেন কী করে? এ বিষয়ে অবশ্য তাঁর তরফ থেকে কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি।