গুরুতর অসুস্থ নারায়ণ দেবনাথ, ভর্তি হাসপাতালে
গুরুতর অসুস্থ নারায়ণ দেবনাথ (Narayan Debnath)। মিন্টো পার্কের এক বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি করা হল তাঁকে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, ফুসফুসে সংক্রমণ রয়েছে ৯৬ বছরের কার্টুনশিল্পীর। হৃদযন্ত্র ও কিডনিতে সমস্যা রয়েছে। আপাতত জেনারেল বেডেই রাখা হয়েছে প্রবীণ শিল্পীকে। সারাক্ষণ তাঁকে পর্যবেক্ষণে রেখেছেন চিকিৎসকরা।
গত ২৫ জানুয়ারি বর্ষীয়ান শিল্পীকে পদ্মশ্রী সম্মান দেওয়ার কথা ঘোষণা করে কেন্দ্র সরকার। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সেদিন থেকেই নারায়ণ দেবনাথের শারীর খারাপ ছিল। ঠান্ডা লেগেছিল তাঁর। সর্দির কারণে বুকে কফও জমেছে। বার্ধক্যজনিত নানা অসুখ-বিসুখও শরীরে দানা বেঁধেছে। দৃষ্টিশক্তিও ক্ষীণ। মঙ্গলবার রাতেই নারায়ণ দেবনাথকে হাসপাতালে ভরতির কথা ভাবা হয়েছিল। সেই জন্য করোনা (Corona Virus) পরীক্ষা করানো হয়েছিল। শিল্পীর শিবপুরের বাড়িতে গিয়ে তাঁর সোয়াব স্যাম্পেল সংগ্রহ করেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। পরে করোনা (COVID-19) পরীক্ষার ফল নেগেটিভ এসেছিল। সেই খবরে সাময়িকভাবে স্বস্তি পেয়েছিলেন শিল্পীর অনুরাগী ও গুণমুগ্ধরা। কিন্তু শুক্রবার থেকে তাঁর শরীর আবার খারাপ হতে শুরু করে বলে শোনা গিয়েছে। ঝুঁকি না নিয়ে নবতিপর শিল্পীকে হাসপাতালে ভরতি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বাংলা কমিকসের জগতে নারায়ণ দেবনাথ নামের আভিজাত্যই আলাদা। ‘হাঁদা ভোঁদা’, ‘বাঁটুল দি গ্রেট’, ‘নন্টে ফন্টে’, ‘বাহাদুর বেড়াল’-এর মতো সৃষ্টিগুলি এ রাজ্যের শিশু সাহিত্যকে বছরের পর বছর ধরে সমৃদ্ধ করে চলেছে। হাওড়ার শিবপুরেই প্রখ্যাত শিল্পীর জন্ম। সেখানেই বেড়ে ওঠা। পারিবারিক পেশার সুবাদে পরিবারের অনেকেই স্বর্ণকার। তাই ছোটবেলা থেকেই অলঙ্কার, প্রভৃতির নকশা করার সুযোগ ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি আর্ট কলেজে পাঁচ বছরের ডিগ্রির জন্য লেখাপড়া শুরু করলেও শেষ বছরে এসে পড়া ছেড়ে দেন। এরপরে কিছু বছর বিভিন্ন বিজ্ঞাপন সংস্থার জন্য কাজ করেন। বাংলা কমিকসের জগতে নারায়ণ দেবনাথের আগমন দেব সাহিত্য কুটিরের সম্পাদক মণ্ডলীর উৎসাহে। তার প্রথম কমিকস ‘হাঁদা ভোঁদা’ নামটিও তাঁদের প্রস্তাবিত। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সাদা-কালো কার্টুনগুলিতে রঙের ছোঁয়াও লেগেছে। ২০১৩ সালে নারায়ণ দেবনাথকে ‘বঙ্গবিভূষণ’ পুরস্কারে সম্মনিত করে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। পেয়েছেন সাহিত্য অ্যাকাডেমি পুরস্কারও।
(তথ্য সংগৃহীত)