বাড়ি গিয়ে সিপিএম নেতার মেয়ের স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করাল প্রশাসন
স্বাস্থ্যসাথী কার্ড(Swasthya Sathi Card) রাজনীতির ঊর্ধ্বে। রং বা দল না দেখে প্রতিটি মানুষের জন্য এই কার্ডের ব্যবস্থা করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) সরকার। বহু মানুষ এই কার্ড পেয়ে উপকৃত হচ্ছেন। এবার বাড়িতে গিয়ে সিপিএম(CPIM) নেতার অসুস্থ মেয়ের স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করে দিল প্রশাসন। বুধবার প্রশাসনের আধিকারিকরা সাঁতুড়ি ব্লকের রামচন্দ্রপুর (Ramchandrapur) গ্রামে যান। সেখানেই ছবি তুলে ১৫ মিনিটের মধ্যেই সিপিএম নেতা অজিত বাউরির হাতে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড তুলে দেওয়া হয়। প্রশাসনের এই কাজে খুশি ওই নেতার পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দারা। কার্ড হাতে নিয়ে মানবিক মুখ্যমন্ত্রীর ভূয়সী প্রশংসা করেছেন অজিতবাবু।
সাঁতুড়ি ব্লকের রামচন্দ্রপুর গ্রামের বাসিন্দা অজিতবাবু পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ ছিলেন। বর্তমান তিনি সিপিএমের সক্রিয় কর্মী। তাঁর মেয়ে জয়শ্রী বাউরি দীর্ঘদিন ধরেই গুরুতর অসুস্থ। বছর ২৫-র জয়শ্রী প্রায় ছ’বছর ধরে শয্যাশায়ী। টালির চালের ঘরে তাঁরা থাকেন। চাষবাস করে কোনওরকমে সংসার চালান অজিতবাবু। অসুস্থ মেয়েকে ভালো কোনও নার্সিংহোম বা নামী চিকিৎসককে দেখাবেন সেই সামর্থ্য তাঁর নেই। তাই মেয়ের উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনি ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরে যান। সেখানে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের জন্য আবেদন করেন।
এদিন কার্ড হাতে পাওয়ার পর অজিতবাবু বলেন, চাষ করে কোনওরকমে সংসার চলে। চার মেয়ে। দুই মেয়ের বিয়ে দিয়েছি। জয়শ্রী প্রায় ছ’বছর ধরে বাতজনিত সমস্যায় ভুগছে। আগে যদিও সামান্য চলা ফেরা করতে পারত বছর দুয়েক হল তাও পারে না। বাতের ব্যথায় পুরো শরীরটা অবশ হতে বসেছে। অনেক ছোটোখাটো চিকিৎসককে দেখিয়েছি। কিন্তু, কোনও কাজ হয়নি। আর্থিক অবস্থার কারণে ভালো কোনও নার্সিংহোম বা স্পেশালিস্ট চিকিৎসককে দেখাতে পারিনি। স্বাস্থ্যসাথীর সুবিধার কথা জানতে পেরেই দুয়ারে সরকার শিবিরে আবেদন করি। পরে কার্ড করানোর জন্য একটি ডেট দেওয়া হয়। কিন্তু, সেখানে মেয়েকে নিয়ে যাওয়া সম্ভব ছিল না। তাই বিষয়টি স্থানীয় কয়েকজন তৃণমূলের নেতাকে জানাই। তাঁরাই সব ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। বুধবার প্রশাসনের আধিকারিকরা বাড়িতে এসে কার্ড করে দিয়েছেন। এবার বিনামূল্যে মেয়ের চিকিৎসা করাতে পারব। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব ও প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই। আমাদের মতো মানুষদের কথা ভাবার জন্য মানবিক মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিরকৃতজ্ঞ থাকব।
বিষয়টি নিয়ে সাঁতুড়ি ব্লক তৃণমূল সভাপতি রামপ্রসাদ চক্রবর্তী বলেন, জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে রাজনীতির ঊর্ধ্বে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সকলের কথা ভাবেন। কোনও ভাঁওতাবাজি নয়। কে কোন দল করছে না দেখে সকলের বাড়িতে প্রকল্পের সুবিধা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। অজিতবাবুর অসুবিধার কথা শোনার পরই প্রশাসনকে জানানো হয়। প্রশাসনের কর্মীরা বাড়িতে গিয়ে ওই কার্ড করে দিয়েছেন।
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, দুয়ারে সরকার শিবিরে এখন পর্যন্ত ১০ হাজার ৬১৬ জন আবেদন করেছেন। তাঁদের মধ্যে ৬৯৪৪ জনকে কার্ড তুলে দেওয়া হয়েছে। সাঁতুড়ির জয়েন্ট বিডিও রাজেশ কুমার বলেন, শিবিরের মাধ্যমে কার্ড দেওয়া হচ্ছে। অজিতবাবুর অসুবিধার কথা জানতে পেরে বাড়িতে গিয়ে কার্ড তৈরি করে দেওয়া হয়েছে।