রঙ করা চুলের যত্ন কিভাবে নেবেন?
আজকাল চুল কালার বা হাইলাইট করার ট্রেন্ড বেশ চলছে। চেহারায় একটা আলাদা ভাব নিয়ে আসতে বা অকালেই পাকা চুল গুলোকে ঢাকতে হেয়ার কালারই যেন একমাত্র ভরসা আর তার জন্য মার্কেটে রয়েছে হরেক রকমের হেয়ার কালার।
তবে দুঃখের ব্যাপার হল এসব হেয়ার কালারে রয়েছে ক্ষতিকর অ্যামোনিয়া যা এক ধরনের ক্যামিকেল ব্লিচিং এজেন্ট এবং এটি চুলকে কালার করার সাথে সাথে চুল রুক্ষ ও নিষ্প্রাণ করে তোলে যার ফলে হেয়ার ফল হয়। তাই কালার করা চুলের জন্য অবশ্যই বিশেষ যত্ন নেয়া চাই।
আপনাদের জন্য রইল কালার করা চুলের যত্ন নেয়ার কিছু টিপস:
১। চুল কালার করানোর আগে থেকেই চুল যতটা সম্ভব স্বাস্থ্যকর এবং ময়েশ্চারাইজড রাখার চেষ্টা করুন এবং কমপক্ষে ৩-৪ সপ্তাহ আগে থেকে চুলে কোন কেমিকেল ট্রিটমেন্ট করাবেন না।
২। চুল শক্ত করতে এবং ভলিউম বাড়াতে কালার করানোর আগে নিয়মিত ডিপ কন্ডিশন করুন। ডিম, কলা এবং টক দই সমান পরিমাণে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে এই হেয়ার প্যাকটি চুলের গোঁড়ায় এবং সারা চুলে ভালো মতো লাগিয়ে এক ঘণ্টা রাখুন।
তবে চুলের রুক্ষতা এবং ড্যামেজ অনুযায়ী আরো বেশি সময় রাখতে পারেন। এরপর শ্যাম্পু করে চুল ধুয়ে ফেলুন। এটি চুল ডিপ কন্ডিশন করে একে নরম ও ময়েশ্চারাইজড রাখে।
৩। কালার করা চুলের জন্য স্পেশালি কালার প্রটেক্টিং শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। এসব শ্যাম্পু চুলের কালার ঠিক রাখতে সাহায্য করে এবং চুলের ময়েশ্চারাইজার বজায় রাখে।
৪। কালার করা চুলে সপ্তাহে অন্তত একবার হট অয়েল ট্রিটমেন্ট করুন। চুল ডিপ কন্ডিশন করতে এর জুড়ি নেই। পরিমাণ মত অলিভ অয়েল, আমনড অয়েল এবং নারিকেল তেল একসাথে মিশিয়ে হালকা গরম করে চুলের গোঁড়ায় ভালো মতো ম্যাসাজ করুন। এটি চুলের নিষ্প্রাণ ভাব দূর করে চুল সিল্কি ও সুন্দর করে।
৫। যতটা সম্ভব হেয়ার ড্রায়ার, কার্লার বা চুল আয়রন করা থেকে বিরত থাকুন। এসব জিনিস চুলকে ভেতর থেকে ড্যামেজ করে এবং ধীরে ধীরে চুল রুক্ষ ও মলিন হয়ে পরে। এছাড়াও চুল পড়ার অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে এসব হেয়ার স্টাইলার ব্যবহার করা।
৬। চুল নরম ও উজ্জ্বল রাখতে লিভ ইন কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। এই কন্ডিশনার চুল থেকে ধুয়ে ফেলতে হয় না এবং এটি চুল নরম ও শক্ত করতে সাহায্য করে। চুলে শ্যাম্পু করার পর ভেজা চুলে বা হালকা ভেজা চুলে লিভ ইন কন্ডিশনার অ্যাপ্লাই করুন।
তবে এটি সরাসরি স্ক্যাল্পে না দিয়ে স্ক্যাল্পের ১-২ ইঞ্চি নিচ থেকে অ্যাপ্লাই করা শুরু করুন। কেনার আগে কন্ডিশনারের উপাদান গুলোতে একবার চোখ বুলিয়ে দেখে নিন যে তাতে সিলিকন, সালফেট বা সালফার আছে কিনা কারণ এই উপাদান গুলো চুলের জন্য বেশ ক্ষতিকর।
৭। কিছু হেয়ার মাস্কঃ
কালার করা চুলের সৌন্দর্য ও নমনীয়তা বজায় রাখতে সপ্তাহে অন্তত দুবার হেয়ার মাস্ক লাগান। এর ফলে চুল প্রয়োজনীয় পরিমাণ ময়েশ্চার পাবে এবং চুল ফাটা বা রুক্ষতা দূর হয়ে চুল সুন্দর থাকবে।
এবার সবগুলো উপকরণ একসাথে ব্লেন্ডারে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন এবং চুলের গোঁড়া থেকে আগা পর্যন্ত ভালো মতো লাগান। ৩০ মিনিট রেখে চুল শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন।
ডিম এবং মধুর হেয়ার মাস্কঃ
– দুটি ডিম
– আধা কাপ মধু
– আধা কাপ টক দই
প্রথমে ডিম নিয়ে ভালো মতো ব্লেন্ড করে এর সাথে মধু যোগ করুন। ডিম এবং মধু ভালো মতো মিশে গেলে এটি সারা চুলে লাগিয়ে চুলে হেয়ার ক্যাপ লাগিয়ে রাখুন। ৩০-৪৫ মিনিট রেখে শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনার দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।