ভারতে ২১ শতাংশ মানুষ অজান্তেই করোনা আক্রান্ত, সেরো সমীক্ষায় বিস্ফোরক তথ্য
নিজের অজান্তেই প্রায় ২৯ কোটি মানুষ করোনা (Coronavirus) মোকাবিলা করে ফেলেছেন। উপসর্গ না থাকলেও দেশের সাড়ে ২১ শতাংশ নাগরিকের শরীরে ছুঁয়ে চলে গেছে কোভিডের ভাইরাস ‘সার্স কোভ-টু’। কিন্তু ইমিউনিটির জোরে ভাইরাসকে লড়ে নিয়েছে মানুষ। আইসিএমআরের (ICMR) জাতীয়স্তরের ‘সেরোলজিক্যাল সমীক্ষা’য় (sero-survey) এমনই তথ্য উঠে এল। তাই সমাজের একাংশের আর ‘টিকা নেওয়ার দরকার নেই’। তবে ‘এমনিই তো করোনা সেরে যায়’ জাতীয় মনোভাব তৈরি হলেও সতর্ক করে দিয়েছে কেন্দ্র। জানিয়ে দিল, করোনা-বিধিতে কোনওভাবেই ঢিলেমি নয়। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের সচিব রাজেশ ভূষণ বলেন, সমীক্ষায় এই তথ্য উঠে এলেও ভুলে গেলে চলবে না যে দেশের ৭৫ শতাংশেরও বেশি নাগরিকের এখনও সংক্রমণের সম্ভাবনা রয়েছে। তাই ভ্যাকসিন জরুরি। সেই মতো রাজ্যগুলিকে টিকাকরণের হার বাড়াতে বলা হয়েছে। উল্লেখ্য, এখন ‘কোভ্যাকসিন’ (Coxine) এবং ‘কোভিশিল্ড’ নামে দুই টিকা দেওয়া হচ্ছে। তবে খুব শীঘ্রই এর পাশাপাশি জরুরি ভিত্তিতে রাশিয়ার ‘স্পুটনিক ভি’ দেওয়া শুরু হবে। রাশিয়ার এই ভ্যাকসিনটি ৯১.৬ শতাংশ কার্যকর বলেই অন্তর্বর্তীকালীন সমীক্ষায় উঠে এসেছে। তার ওপর ভিত্তি করেই ভারতে এই ভ্যাকসিনের প্রস্তুতকারক ডাঃ রেড্ডি’স ল্যাবরেটরিজ ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়ার কাছে ইমার্জেন্সি ব্যবহারের ছাড়পত্রের আবেদন করতে চলেছে।
কেন্দ্র জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত প্রায় ৪৬ লক্ষ স্বাস্থ্যকর্মী টিকা নিয়েছেন। শুক্রবারের মধ্যে দেশের ৫০ শতাংশ স্বাস্থ্যকর্মীকে টিকা দেওয়া হয়ে যাবে বলেই হিসেব দিয়েছে কেন্দ্র। মোট ১ কোটি স্বাস্থ্যকর্মীকে টিকা দেওয়া হবে ঠিক হলেও আদতে তার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৬ লক্ষ ৩১ হাজার ৬৩৭ জন। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব বলেন, যত দ্রুত স্বাস্থ্যকর্মী এবং প্রত্যক্ষ কোভিড যোদ্ধাদের টিকাকরণের কাজ শেষ হবে, তত তাড়াতাড়ি পঞ্চাশোর্ধ্বদের সরকারি খরচে টিকা দেওয়ার কাজ শুরু হবে। ওই পর্বে ষাটোর্ধ্বদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
করোনার ভ্যাকসিন (Corona Vaccine) ইস্যুতে কেন্দ্রের উচ্চপর্যায়ের কমিটির চেয়ারম্যান ডাঃ বিনোদ কুমার পল জানান, সরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি এবার বেসরকারি স্বাস্থ্য পরিকাঠামোকেও টিকাকরণে কাজে লাগানো হবে। আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি করোনা ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া শুরু হবে। ভ্যাকসিন নিয়ে এখনও পযর্ন্ত গোটা দেশে ৮ হাজার ৫৬৩ জন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে ১৯ জনের মৃত্যুও হয়েছে। তবে তার কারণ টিকা নয়। তাই ভ্যাকসিন নিয়ে অহেতুক কোনও শঙ্কা ভিত্তিহীন বলেই উল্লেখ করেছে কেন্দ্র।
আইসিএমআরের ডিজি ডাঃ বলরাম ভার্গব জানিয়েছেন, ‘সেরো-সার্ভে’তে কেবল সাধারণ মানুষই নয়, ডাক্তার, নার্সদের মধ্যেও সমীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, তাঁদের ২৬.৬ শতাংশ অজান্তে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। শহরের বস্তি অঞ্চলে এই হার সবচেয়ে বেশি, ৩১.৭ শতাংশ।