রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

‘স্বাস্থ্যসাথী’র পাশাপাশি এবার ‘চোখের আলো’ও সুপারহিট

February 1, 2021 | 2 min read

‘স্বাস্থ্যসাথী’র পাশাপাশি এবার ‘চোখের আলো’! সাফল্যের নিরিখে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই দুই প্রকল্প যেন প্রায় হাত ধরাধরি করে চলছে। একটি ‘মেগাহিট’ তো অন্যটি ইতিমধ্যেই ‘সুপারহিট’। ভাঙড় থেকে ভদ্রেশ্বর, জলঙ্গি থেকে দেগঙ্গা—রাজ্যজুড়ে চোখের আলোর শিবিরগুলিতে উপচে পড়ছে ভিড়। বয়স্কদের সংখ্যাও চোখে পড়ার মতো। ভিড় বেশি দেখা গিয়েছে মহিলাদের মধ্যেও। এখনও পর্যন্ত সাফল্যও এসেছে তাক লাগানো। ৫ থেকে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত ২৫ দিনে ৫ লক্ষ ৭০ হাজার ৮৩ জন মানুষ দৃষ্টিশক্তি পরীক্ষা করিয়েছেন বিভিন্ন শিবিরে। শিবির থেকেই বিনামূল্যে চশমা পেয়েছেন ২ লক্ষ ৮০ হাজার ৭৭৬ জন। আরও ১ লক্ষ ৩৯ হাজার ২২৫ জন মানুষ চশমা পাবেন। তাঁদের জন্য বরাত নেওয়া হয়েছে। ৮৩৫৫ জনের ছানি অপারেশন হয়েছে। রাজ্যের ১২৭৫টি গ্রাম পঞ্চায়েত এই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। স্বাস্থ্যভবন সূত্রের খবর, আগামী দিনে ধাপে ধাপে প্রতিটি গ্রামই ‘চোখের আলো’ (Chokher Alo) প্রকল্পের মধ্যে চলে আসবে। কর্মসূচি অনুযায়ী, ২০২৫ সালের মধ্যে সকল রাজ্যবাসীর চোখের স্বাস্থ্যসুরক্ষা সুনিশ্চিত করাই মুখ্যমন্ত্রীর লক্ষ্য।

৪ জানুয়ারি ‘চোখের আলো’ প্রকল্প ঘোষণা করেন মমতা (Mamata Banerjee)। বাস্তবায়নের কাজ শুরু ৫ জানুয়ারি থেকে। গ্রাম পঞ্চায়েতে অস্থায়ী শিবির গড়ে চলে চক্ষু পরীক্ষা। পুরসভা এলাকায় বেছে নেওয়া হয় প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিকে। রোজ সকাল থেকে সন্ধ্যা ৮টা পর্যন্ত শিবির চলে। চক্ষু পরীক্ষার পাশাপাশি ছানি অপারেশনও হয় শিবিরগুলিতে। সেইসঙ্গে বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে চশমা। আগামী তিনমাসের মধ্যে ৩ হাজার ৩৪৯টি গ্রাম পঞ্চায়েতেই কর্মসূচি চালু হয়ে যাবে বলে আশাবাদী স্বাস্থ্যকর্তারা। এখনই প্রায় ২১২টি পুর-প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চক্ষু পরীক্ষা হচ্ছে। আগামী কিছুদিনের মধ্যেই ৪৫৯টি স্বাস্থ্যকেন্দ্রকে প্রকল্প বাস্তবায়নে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

কোভিড পর্বে টানা ক’মাস লকডাউন (Lock Down) চলেছে। ওইসময় সরকারি হাসপাতাল চালু থাকলেও যাওয়ার উপায় ছিল না বহু মানুষের। অন্যদিকে, বহু চোখের ডাক্তারের চেম্বার বন্ধ ছিল। এই পরিস্থিতিতে যে-ক’টি সমস্যায় মানুষ সবচেয়ে বেশি ভুগেছে, তার অন্যতম চোখের সমস্যা। কম দেখা, চাষ আবাদ বা অন্যত্র কাজ করতে গিয়ে চোখে কিছু ঢুকে যাওয়া, কর্নিয়ার আলসার, চোখে চোট লাগা থেকে শুরু করে ছানি—গত ক’মাসে চোখের সমস্ত সমস্যা‌ই‌ কমবেশি অবহেলিত হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে চোখের আলোর মতো মেগা কর্মসূচি চালু করে এতদিনের ফেলে রাখা চোখের বেশকিছু সাধারণ সমস্যার অনেকটাই সুরাহা করা যাবে। এমনই মত বহু চক্ষু বিশেষজ্ঞের।

যদিও, সাফল্যের পাশাপাশি দু’-তিনটে বিষয় সরকারের নজরে আনার লাগাতার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন কর্মসূচিতে যুক্ত মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট অপটোমেট্রিস্টরা। তাঁদের তরফে হজরত আলি শেখের বক্তব্য, চটজলদি একটা রেডিমেড চশমা না দিয়ে যদি প্রত্যেক মানুষের চশমার মাপ নিয়ে, আরও সঠিক ও বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে তৈরি চশমা তুলে দেওয়া যায়, ভালো হয়। কারণ, সাধারণভাবে অধিকাংশ মানুষই চশমার দোকানে গিয়ে মাপ দিয়ে চশমা বানান। দুই, এমটি অপটোমেট্রিস্টদের চোখের আলোর বিভিন্ন শিবিরে যাওয়ার ন্যূনতম সরকারি পরিবহণের ব্যবস্থা নেই। কোনও কোনও ক্ষেত্রে কর্মীকে ১০০ কিমি বা তারও বেশি রাস্তা পাড়ি দিতে হচ্ছে নিজের উদ্যোগে। তাও আবার নিজের খরচে। স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম বলেন, বিষয়গুলি দেখছি।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Mamata Banerjee, #SwasthyaSathi, #Choker Alo

আরো দেখুন