দক্ষিণবঙ্গ বিভাগে ফিরে যান

এবার বিষ্ণুপুরে দলবদলু নেতার নামে ভোটের ফেস্টুন, প্রকাশ্যে বিজেপির অন্তর্দ্বন্দ্ব

January 29, 2021 | 2 min read

তালডাংরার পর এবার বিষ্ণুপুরে দলবদলু শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের (Shyama Prasad Mukherjee) নামে টাঙানো হল ফেস্টুন। যা নিয়ে শহরে ব্যাপক গুঞ্জন ছড়ায়। ভোট ঘোষণা না হলেও বিষ্ণুপুর বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপি মনোনীত প্রার্থী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে পদ্মফুল চিহ্নে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে শহরের বিভিন্ন জায়গায় ফেস্টুন টাঙানো হয়। এদিন সাত সকালেই তা স্থানীয় বাসিন্দাদের নজরে আসে। শ্যামাপ্রসাদের দলে যোগ দেওয়া নিয়ে যাঁরা প্রকাশ্যে বিরোধিতা করেছিলেন, বিজেপির সেই পুরনো কর্মীরা ফেস্টুন দেখে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ। কদিন আগে অনুগামীদের নিয়ে পার্টি অফিসে দাপিয়ে বেড়ানোর ঘটনায় তাঁরা কোণঠাসা হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। এদিন বিষ্ণুপুর বিধানসভা কেন্দ্রে একেবারে প্রার্থী হওয়ার ফেস্টুন দেখে তাঁদের হৃদস্পন্দন বাড়তে শুরু করেছে। এই ঘটনায় বিজেপিতে কোন্দল আরও বাড়বে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। যদিও শ্যামাপ্রসাদবাবু বলেন, দলের কাছে আমাকে হেয় করার জন্য তৃণমূল পরিকল্পিতভাবে এটা করেছে।

বিজেপির বিষ্ণুপুর নগর মণ্ডল সভাপতি উত্তম সরকার বলেন, তৃণমূলের পায়ের তলার মাটি সরে গিয়েছে। তাই আমাদের দলে ভাঙন ধরাতে ওরা রাতের অন্ধকারে এসব করছে। কিন্তু, এসব করে কোনও লাভ হবে না। বিষ্ণুপুরের মানুষ তথা দলীয় কর্মীরা জানেন, বিজেপি শৃঙ্খলিত দল। এদলে কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত নিচু স্তরে হুবহু পালন করা হয়। কারও মর্জি মতো হয় না।

তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool Congress) বিষ্ণুপুর শহর সভাপতি জয়মাল্য ঘর বলেন, শ্যামাপ্রসাদবাবু যোগ দেওয়ার পর বিজেপিতে আদি ও নব্য কর্মীদের লড়াই শুরু হয়ে গিয়েছে। দলে কে কতটা প্রভাব খাটাতে পারছে, সেই নিয়ে ওদের কোন্দল চলছে। ফেস্টুন টাঙিয়ে ওদের ভোটের প্রচার আমরা কেন করব?

প্রসঙ্গত, সাধারণতন্ত্র দিবসের দিন খাতড়ার দলবদলু জয়ন্ত মিত্রের নামে ফেস্টুন দেখা যায়। তালডাংরা এলাকায় বিজেপি প্রার্থী হিসেবে দাদার অনুগামীদের তরফে ওই ফেস্টুন টাঙানো হয়। তা নিয়ে আদি ও নব্য বিজেপিতে কোন্দল শুরু হয়। তার রেশ কাটতে না কাটতেই জয়ন্তবাবুর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত বিষ্ণুপুরের দাপুটে নেতা প্রাক্তন মন্ত্রী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের নামে বৃহস্পতিবার একইভাবে ফেস্টুন টাঙানো হয়। দু’জনেই কিছুদিন আগে মেদিনীপুরে অমিত শাহের সভায় তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শ্যামাপ্রসাদবাবু ১২ বছর আগে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর নিজের অনুগামীদের সংগঠনের বিভিন্ন পদে বসান। ধীরে ধীরে গোটা বিষ্ণুপুর বিধানসভা এলাকায় সংগঠনের রাশ নিজের হাতে আনেন। তাঁদের ঠেলায় তৃণমূলের পুরনো কর্মীরা কার্যত ছিটকে পড়েন। তার জেরে গত ১০ বছরে এলাকায় তৃণমূলের দু’টি সমান্তরাল শিবির চলছিল। বর্তমানে হাওয়া কিছুটা ঘুরতেই শ্যামাপ্রসাদবাবু সম্প্রতি বিজেপিতে (BJP) যোগ দেন।

তৃণমূলে থাকার সময় যেভাবে পুরনো কর্মীদের সাইডে রেখেছিলেন, বিজেপিতে এসেও তিনি একই কাজ করবেন, এই আশঙ্কায় বিজেপির পুরনো কর্মীরা প্রকাশ্যে ক্ষোভ বিক্ষোভ দেখান। তার জেরে দলে যোগ দেওয়া সত্ত্বেও প্রায় একমাস তিনি পার্টি অফিসে আসতে পর্যন্ত পারেননি। কদিন আগে দলবল নিয়ে তিনি জেলা পার্টি অফিসে আসেন। তাঁদের দাপিয়ে বেড়ানোয় পুরনো কর্মীরা সিঁদুরে মেঘ দেখতে শুরু করেন। তাঁরা আশঙ্কা করেন, কোণঠাসা হয়ে পড়বেন। এদিন বিষ্ণুপুর বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী হিসেবে তাঁর ফেস্টুন দেখে পুরনো কর্মীদের হৃদস্পন্দন বাড়তে শুরু করেছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Bishnupur, #Shyama Prasad Mukherjee, #bjp

আরো দেখুন