রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

রেল বাজেটে আবার বঞ্চনা বাংলাকে, কিছু প্রকল্পে বরাদ্দ মাত্র হাজার টাকা

February 4, 2021 | 2 min read

রেলের বিভিন্ন প্রকল্পে বাজেট বরাদ্দের ক্ষেত্রে বাংলাকে(West Bengal) বঞ্চনার ছবিই দিনের আলোর মতো স্পষ্ট করে দিল নরেন্দ্র মোদি সরকার(Narendra Modi)। বুধবার রাতে রেলওয়ে প্রকল্প সংবলিত ২০২১-২২ আর্থিক বছরের ‘পিঙ্ক বুক’(Pink Book) প্রকাশ করেছে রেলমন্ত্রক(RailMinIndia)। আর তাতেই দেখা যাচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গের এমন বহু রেল প্রকল্প রয়েছে, যেখানে হয় কোনও বাজেট(Rail Budget) বরাদ্দই করা হয়নি অথবা নজিরবিহীনভাবে মাত্র এক হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। রেলমন্ত্রী থাকার সময়ে পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেসব রেল প্রকল্পের ঘোষণা করেছিলেন, তার অনেকগুলিতেই কোনও বরাদ্দ রাখা হয়নি। কিছু প্রকল্পের উল্লেখ পর্যন্ত নেই পিঙ্ক বুকে। স্বাভাবিকভাবেই ওইসব প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। কারণ, রেলের পিঙ্ক বুকে কোনও প্রকল্পের উল্লেখ থাকার অর্থ—আজ হোক কিংবা ১০০ বছর পর, সংশ্লিষ্ট প্রজেক্টের বাস্তবায়ন ঘটাতেই হবে। আর উল্লেখ না থাকা মানে, রেল সেই প্রকল্পের থেকে হাত তুলে নিল। রেলমন্ত্রকের পক্ষ থেকে অবশ্য জানানো হয়েছে, ‘২০০৯-২০১৪ সালের তুলনায় ২০২১-২২ আর্থিক বছরে বাংলার বিভিন্ন রেল প্রকল্পের বাস্তবায়নের জন্য বাজেট বরাদ্দের হার বৃদ্ধি পেয়েছে ৫১ শতাংশ।’ বাংলার যেসব প্রকল্পে বরাদ্দ হয়নি অথবা নামমাত্র অর্থ দেওয়া হয়েছে, সেইসব প্রকল্প আটকে রয়েছে জমি জটের কারণে। এমনটাই জানাচ্ছে রেল বোর্ড।
২০২১-২২ আর্থিক বছরের পিঙ্ক বুক থেকে দেখা যাচ্ছে, ভাগীরথী নদীর উপর সেতু সহ আজিমগঞ্জ থেকে মুর্শিদাবাদ (জিয়াগঞ্জ) নতুন লাইন তৈরির জন্য কোনও বাজেট বরাদ্দ করা হয়নি। একইভাবে দীঘা-জলেশ্বর নতুন লাইন তৈরির জন্যও কোনও বাজেট বরাদ্দ নেই। এর মধ্যে দীঘা-এগরা অংশটিও অন্তর্ভুক্ত। কাঁচরাপাড়া নিউ রেল কোচ উৎপাদন ইউনিটের জন্য বরাদ্দ হয়েছে মাত্র এক হাজার টাকা। একইভাবে সাঁইথিয়া-তারাপীঠ থার্ড লাইনের জন্য বাজেট বরাদ্দের পরিমাণ মাত্র এক হাজার টাকা। হাঁসডিহা-গোদ্দা নতুন লাইন তৈরির জন্যও বরাদ্দ হয়েছে মাত্র এক হাজার টাকা। বালুরঘাট-হিলি এবং কালিয়াগঞ্জ-বুনিয়াদপুর অংশে নতুন লাইন তৈরির জন্য চলতি বছর কিছুই বরাদ্দ হয়নি। অন্তত রেলের পিঙ্ক বুক তাই দেখাচ্ছে।
লক্ষ্মীকান্তপুর-নামখানা-চন্দননগর নতুন লাইন তৈরির জন্যও বরাদ্দের পরিমাণ শূন্য। তবে শুধুমাত্র নতুন লাইন তৈরিই নয়, ডাবলিং কিংবা গজ কনভার্সনের ক্ষেত্রেও বাংলার অনেক প্রকল্পে নামমাত্র বরাদ্দ করেছে মোদি সরকার। অথবা কোনও টাকা দেওয়া হয়নি। এমনকী প্রয়োজনীয় সম্প্রসারণ সহ তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুরের মতো গুরুত্বপূর্ণ অংশে নতুন লাইন তৈরির জন্য বরাদ্দের পরিমাণ মাত্র ৩০ কোটি টাকা। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পে বাজেট বরাদ্দের পরিমাণ গতবারের তুলনায় মাত্র ২০০ কোটি টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। কলকাতা মেট্রোতেও বাজেট বরাদ্দের ক্ষেত্রে খুব বেশি সন্তোষজনক ছবি নেই পিঙ্ক বুকে। সেন্ট্রাল পার্ক মেট্রো-হলদিরাম অংশে বরাদ্দের পরিমাণ ১০ লক্ষ টাকা। দমদম-টালিগঞ্জ রুটে টালিগঞ্জ-গড়িয়া, দমদম-বরানগর ও নোয়াপাড়া-এনএসসিবি এয়ারপোর্ট সম্প্রসারণ খাতে বরাদ্দের পরিমাণও ১০ লক্ষ টাকা। উল্লিখিত দুটি ক্ষেত্রেই বরাদ্দের পরিমাণ গতবারের তুলনায় কমেছে। নোয়াপাড়া-বারাসত ভায়া বিমানবন্দর মেট্রো প্রকল্পের জন্য বরাদ্দের পরিমাণ ৫২০ কোটি টাকা। বরানগর-বারাকপুর এবং দক্ষিণেশ্বর মেট্রো প্রকল্পে বরাদ্দ হয়েছে এক কোটি টাকা। সব মিলিয়ে অবশ্য মেট্রোয় বরাদ্দের পরিমাণ দেখানো হয়েছে ১ হাজার ২২১ কোটি টাকা।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Bengal, #Piyush Goyal, #Rail budget

আরো দেখুন