নাগরিকত্ব আইনের বাস্তবায়নকে পরিকল্পিতভাবে প্রলম্বিত করা হচ্ছে, কটাক্ষ তৃণমূলের
যারা ভোট দেন, যাদের রেশন কার্ড আছে, যে সম্প্রদায়ের কেউ সাংসদ বা বিধায়ক তাদের নতুন করে নাগরিকত্বের প্রতিশ্রুতি দেওয়া যায় না, আজকে তৃণমূল ভবনে (Trinamool Bhavan) সাংবাদিক বৈঠকে বিজেপির মতুয়াদের নাগরিকত্ব দেওয়ার ভুয়ো রাজনীতিকে এভাবেই জোড়াল কন্ঠে কটাক্ষ করেন রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu)।
তৃণমূল ভবনের সাংবাদিক সম্মেলনে কী কী বললেন বিধায়ক দেখে নেওয়া যাকঃ
• আমাদের আশঙ্কাই সত্যি হল। বিজেপি নাগরিকত্ব দেওয়ার নামে যে বিভাজনের ভুয়ো রাজনীতি করছিল তা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীই কালকের প্রশ্নোত্তর পর্বে মেনে নিয়েছেন। দুবছর আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই একমাত্র এনআরসি এবং সিএএ- (CAA) র বিরোধীতা করেছিলেন।
• আমরাই প্রথম লোকসভায় এবং রাজ্যসভায় এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছিলাম। সিএএ- র নিয়মনীতি নির্ধারণের জন্যে সরকারকে রাজ্যসভা এবং লোকসভা কমিটি যে সময় দিয়েছে তা হল যথাক্রমে ৯ এপ্রিল এবং ৯ জুলাই। দুটো তারিখই রাজ্যে নির্বাচন শুরু হয়ে যাওয়ার পর এবং নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর। অর্থাৎ মতুয়াদের নাগরিকত্ব নিয়ে যে ভুয়ো প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছিল, দেখা যাচ্ছে কোন ভাবেই নির্বাচনের আগে সিএএ আইনের বাস্তবায়ন হচ্ছে না।
• গত সপ্তাহে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী রাজ্যে না আসার ফলে মতুয়া (Matua) সম্প্রদায়ের মধ্যে যে রাগের সৃষ্টি হয়েছে তা যে কতোটা যথার্থ তা এ থেকেই বোঝা যাচ্ছে। পুরো বিষয়টাকে প্রলম্বিত করা হচ্ছে পরিকল্পিতভাবে। কারণ সামনে বাংলা এবং আসামের নির্বাচন। তাই উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবেই আটকে দেওয়া হল এই আইন।
• এই আইনের লোকসভা এবং রাজ্যসভা কমিটিতে তৃণমূলের তরফে রয়েছেন সৌগত রায় এবং ডেরেক ও’ ব্রায়েন (Derek O’brien)। তারা এই জনবিরোধী আইনের তীব্র বিরোধীতা করেছেন। কারণ এদের মধ্যে অনেকেরই ভোটার কার্ড রয়েছে। এই আইন প্রণয়ন করলেই আসামের মতো এখানেও হিন্দু বাঙালিদেরও ডিটেনশন ক্যাম্পে ঢুকিয়ে দেবে।
• এবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী এলে আমরা জিজ্ঞেস করতে চাই মতুয়াদের জীবন নিয়ে এভাবে ছিনিমিনি খেললেন কেন?
• আইন ৬ মাসের মধ্যে প্রণয়ন হওয়ার কথা ছিল। এখন বলছে কোভিডের জন্যে পারিনি। পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্যে ট্রেনের ব্যবস্থা করতে পারেন না, আর যারা দল বদল করবে তাদের জন্যে চার্টার্ড ফ্লাইট পাঠাতে পারেন।
• মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম থেকেই বলে আসছেন মতুয়ারা নাগরিক। তাদের নতুন করে নাগরিকত্বের পরীক্ষায় ফেলবেন না।
• মতুয়াদের জন্যে সত্যি যদি কেউ কাজ করে থাকেন, সেটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই দল থেকেই মতুয়া সম্প্রদায়ের একজন বিধায়ক এবং মন্ত্রী হয়েছেন। আমরাই প্রথম তাদের সম্মান জানিয়েছি।
• ২০২০ সালের নভেম্বরে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মতুয়াদের ২৫,০০০ পাট্টা বিলি করেছেন। কারো কাছে যদি জমির পাট্টা থাকে তাহলে তাকে নতুন করে নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে হবে কেন?
• মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) নমঃশূদ্র এবং মতুয়া কল্যাণ বোর্ড গঠন করেছেন। ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে সেই বোর্ডে। স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের সুবিধা পাচ্ছেন মতুয়ারা।
• আমরা হরিচাঁদ গুরুচাঁদ ঠাকুরের মুর্তি তৈরি করছি। ভিক্টরিয়া মেমোরিয়ালের অনুষ্ঠানে তাঁরই নাম ভুল উচ্চারণ করেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। ঠাকুরের নামেই একটি পার্ক এবং পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তুলবে রাজ্য সরকার।
• রাজ্য সরকারই স্কুল পাঠ্যে নমঃশূদ্র এবং মতুয়া বিপ্লব ঢুকিয়েছে। গুজরাটে আপনি পাবেন না।
• হরিচাঁদ গুরুচাঁদ ঠাকুরের নামে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ও তৈরি করছি ৮.১ একর জমিতে।
• বড়মাকে বঙ্গবিভুষন দেওয়া হয়েছে। গান স্যালুটে তাঁর শেষ কৃত্য সম্পন্ন হয়।
• ঠাকুরনগরের রেল স্টেশনের উন্নতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকা কালীন করেছিলেন।
• এই রথ যাত্রা যিনি শুরু করেছিলেন সেই লালকৃষ্ণ আদবানিকেই দলে অপ্রাসঙ্গিক করে দেওয়া হয়েছে
• রথ যাত্রা করার সময় চৈতন্য দেব কে কি করে আপনি ভুলে গেলেন?