মমতার সঙ্গে কথা বলতে শহরে তেজস্বীর ২ দূত
অনেক দিন ধরেই বাংলায় তারা বামেদের সহযোগী দল হিসেবে রয়েছে। নীতিগত প্রশ্নে এবারের বিধানসভা ভোটেও বামেদের সহযোগী হয়েই বিজেপি(BJP) ও তৃণমূলের(TMC) বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ময়দানে থাকা উচিত বলে মনে করেন দলের রাজ্য সভাপতি বিন্দ্যাপ্রসাদ রাই(Bindyaprasad Rai)। কিন্তু লালুপ্রসাদ(LalooPrasad) ও ছেলে তেজস্বীর(Tejashwi Yadav) সঙ্গে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) নিয়মিত যোগাযোগ ও ব্যক্তিগত সম্পর্ক এই ভোটে আরজেডি’র(RJD) অবস্থান বদলে দিতে পারে। তৃণমূল তাদের সহযোগী দল হিসেবে লালুর দলকে কতগুলি আসন ছাড়তে পারে তার উপর অবশ্য নির্ভর করছে চূড়ান্ত ফয়সালার বিষয়টি। তবে মমতা বা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে এনিয়ে কথা বলার জন্য তেজস্বী দলের দুই জাতীয় নেতাকে পাঠিয়ে দিলেন। তৃণমূলের সঙ্গে রফার ব্যাপারে লালু পুত্রের ইচ্ছাকে বাস্তবায়িত করার লক্ষ্যে দলের দুই শীর্ষস্থানীয় নেতা তথা প্রাক্তন মন্ত্রী আব্দুল বারি সিদ্দিকি ও শ্যাম রজক শনিবার সন্ধ্যায় কলকাতায় পৌঁছেছেন।
বিন্দ্যাপ্রসাদসহ রাজ্য নেতৃত্ব যাতে এব্যাপারে বেঁকে না বসেন, সেজন্য তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনার পাশাপাশি আরজেডি’র দলীয় বৈঠকেও যোগ দেবেন ওই দুই নেতা। রবিবার বেলেঘাটার রাজ্য পার্টি অফিসে এই বৈঠক হবে। কলকাতা ছাড়াও রাজ্যের হিন্দিভাষী এলাকা থেকে বেশ কিছু নেতা ও কর্মী হাজির হবেন সেখানে। তৃণমূলের কাছে ১০টি আসনের প্রাথমিক দাবি জানানোর পরিকল্পনা রয়েছে লালুর দলের। তবে তার অর্ধেক আসনেই রফা করার জন্যও প্রস্তুত থাকছেন তেজস্বীরা। তৃণমূল নেত্রী যদি একান্তই আসন নিয়ে কোনও আপসে যেতে না চান তাহলে অবশ্য বাম-কংগ্রেস জোটের হয়ে লড়ার বিকল্প পথও খোলা রাখছেন সিদ্দিকিরা। সেজন্য দুই নেতার সঙ্গে বিমান বসুদের আলোচনার দরজাও খোলা রাখার ব্যবস্থাও করে রাখছেন বিন্দ্যাপ্রসাদ। তবে সিপিআইএমএল (লিবারেশন)-এর একা লড়াইয়ের সিদ্ধান্তের পর আরজেডি’র এভাবে তৃণমূলের দিকে ঝুঁকে পড়ার সম্ভাবনা নিঃসন্দেহে বাম শিবিরের কাছে দ্বিতীয় ধাক্কা হিসেবে দেখা দেবে বলে মনে করা হচ্ছে।
কেন হঠাৎ লালুর দল এই বিপরীত পথে হাঁটার কথা ভাবছে? বিন্দ্যাপ্রসাদ বলেন, লালু-তেজস্বীর সঙ্গে গত কয়েক বছর ধরে মমতার ব্যক্তিগত স্তরে সুসম্পর্ক তৈরি হয়েছে। তার উপর তেজস্বী মনে করেন, রাজ্যে বিজেপি’র অগ্রগতি ঠেকাতে এখন মমতাই প্রধান সেনাপতির ভূমিকা পালন করছেন। তাই মোদির দলের ক্ষমতায় আসা রুখতে তিনি তৃণমূলের সঙ্গে সম্মানজনক শর্তে রফা করাকেই প্রথম পছন্দ বলে মনে করছেন। এব্যাপারে আমার বা দলের রাজ্য নেতাদের অনেকের ভিন্ন মত থাকলেও, নেতৃত্বের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তকে অবশ্যই মেনে নেব।