প্রযুক্তি বিভাগে ফিরে যান

ব্লকচেইন হতে পারে ভবিষ্যতের তথ্য নিরাপত্তার একটি হাতিয়ার

January 29, 2021 | 2 min read

Blockchain ব্যাপারটাকে অনেকেই Crypto Currency-এর সঙ্গে গুলিয়ে ফেলে। কিন্তু এটি হতে পারে ভবিষ্যতের অন্যতম তথ্য নিরাপত্তার একটি প্রযুক্তি। আমাদের বর্তমান অনলাইন সেবার ক্ষেত্রে এর কাঠামোটা যদি সহজ করে বলি, একজন ব্যবহারকারী তার Client Application (যেমন- ব্রাউজার দিয়ে ফেসবুক, মোবাইল app দিয়ে কোনো অনলাইন শপ থেকে পণ্য অর্ডার করা ইত্যাদি) থেকে Server-এ রিকোয়েস্ট পাঠায়, যা Server side Application দ্বারা Authenticate (User name & Password যাচাই করে) করে, তার রিকোয়েস্ট অনুসারে মূল Database-এ তার প্রয়োগ করা হয়।

যেহেতু এখানে Database-ই সব তথ্য সংরক্ষণের কাজ করে থাকে, তাই বলা চলে এটিই কেন্দ্রীয় তথ্য উৎস। বিষয়টা শুনতে সহজ হলেও বর্তমান সময়ে নিরাপত্তাব্যবস্থা যতটা কঠোর তাতে এসব System-এ ঢোকা এতটা সহজও নয়। কিন্তু কঠিন নিরাপত্তা থাকলেও কখনো কখনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেও থাকে। তাই তথ্য চুরি, বিকৃতি এমন ধরনের সমস্যার সমাধানে বিশ্বব্যাপী চলছে গবেষণা। যার ফলে আসছে নতুন নতুন ধারণা, প্রযুক্তি। তার মধ্যে একটি বহুল আলোচিত ও সম্ভাবনাময় প্রযুক্তির নাম Blockchain।

আমাদের দেশেও এ নিয়ে ব্যাপক পরীক্ষামূলক কাজ চলছে। কেউ কেউ ছোট প্রোটোটাইপ বানিয়েছে। তবে অধিকাংশ কাজই এখনো থিসিস পেপার পর্যায়ে। এটি একটি Private Blockchain Network, যা বড় বড় প্রতিষ্ঠান ও সরকারি সব প্রতিষ্ঠানের বিশেষ কাজে ব্যবহার করা সম্ভব। এই প্রযুক্তির বিশেষ দিক হলো, এটি ব্যবহারবিধি Client side-এ আমাদের নিয়মিত প্রযুক্তির মতো হলেও Server side-এ এটি বিশেষ এক Data Structure হিসেবে কাজ করে। যেখানে প্রচলিত Database ভিত্তিক প্রযুক্তির মূল Database -এর কোনোভাবে তথ্য বিকৃত করা হলে তার ওপর নির্ভরশীল সব মাধ্যম সেই বিকৃত তথ্যে বিভ্রান্ত হওয়ার ভয় থাকে, সেখানে ব্লকচেইন প্রযুক্তি সম্পূর্ণ বিষয়টিকে একটি ভিন্নভাবে সংরক্ষণ ও রক্ষা করার কৌশলের ওপর নির্ভর করে।

প্রচলিত প্রযুক্তির একটি Database-এ যদি কোনো হ্যাকার কোনো তথ্য পরিবর্তন বা বিকৃত করে, তা কর্তৃপক্ষের নজর এ আসার পর তাদের ঠিক করতে হয়, অথবা দীর্ঘমেয়াদি পদ্ধতিতে ব্যাকআপ ডকুমেন্ট থেকে তা আবার যাচাই করে নিতে হয়, যা যেকোনো বড় প্রতিষ্ঠান তাদের বিশালসংখ্যক গ্রাহকদের তথ্যের ব্যাপারে ভালোই অনিশ্চয়তায় থাকে, Blockchain এখানে সেই নিশ্চয়তাটি দিয়ে থাকে। কারণ permission based private Blockchain তার ডেভেলপমেন্ট বা সৃষ্টির শুরু থেকেই একটি বিশেষ স্ট্যান্ডার্ড ফলো করে গড়ে ওঠে। যেখানে digital signature থেকে শুরু করে private key-এর ব্যবহার নিশ্চিত করা হয়।

একই তথ্য তার প্রতিটি শাখায় সে রাখতে পারে। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো- এই নেটওয়ার্কে কেউ যেমন নিজের ইচ্ছায় ঢুকতে পারে না, তেমনি চাইলেই হঠাৎ নেটওয়ার্ক থেকে সরে যেতে পারবে না। ফলে এই নেটওয়ার্কে প্রবেশ করা Registered User চাইলেই কোনো অঘটন ঘটানোর প্রবণতা দেখিয়ে নিজেকে রোষানলে ফেলতে চাইবে না। পাশাপাশি যদি কোনোভাবে তথ্য বিকৃত করতেও সক্ষম হয়, এই প্রযুক্তি নিজেই হাজার হাজার তথ্যের মধ্যে বিকৃত তথ্যকে বের করে নিজেই তা শুধরে নেবে।

এটি মূলত সব তথ্যকে decentralized করে রাখে। যখনই কোনো ব্যবহারকারী তথ্যে কোনো পরিবর্তন ঘটায়, তা বিশেষ প্রক্রিয়ায় যাচাই করা হয় এবং তা সঙ্গে সঙ্গে ডাটাবেইসে অন্তর্ভুক্ত করে শেষ হয় না। তা একই সঙ্গে একটি নতুন information ব্লক হিসেবে রেকর্ড করা হয়। এভাবে যখন পর্যাপ্ত তথ্য পরিবর্তন বা তথ্য সংযোজন করা হয়, তখন একটি পরিপূর্ণ ব্লক তৈরি হয়। এভাবে প্রতিবার নতুন নতুন ব্লক তৈরি হয়ে যে একটি বিশেষ খতিয়ানের সারি তৈরি হয়, তার জন্যই এই প্রক্রিয়াটিকে ব্লকচেইন বলা হয়।  

এখানে প্রতিটি ব্লক একটি বিশেষ নিরাপত্তা কাঠামোতে গড়ে ওঠে। যার জন্য একটি স্বাভাবিক ডাটাবেইসে যেভাবে চাইলেই তথ্য পরিবর্তন বা বিকৃত করা যায়, ব্লকচেইনে তা করা যায় না। পাশাপাশি decentralized সব ডেটাবেস সব সময় আপডেটেড থাকে। তা যদি এই অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপার বা নির্মাতা স্বয়ং পরিবর্তন করে, তাতেও এই প্রযুক্তি নিজেই আবার তা ঠিক করে ফেলবে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#technews, #Blockchain

আরো দেখুন