বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইন ক্লাস শুরু
উদ্বোধনের এক মাসের মাথায় বোলপুরের বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয়ে (Biswabangla University) ক্লাস শুরু হল। গত বছর ২৮ ডিসেম্বর বোলপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে যোগ দিতে এসে নিজের স্বপ্নের প্রকল্প বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। উপাচার্য হিসেবে নিযুক্ত হন বিশ্বভারতীর প্রাক্তন অস্থায়ী উপাচার্য স্বপন দত্ত। বোলপুরের শিবপুর মৌজায় ২০ একর জমির উপর অবস্থিত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ না হলেও প্রায় শেষের দিকে। তবে তার আগেই শুক্রবার থেকে অনলাইনে ক্লাস শুরু করল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
মুখ্যমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর একপ্রকার ঝড়ের গতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ওয়েবসাইটে ভর্তি, কোর্স, সিলেবাস বিষয়ক বিভিন্ন বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। তার ভিত্তিতে যে সকল ছাত্রছাত্রীরা ভর্তির জন্য আবেদন করেন, তাঁদের যোগ্যতা অনুযায়ী ভর্তি প্রক্রিয়া অনলাইনেই শেষ হয়েছে। ভর্তির বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পর ৬৩ জনকে ভর্তি নেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার সুজিত মিত্র বলেন, আপাতত বাংলা, ইংরেজি ও ইতিহাস বিষয়ে ক্লাস অনলাইনে শুরু হয়েছে। ৬৩ জন ছাত্র ছাত্রীর মধ্যে ২৬ জন বাংলা, ১৭ জন ইংরেজি ও বাকি ২০ জন ইতিহাসে ভর্তি হয়েছেন। যেহেতু ইউজিসির নিয়ম অনুযায়ী ২৫ মার্চের মধ্যে প্রথম সেমেস্টারের সিলেবাস শেষ করতে হবে, তাই পড়ুয়াদের কথা মাথায় রেখে শনি ও রবিবারও অনলাইনে ক্লাস (Online Class) চলবে। বিষয়ভিত্তিক হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপও খোলা হয়েছে। পড়ুয়াদের কোনওরকম সমস্যা হলে ওই গ্রুপে সরাসরি শিক্ষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাবে। তবে ভবন নির্মাণের কাজ দেখতে দিনকয়েক আগে মুখ্য ইঞ্জিনিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস পরিদর্শন করেন। নির্মাণ কাজ দ্রুত শেষ করার চেষ্টা চলছে বলে জানা গিয়েছে। এদিন অনলাইনে ক্লাস শুরু হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ব্যাচ হাওয়ায় তাঁরা উচ্ছ্বসিত। তাঁদের বক্তব্য, এই দিনটির জন্য অনেকদিন ধরে অপেক্ষা করছি। ভাবতে ভালো লাগছে আমরা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ব্যাচের ছাত্রছাত্রী। এরকম একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস্তব রূপদানের জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই।
বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য স্বপন দত্ত বলেন, রবীন্দ্রনাথের শিক্ষার আদর্শকে মাথায় রেখে মুখ্যমন্ত্রীর ভাবনা ও রাজ্যের সংস্কৃতিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ভাষা, ইতিহাস, সংস্কৃতের মতো কলা বিভাগের বিষয়ের পাশাপাশি স্থানীয় লোকসংস্কৃতির ভাবধারা, তাঁদের নৃত্যকলা ও সংস্কৃতিকে গুরুত্ব দেওয়া হবে সিলেবাসে। পাশাপাশি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মকে কাজে লাগিয়ে অন্যান্য দেশের সঙ্গেও সংস্কৃতির বিনিময় হবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিদেশের বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও সাহিত্য ভারতীয় সংস্কৃতির সঙ্গে মেলবন্ধনকে স্বাগত জানানো হবে। এছাড়াও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে রবীন্দ্র সঙ্গীত, বাউলগানও পরিবেশন করা হবে। এমনকী বিদেশিরা চাইলে অনলাইন মাধ্যমে তাঁদের শেখানোও হবে। পাশাপাশি তিনি বলেন, করোনা আবহ কাটার পর নির্মাণ প্রক্রিয়া দ্রুত হয়ে গেলে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো এখানেও স্বাভাবিক পঠন-পাঠন শুরু হবে।