কলকাতা বিভাগে ফিরে যান

এবার কলকাতায় বাড়ি তৈরির অনুমোদন এক ছাতার তলায়

February 8, 2021 | 2 min read

১ ফেব্রুয়ারি থেকে বাড়ি তৈরির যাবতীয় অনুমতি মিলছে এক ছাতার তলায়। এই ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক করছে কলকাতা পুরসভা। পাশাপাশি দমকল, কেএমডিএ, হেরিটেজ সহ সংশ্লিষ্ট সংস্থা বা দপ্তরগুলির অনুমতিও মিলছে অনলাইনে পুরসভারই ওয়েবসাইট থেকে। বন্ধ হবে দালাল চক্র, কমবে নাগরিকদের ভোগান্তি, আশাবাদী কর্তৃপক্ষ।
বর্তমানে বাড়ি বানানোর অনুমতি নিতে অনলাইনে প্ল্যান জমা দেওয়ার সুবিধা রয়েছে। কিন্তু বাকি কাগজপত্র পুরসভায় এসেই জমা করতে হয়। তারপর প্রয়োজন হলে দমকল, কেএমডিএ, এয়ারপোর্ট অথরিটি, হেরিটেজ, পানীয় জলের লাইন, নিকাশি সহ যাবতীয় অনুমোদন ঘুরে ঘুরে জোগাড় করতে হয়। ফলে একাধিক জায়গায় ঘুরতে ঘুরতে জুতোর সুখতলা খুইয়ে যাওয়ার অবস্থা। নাগরিক ভোগান্তি দূর করতে গত মার্চ থেকেই যাবতীয় অনুমোদন একসঙ্গে দেওয়ার সুবিধা চালু করেছিল পুরসভা। কিন্তু লকডাউনের কারণে সেই পরিষেবা সাফল্যের মুখ দেখেনি। ফলে পুরনো নিয়মও চালু ছিল। 
পুরসভা সূত্রের খবর, গত এক বছরে এই নতুন ব্যবস্থায় মাত্র চারটি বিল্ডিং প্ল্যান অনুমোদন করা হয়েছে। এবার সেই নতুন ব্যবস্থা চলতি ফেব্রুয়ারি থেকে ধাপে ধাপে বাধ্যতামূলক হয়ে যাচ্ছে। আপাতত দু’টি বরোয় কার্যকর হয়েছে। আগামী তিন মাসের মধ্যে সব বরোতেই তা চালু হয়ে যাবে। আর পুরনো নিয়ম থাকবে না। ঘুরতে হবে না বিভিন্ন দপ্তর। নথিপত্র নিয়ে আসতে হবে না পুরসভায়। বর্তমানে চালু ব্যবস্থায় কোনও বাড়ি তৈরির অনুমতি পেতে দু’-তিন মাস সময় লাগে। নয়া ব্যবস্থায় সেই সময়কেই বেঁধে দেওয়া হচ্ছে। বলা হচ্ছে, ১৫-২৮ দিনের মধ্যে মিলবে অনুমতি। কীভাবে কাজ করবে এই ব্যবস্থা? পুরসভার ওয়েবসাইটে ঢুকে ‘ইজি অফ ডুইং বিজনেস’ ড্যাশবোর্ড থেকে বিল্ডিং বিভাগে ঢুকতে হবে। সেখানে বাড়ির মালিকের প্রতিনিধি হিসেবে এলবিএস বা আর্কিটেক্ট বা পুরসভার অনুমোদনপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ারের তথ্য দিতে হবে। তার ভিত্তিতেই তৈরি হবে একটি ইউজার আইডি। সেটা দিয়েই পরবর্তী অপশনে ঢুকে পূরণ করতে হবে সাত-আট পাতার একটি কমন অ্যাপ্লিকেশন ফর্ম বা সিএএফ। নির্দিষ্ট তথ্য একে একে সেখানে দিতে হবে। সেইসঙ্গে ফায়ার, কেএমডিএ, হেরিটেজ, এয়ারপোর্ট অথরিটি, আরবান ল্যান্ড সিলিং সহ অন্যান্য ক্ষেত্রে অনুমোদনের প্রয়োজন হলে, সেটাও মিলবে ওয়েবসাইট থেকে। আগে থেকে অনুমতি নেওয়া থাকলে ছবি তুলে আপলোড করতে হবে নির্দিষ্ট বক্সে।
বিল্ডিং বিভাগের এক কর্তা বলেন, পুরোটাই কাগজ এবং স্পর্শহীন ব্যবস্থা। দৌড়ঝাঁপ করতে হবে না। বাড়িতে বসেই নাগরিকরা এই সুবিধা নিতে পারবেন। সেইসঙ্গে প্রতিটি বরোতে থাকবে হেল্প ডেস্ক। প্রয়োজনে নাগরিকরা সেখানে গিয়েও অনলাইনে আবেদন জমা করতে পারবেন।
কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, এই নয়া ব্যবস্থা এতটাই উন্নত যে, পুরসভা ছাড়াও আর কী কী অনুমতি প্রয়োজন, তা নাগরিকরা নিজেরাই বুঝতে পারবেন। পুরসভা ছাড়াও অন্যান্য ক্ষেত্রে যে অর্থ দিতে হয়, তাও অনলাইনে জমা করতে পারবেন। সব নথি জমা দেওয়ার চারদিনের মাথায় ভিজিল্যান্স হবে। তারপর ১৫-২৮ দিনের মধ্যে যাবতীয় টাকা জমা করলে মিলবে বাড়ি বানানোর চূড়ান্ত অনুমতি। আবেদনের পর প্রতিটি ধাপে সেটি কোন পর্যায়ে রয়েছে, কখন টাকা দিতে হবে, তা প্রতি মুহূর্তে এসএমএস এবং ই-মেইলের মাধ্যমে জানতে পারবেন আবেদনকারীরা। ফলে একদিকে যেমন সময় বাঁচবে, তেমনই দালালচক্র পুরোপুরি বন্ধ হবে বলে আশাবাদী কর্তৃপক্ষ।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#permission, #Kolkata, #house, #KMC

আরো দেখুন