জগজিৎ সিং – উপমহাদেশের অবিসংবাদিত গজল সম্রাট
![](https://drishtibhongi.in/wp-content/uploads/2021/02/jagjit-singh-2.jpg)
ইউরোপের এক পাঁচতারা হোটেলে আয়োজিত গজল সন্ধ্যায় গায়কের সাঙ্গীতিক ইন্দ্রজালে মন্ত্রমুগ্ধ শ্রোতা-দর্শকের অনেকেরই চোখ মুদে এসেছে। তাদের সিংহভাগই ভারতীয় উপমহাদেশের। অসাধারণ এই গায়ককে দূর প্রবাসের ওই অনুষ্ঠানে আনতে পেরে তারা আনন্দিত এবং তৃপ্ত।
অনুষ্ঠানের মাঝামাঝি গায়ক তার পরিবেশনা থামিয়ে কথা বলা শুরু করলেন: “আমি এ জীবনে দুনিয়ার অনেক নামি-দামি শহরে গান গেয়েছি। কিন্তু কোথাও এখানকার মত সম্মান আর ভালোবাসা পাইনি। আপনাদের আপ্যায়ন আর মেহমানদারিতে আমি ধন্য!”
প্রশংসা ঈশ্বরেরও পছন্দ। গায়কের কথা শেষ হওয়ার আগেই করতালিতে ফেটে পড়লো এতক্ষণ কার মন্ত্রমুগ্ধ দর্শকমণ্ডলী। হাততালি আর আনন্দ ধ্বনি থামছেই না। হঠাৎ গায়ক সবাইকে থামতে অনুরোধ করলেন। বললেন, “আমার এ কথায় এত উৎফুল্ল হওয়ার কিছুই নেই।”
দর্শকরা কিছুটা হতোদ্যম আর কিংকর্তব্যবিমূঢ়। এ কেমন কথা! এবার গায়ক বললেন, “`আমার কথাতে এত উৎফুল্ল হওয়ার কারণ নেই। কারণ, এর আগে যে যে শহরেই গিয়েছি, সেখানে আমি এই একই কথাই বলেছি।`”
অসাধারণ রসিকতাটা ধরতে পেরে আবারও দর্শক ফেটে পড়লেন হল ফাটানো হাসি আর করতালিতে। রসিক এ শিল্পীর নাম জগজিৎ সিং। ভালোবেসে অনেকে বলেন- গজলসম্রাট। বন্ধুরা বলতেন মহারাজ।
সত্তরের দশক পর্যন্ত উপমহাদেশের সঙ্গীত ঐতিহ্যের অন্যতম শাখা উর্দু গজলের জগৎটা ছিল রাজা-মহারাজা আর অভিজাতদের বৈঠকখানার বিশেষ আয়োজনের ঘেরাটোপে বন্দি। তখন উপমহাদেশীয় ঘরানার গজল সাম্রাজ্য শাসন করছিলেন নূরজাহান, মালিকা পোখরাজ, বেগম আখতার, তালাত মাহমুদ আর মেহেদি হাসানের মত ওস্তাদ গায়করা। এর পরবর্তী ধাপে জগজিৎ সেইসব গজল গায়কদের নেতৃত্বে ছিলেন যারা গজলকে অভিজাতদের বৈঠকখানা থেকে সাধারণ মানুষের নাগালে নিয়ে আসেন।
আজকের এই বিশেষ দিনে শুনুন গজল সম্রাটের সেরা গানগুলি: https://www.youtube.com/watch?v=zLh5YjkWKZQ