স্বাস্থ্যসাথীর দৌলতে সাড়ে নিখরচায় অপারেশন, মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরলেন চন্দ্রকোণার যুবক
স্বাস্থ্যসাথী (Swasthyasathi) কার্ডের দৌলতে সাড়ে তিন লক্ষ টাকার অপারেশন বিনা পয়সায় করিয়ে কার্যত মৃত্যুর মুখ থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরলেন চন্দ্রকোণা-১ ব্লকের এক যুবক। যুবকের নাম শ্যামলচন্দ্র ঘোষ। বাড়ি মানিককুণ্ডু গ্রাম পঞ্চায়েতের ভবানীপুর গ্রামে। দুয়ারে সরকার কর্মসূচিতে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড পেয়ে দুর্গাপুর থেকে হার্ট অপারেশন করিয়ে আনলেন তিনি। বিডিও রথীন্দ্রনাথ অধিকারী বলেন, শ্যামলবাবুর শরীর খারাপের কথা শুনে আমরাই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় তাঁর পরিবারের স্বাস্থ্যসাথী কার্ড তৈরি করার ব্যবস্থা করেছিলাম। তাড়াতাড়ি কার্ডটি যাতে তাঁরা হাতে পান, তার জন্য মেদিনীপুরে গিয়ে ছবি তোলানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
শ্যামলবাবুদের আর্থিক অবস্থা ভালো নয়। তাঁর স্ত্রী, মেয়ে, বাবা-মা, দাদা-বউদি ও এক ভাইঝিকে নিয়ে মোট আটজনের পরিবার। শ্যামলবাবুর দাদা তারাপদ ঘোষ বলেন, কয়েক মাস আগে ভাইয়ের শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। স্থানীয়ভাবে ডাক্তার দেখাতে গিয়ে জানতে পারি, হার্টের সমস্যা রয়েছে। দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে ভাইকে দেখাতে নিয়ে গিয়ে জানতে পারি, তার হার্ট অপারেশন করাতে হবে। অপারেশন করাতে সাড়ে তিন লক্ষ টাকারও বেশি খবচ পড়বে বলে জানানো হয়। তখন আমরা কান্নায় ভেঙে পড়ি। কারণ আমাদের ভিটেমাটি বিক্রি করে দিলেও ওই টাকা জোগাড় করতে পারব না।
এরপর ডিসেম্বর মাসে শুরু হয় দুয়ারে সরকার কর্মসূচি। সেখানে আমরা স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের জন্য আবেদন করি। তখন স্থানীয়ভাবে বায়োমেট্রিকের জন্য আঙুলের ছাপ নেওয়া বা ছবি তোলা হতো না। ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য শান্তি বিশাল উদ্যোগ নিয়ে বিডিও অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। শান্তিবাবু বলেন, ব্লক প্রশাসনই মেদিনীপুরের সঙ্গে যোগাযোগ করে সেখানে ছবি তোলার ব্যবস্থা করে।
কার্ড হাতে পেয়ে শ্যামলবাবুর পরিবারের পক্ষ থেকে ফের দুর্গাপুরে যোগাযোগ করা হয়। তাঁরা জানুয়ারির ২৫ তারিখে সেখানে যেতে বলেন। তারাপদবাবু বলেন, আমরা ওই দিন গিয়ে ২৬ তারিখে ভাইকে ভর্তি করার ব্যবস্থা করি। ২৭ তারিখে অপারেশন হয়। হার্টে ব্লক ছিল। সফল অপারেশনের পর ৪ ফেব্রুয়ারি সবাই বাড়ি ফিরে আসি।
শ্যামলবাবুর বাবা আনন্দবাবু বলেন, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড না থাকলে আমরা ছেলের জীবন ফিরে পেতাম না। স্থানীয় তৃণমূল নেতারাও সর্বক্ষণ পাশে থেকে আমাদের সহযোগিতা করেছেন।